উদ্যান পালন করেও এবার স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মেয়েরা ভালভাবে বেঁচে থাকার রসদ পাচ্ছেন। উদ্যান পালন করে বা নার্সারি করেও যে ভালভাবে আয় করা যায় তার জ্বলন্ত উদাহরণ ময়নাগুড়ি ব্লকের বার্ণিশ গ্রাম পঞ্চায়েতের ভাগীরথী স্বনির্ভর গোষ্ঠী। যদিও এর সব কৃতিত্ব তাঁরা বর্তমান সরকারকেই দিচ্ছেন। পরিবর্তনের সরকার স্বনির্ভর গোষ্ঠীগুলিকে নতুন দিগন্ত খুলে দিয়েছে। দীর্ঘ বাম জমানায় উদ্যান পালনের কথা বললেও কাজের কাজ কিছুই হয়নি।
আরও পড়ুন-স্বনির্ভর বাংলা
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সরকারে আসার পর এই বিষয়গুলোর ওপর জোর দিয়েছেন। আর তাতেই স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মহিলারা আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী হয়ে উঠছেন। ভাগীরথী স্বনির্ভর গোষ্ঠীর সদস্যারা অন্যদেরও উৎসাহ দিচ্ছেন। তাদের গড়া নার্সারির গাছ শুধু নিজেদের এলাকাতেই নয়, গ্রাম ছাড়িয়ে শহর, শহর ছাড়িয়ে ভিন্ন রাজ্য এমনকী বিদেশেও যাচ্ছে। এই নার্সারিতে মূলত ফল, বাহারি ফুল, ঔষধি গাছ, পাতাবাহার, বনসাই-সহ নানা রকম গাছের চারা তাঁরা তৈরি করছেন। ফলের মধ্যে আম, জাম, পেয়ারা, লিচু, এমনকী আপেল গাছের চারাও তাঁরা তাঁদের নার্সারিতে তৈরি করছেন। তবে সব চাইতে আকর্ষণীয় এবং বহুল বিক্রিত গাছ ‘সুগার ফ্রি’ গাছের চারাও তাঁরা উৎপাদন করছেন। বাহারি ফুলের মধ্যে গাঁদা, রজনীগন্ধা, নাইটকুইন, অপরাজিতা, বোগেনভিলিয়া, পেপারফনিক, গ্ল্যাডিওলাস, জিজিরাপ্ল্যান্ট, ক্যালফনিয়া জাতীয় ফুলের চারা তাঁরা রাখছেন। এ-ছাড়াও তাঁরা বিভিন্ন রকম পাতাবাহারের গাছের চারাও উৎপাদন করছেন। মূলত গোষ্ঠীর মাধ্যমে ব্যাঙ্ক থেকে লোন নিয়ে তাঁরা এই নার্সারি তৈরি করেছেন।
আরও পড়ুন-নন্দীগ্রামের পর আবার বিদ্রোহ, এবার রাজ্যস্তরে সিবিআই থেকে বাঁচতে দলবদলুদের সিন্ডিকেটের হাতে বিজেপি
একটি গাছ বিক্রি করে একবছর পর্যন্ত তার দেখভালের দায়িত্ব নেন। যাতে গাছটা সঠিকভাবে বেড়ে ওঠে। তাতে একদিকে যেমন গাছটির বেঁচে থাকাটা নিশ্চিত হচ্ছে অন্যদিকে গ্রাহকদের বিশ্বাসও তাঁরা অর্জন করতে পারছেন। আর এই কারণেই তাঁরা নার্সারি করে বেশ ভাল আয়ের মুখ দেখছেন। একটি গাছ বিক্রি করে ৩০/৪০% লাভ করেন তাঁরা। ভাগীরথী স্বনির্ভর গোষ্ঠীর সদস্যা তথা ওই গোষ্ঠীর কোষাধ্যক্ষ রূপা মজুমদার জানালেন, এই নার্সারি করে তাঁরা ভাল আয়ের মুখ দেখছেন। বিশ্ব উষ্ণায়নের ফলে গোটা পৃথিবী জুড়ে সবুজায়নের ডাক দেওয়া হয়েছে। সেই বিষয়টি মাথায় রেখে তাঁরা নার্সারি করার চিন্তাভাবনা করেন। আর তাতেই কেল্লা ফতে। এই মুহূর্তে তাঁরা সবাই আয়ের মুখ দেখছেন। আর সব কিছুই সম্ভব হয়েছে বর্তমান সরকারের উদ্যোগে এবং সহযোগিতায়। সব ক্ষেত্রেই তাঁরা সরকারি ভাবে সাহায্য পেয়েছেন। এর জন্য তাঁরা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ধন্যবাদ জানিয়েছেন।