নয়াদিল্লি : এবার আর ঘুরপথে নয়, সরাসরি রাজ্যের অধিকারে হস্তক্ষেপ। প্রকাশ্য সভাতেই কেন্দ্রীয় সরকারের এই কৌশল ফাঁস করে দিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। আইনশৃঙ্খলা রাজ্যগুলির এক্তিয়ারভুক্ত হলেও সরাসরি তাতে হস্তক্ষেপ করতে চায় বিজেপি। এই অভিমুখ থেকেই ‘এক দেশ, এক উর্দি’র ডাক দিলেন প্রধানমন্ত্রী। হরিয়ানার সুরজকুণ্ডে চলা চিন্তন শিবিরে শুক্রবার মোদি বলেন, সারা দেশের পুলিশ বাহিনীর একইরকম পোশাক হওয়া উচিত। অর্থাৎ এক জাতি, এক উর্দি। মোদির ঘোষণায় তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে বিরোধী শিবির। তৃণমূল কংগ্রেসের বক্তব্য, গোটা যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোকেই ভেঙে ফেলতে চায় বিজেপি শাসিত কেন্দ্রীয় সরকার। এটাই রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘের নীতি। বহুধাবিভক্ত ভারতের বৈচিত্র অস্বীকার করে নিজেদের মত জোর করে চাপিয়ে দেওয়া।
আরও পড়ুন-কর্মসংস্থানের হাল খুবই খারাপ, উদ্বেগ প্রাক্তন আরবিআই গভর্নরের
সুরজকুণ্ডের সভায় প্রধানমন্ত্রীর যুক্তি ছিল, যেভাবে এক দেশ, এক রেশন কার্ড চালু করা হয়েছে, তেমনই এক দেশ এক পুলিশ পোশাকও তৈরি হওয়া উচিত। এক্ষেত্রে তাঁর যুক্তি, কেন্দ্রীয় সরকার যেভাবে দেড় হাজার পুরনো আইন বাতিল করছে সেভাবেই রাজ্যগুলিরও পদক্ষেপ করা উচিত। প্রধানমন্ত্রী কার্যত হুমকি দিয়ে বলেন, শুধুমাত্র বন্দুকধারী নয়, কলমধারী নকশালদের বিরুদ্ধেও মোকাবিলা করতে হবে। তাঁর এই কথায় বিরোধীস্বর দমনের কৌশল স্পষ্ট।
আরও পড়ুন-গ্রামীণ স্বাস্থ্যে পাঁচ কোটি রাজ্যের ১১৪ উপ-স্বাস্থ্যকেন্দ্রে
মোদির মন্তব্য নিয়ে তৃণমূলের রাজ্যসভার মুখ্যসচেতক সুখেন্দুশেখর রায় বলেন, আজ এক দেশ, এক পুলিশ-উর্দির কথা বলছেন। আগামিকাল এক দেশ, এক পুলিশ, এক আমলাতন্ত্র, এক দল, এক ভাষা, এক ধর্ম হয়ে যাবে। ভারতের বহুত্ববাদী সমাজ ব্যবস্থাকে ভেঙে ফেলাটাই বিজেপির আসল উদ্দেশ্য। তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ জহর সরকার বলেন, আমাদের সমাজ বহুত্বের মধ্য দিয়েই চলছে। এখানে জোর করে এক করতে গেলে পুরো ব্যবস্থা ভেঙে যাবে। প্রধানমন্ত্রী চান এক দেশে সব কিছু একই থাকুক। ভারতীয় সমাজব্যবস্থার বৈচিত্রকেই অস্বীকার করতে চান তিনি। সামনে গুজরাত নির্বাচন তাই এসব সামনে আনা হচ্ছে। বিজেপি এটা কোনওদিন বাস্তবায়িত করতে পারবে না। সবই হচ্ছে আসল বিষয় থেকে মানুষের নজর ঘোরানোর অপচেষ্টা। এর আগে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ রাজ্যে রাজ্যে এনআইএর শাখা খোলার ঘোষণা করে বিতর্ক তৈরি করেছিলেন। এভাবে রাজ্যের অধিকার ও ক্ষমতা খর্ব করে দেশে একদলীয় শাসন ব্যবস্থা কায়েম করার চক্রান্ত করছে মোদি সরকার৷