প্রতিবেদন : মেঘালয়ের ডবল ইঞ্জিন সরকার দুর্নীতিতে গলা পর্যন্ত ডুবে রয়েছে। সাধারণ মানুষের টাকা লুঠ হয়েছে। এখানে কেন এখানে ইডি-সিবিআই তদন্ত হবে না? শুক্রবার মেঘালয়ের তুরায় জনসভায় দাঁড়িয়ে তোপ দাগলেন তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। একই সঙ্গে মেঘালয় সরকারের শিক্ষা-স্বাস্থ্য ও পরিকাঠামোগত উন্নয়ন বলে কিছুই হয়নি। তৃণমূল কংগ্রেসের সরকার ক্ষমতায় এলে প্রথমেই এই বিষয়গুলিতে জোর দেবে। এছাড়াও মেঘালয়ের জনজাতিদের ভাষা গারো ও খাসিকে সাংবিধানিক মর্যাদা দেওয়ার দাবিতে সংসদের ভেতরে ও বাইরে তৃণমূল কংগ্রেস আগেও আন্দোলন করেছে, চলতি শীতকালীন অধিবেশনে আবারও সংসদে এই প্রসঙ্গ উত্থাপন করবেন তৃণমূল কংগ্রেস সাংসদরা। মেঘালয়ের মানুষের দাবি আদায়ে লড়বে তৃণমূল কংগ্রেস। সাফ কথা অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের। একইসঙ্গে এদিন অভিষেক প্রশ্ন তোলেন, মেঘালয়ে ডবল ইঞ্জিনের সরকার চললেও সংসদে এই রাজ্যবাসীর স্বার্থে আমাদের দাবি খারিজ করে দেওয়া হয় বিজেপির তরফে। তাহলে এখানে কিসের ডবল ইঞ্জিন চলছে?
আরও পড়ুন-গারো, খাসি ভাষাকে কেন সাংবিধানিক মর্যাদা নয়? মেঘালয়ে প্রশ্ন অভিষেকের
দু’দিনের মেঘালয় সফরে অভিষেককে ঘিরে দলের নেতা-কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে উৎসাহ- উদ্দীপনা ছিল তুঙ্গে। এদিন সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে অভিষেক বলেন, দলের মেম্বারশিপ ড্রাইভে মেঘালয়ে অতি অল্প সময়ে ১ লক্ষ সক্রিয় সদস্য হয়েছে। যা প্রমাণ করে উত্তর-পূর্বের এই পাহাড়ি রাজ্যে তৃণমূল কংগ্রেস বাড়ছে।
শুক্রবার সকালে তুরার চার্চে গিয়ে রেভারেন্ড এনড্রু আর মারাক বিশপের সঙ্গে দেখা করেন। তাঁর আশীর্বাদ নেন। বাকিদের সঙ্গেও কথা বলেন এরপর চলে যান তুরার জনসভায়। উপচে পড়া ভিড়কে সামনে রেখে অভিষেক বলেন, আগামী বিধানসভা নির্বাচনে তৃণমূল কংগ্রেস লড়বে ও জিতবে৷ মেঘালয়ের মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে তাদের সব দাবি পূরণ করবে তৃণমূল। গত সাড়ে চার বছরে এনপিপি সরকার ও তার সহযোগী বিজেপির অত্যাচারে জর্জরিত মেঘালয়বাসী মুক্তির স্বাদ পাবেন। মেঘালয়ে নতুন সূর্য উঠবে। বাংলায় বিজেপির আগ্রাসনকে আটকে দিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যেভাবে উন্নয়নের জয়রথ জারি রেখেছেন, মেঘালয়েও সেভাবে হবে উন্নয়ন। জনসভায় উপস্থিত শ্রোতাদের উদ্দেশ্যে এরপর অভিষেক প্রশ্ন ছোঁড়েন, আপনারা কি চান মেঘালয় রাজ্য মেঘালয়ই শাসন করুক নাকি দিল্লি বা গুয়াহাটি? এই রাজ্য গত সাড়ে চার বছর ধরে দিল্লির দ্বারা অবহেলিত ও নেতৃত্বের অভাবে ভুগছে। এখানে কর্মসংস্থান নেই। স্কুলে শিক্ষক নেই। হাসপাতালে শিক্ষক নেই। পরিকাঠামো নেই। আমরা এটা বদল করব। মেঘালয়ের ভূমিপুত্ররাই মেঘালয়কে শাসন করবে।
আরও পড়ুন-অল্পদিনেই মেঘালয়ে তৃণমূলের এক লক্ষ সক্রিয় সদস্য, জানালেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়
একই সঙ্গে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, বছরের পর বছর দেখেছি, পূর্ব আর উত্তর-পূর্ব ভারতকে গুরুত্ব দেওয়া হয়নি। এবার দেখিয়ে দেওয়ার সময় এসেছে যে পূর্ব আর উত্তর-পূর্ব ভারত কারও থেকে কম যায় না। অনেকে বলে থাকে তৃণমূল বহিরাগত দল। আমি মনে করিয়ে দিতে চাই, ভূমিপুত্র মুকুল সাংমা যখন তৃণমূলের টিকিটে লড়েন, তখন তিনি তো বহিরাগত নন। তৃণমূলের বিরুদ্ধে যাঁরা মিথ্যা অভিযোগ আনছেন, তাঁদের মুখ বন্ধ রাখা উচিত। সাফ কথা অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের। মেঘালয়ে দু’দিনের সফরে অভিষেকের ছিলেন মন্ত্রী মানস ভুঁইয়া।