বিজেপিতে ব্যাপক ধস। বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর সঙ্গীরা দলবেঁধে তৃণমূল কংগ্রেসে। আজ নন্দীগ্রামে জয়দেব দাস সহ ৩২ জন বিজেপি নেতা কুণাল ঘোষের উপস্থিতিতে তৃণমূল কংগ্রেসে (Nandigram- TMC) যোগদান করেছেন। একই সঙ্গে ৫০০ বিজেপি কর্মী যোগদান করেন তৃণমূল কংগ্রেসে (Nandigram- TMC)।
Nandigram. Joydeb Das and 32 BJP leaders joined @AITCofficial with their 500+ workers.
' আগে ঘর সামলা, পরে ভাববি বাংলা।' pic.twitter.com/3cUweKJKXz— Kunal Ghosh (@KunalGhoshAgain) November 4, 2022
সাউদখালী মানসাবাজার এসএসকে মাঠে নন্দীগ্রাম ১ ব্লক তৃণমূল কংগ্রেস কমিটির আয়োজনে বিশেষ রাজনৈতিক কর্মীসভা ‘চলো গ্রামে যাই’ অনুষ্ঠিত হল।উপস্থিত ছিলেন, দলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ, মন্ত্রী সৌমেন মহাপাত্র, নন্দীগ্রাম-১ তৃণমূলের ব্লক সভাপতি বাপ্পাদিত্য গর্গ প্রমুখ। এই কর্মীসভায় জনজোয়ার ছিল চোখে পড়ার মতো।তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ বলেন, জয়দেব দক্ষ সংগঠক। ও অন্য দলে রাজনীতি করেছে। ও আমাদের দলের কঠিন সময়ের সৈনিকদের সেলাম, স্যালুট, কুর্নিশ জানিয়ে দলে যোগ দিল। যে লোকটা আমাদের লোকদের মিথ্যা মামলা দিচ্ছে। তার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়ে কেউ যদি আমাদের দলে যোগ দেয়, তাহলে কেন স্বাগত জানাবেন না।আসল শত্রুর হাত দুর্বল করতে হবে। যে সাম্প্রদায়িক বিভেদ করে তাকে দুর্বল করতে হবে।
আরও পড়ুন: জামা খুলিয়ে অত্যাচার করেছেন বিজেপি নেতা লোকনাথ, বিস্ফোরক যুব মোর্চা কর্মী
কুণাল বলেন, মমতাদি একজনের চোখ দিয়ে নন্দীগ্রাম দেখেছে। সে এখন নিজেকে বাঁচাতে অমিত শাহের জুতো পালিশ করছে। ইডি-সিবিআই থেকে বাঁচতে বিজেপিতে গিয়েছে। তাই পুরনো দিনের বিজেপি কর্মীরা তৃণমূলে যোগ দিচ্ছে। তাকে সম্মানের সঙ্গে কাজ করতে দেওয়া হবে। যে বিবেকের ডাকে সাড়া দিয়ে শুভেন্দুর বিরোধিতা করেছে। মুখোশ খুলে দিয়েছে। তাকে কতদিন ঘরে আটকে রাখবে। কে লড়েছে নন্দীগ্রাম আন্দোলন? নন্দীগ্রামের মানুষ লড়েছে।শুভেন্দু শুধু কাঁথি থেকে বিবৃতি দিয়েছে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দয়ায় সাংসদ হয়েছে, নানান পদ, নানান দায়িত্ব। তৃণমূলের কাছ থেকে সমস্ত স্বাধীনতা ক্ষমতা পেয়েছে, আর তার অপব্যবহার করেছে। শেষে নিজেকে বাঁচাতে বিজেপিতে গিয়ে আশ্রয় নিয়েছে।
আমাদের এক কাট্টা হয়ে চলতে হবে। এক একটি বুথ ধরে ধরে সভা হবে, আর বিজেপি, শুভেন্দুর বালির বাঁধ ভেঙে ধুয়ে যাবে। এটা নন্দীগ্রাম। এখানে পুরনো নেতারা সবাই আছেন। তিনি সাফ জানান, আদি তৃণমূল পুরোনো তৃণমূল, সিনিয়াররা সম্মান পাবেন। আবার যারা নতুন এসেছেন তরুণ, তারাও সম্মান পাবেন। সবাইকে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করতে হবে।
কুণালের স্পষ্ট বক্তব্য, নন্দীগ্রামে আমরা হিন্দু মুসলমান একসঙ্গে থাকি। আর বিজেপিতে গিয়ে শুভেন্দু বলছে মুসলমানরা জেহাদি। শহীদ মাতা ফিরোজা বিবিকে সরিয়ে মমতাদি আরও বড় কাজের দায়িত্ব দিয়েছিলেন শুভেন্দুকে । বেইমান, গাদ্দার পিঠে ছুরি মেরে চলে গেছে।তিনি বলেন, নন্দীগ্রাম শুভেন্দু মুক্ত করবো এই প্রতিজ্ঞা করুন। এমন ভাবে শপথ নিন যে পঞ্চায়েতে লোডশেডিং এর খেলা বন্ধ করে দে শুভেন্দু বিভেদের রাজনীতি করে, আমরা ঐক্যের রাজনীতি করবো।জয়দেব ও তার সহকর্মীদের দিয়ে কাজ করিয়ে এখন অন্যদের মাথায় বসায়।নন্দীগ্রাম শুভেন্দু মুক্ত করবো। চোর শুভেন্দু তোমার কোনও জায়গা নেই। আগে ঘর সামলা, পরে ভাববি
নিজেদের মধ্যে কোনও মতানৈক্য রাখবেন না। আমাদের সবাইকে সঙ্ঘবদ্ধ থাকতে হবে।পঞ্চায়েতে ভোটের ফলাফলে শুভেন্দুকে জবাব দিতে হবে। ওর কোনও ক্ষমা নেই। উন্নয়ন, সংহতি, সম্প্রীতি এক জায়গায় রাখতে হবে।কুণাল চ্যালেঞ্জ করে বলেন, শুভেন্দু সারদা নিয়ে বসুক আমার সামনে। সব চ্যানেল লাইভ টেলিকাস্ট করবে। দেখি ওর মুরোদ কত।সময় দিন, এবার প্রলয় পাল বলবে বিজেপিতে ভালো লাগছে না।ভুল বোঝাবুঝি করানোর চেষ্টা হবে। কেউ প্ররোচনায় পা দেবেন না।
সদ্য তৃণমূলে যোগ দেওয়া জয়দেব দাস বলেন, কুর্নিশ জানাই। তৃণমূল পরিবারে আসতে পেরে, তাদের সাহচর্য পেয়ে ভালো লাগছে।শুধু নন্দীগ্রাম বাসী নয়, সারা পূর্ব মেদিনীপুর জেলা জুড়ে ডিসেম্বর মাসের মধ্যে বিজেপিতে ধস নামবে। তমলুক সাংগঠনিক জেলার সমস্ত নেতাদের সঙ্গে কথা হয়েছে। বিজেপির শেষের শুরু করলাম, এই মঞ্চ থেকে শপথ নিলাম। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাতকে শক্ত করতে সবাই এগিয়ে যাই। এলাকায় সম্প্রীতির পরিবেশ গড়ে তুলুন। বিজেপির গুন্ডারা সভা বানচালের চেষ্টা করেছে। আমরাও পাল্টা দিতে জানি।হিন্দু-মুসলিম ভেদাভেদ না করে সুষ্ঠ সমাজ গড়ার চেষ্টা করি। পঞ্চায়েত নির্বাচনে সকল কর্মীদের শপথ নিতে হবে অপসংস্কৃতি মদতদাতা মানুষদের জবাব দিতে হবে।