চন্দন মুখোপাধ্যায়, কাটোয়া: মনোহরশাহি। গরানহাটি। রেনেটি— এগুলি হল কীর্তনের ঘরানা। এই তিন ঘরানার কীর্তনকে এক ছাতার তলায় এনেছে কাটোয়ার বৈষ্ণবপীঠ নরহরি ঠাকুরের জন্মভিটে শ্রীখণ্ডে। নরহরির তিরোভাব তিথিতে শ্রীখণ্ডে শুরু হয়েছে কীর্তন উৎসব। দেশে প্রথম গৌরবিগ্রহ প্রতিষ্ঠা করে পুজোর প্রচলন করেছিলেন মহাপ্রভু চৈতন্যদেবের অন্যতম পার্ষদ নরহরি ঠাকুর।
আরও পড়ুন-কোচবিহার রাসমেলা বিশ্ব-দরবারে
কাটোয়ার শ্রীখণ্ড গ্রামের এক বৈদ্য পরিবারে ১৪৭৮ খ্রিস্টাব্দে জন্ম, প্রয়াণ ১৫৪০-এ। তিনি ছিলেন চিরকুমার। তাঁর তিরোভাব তিথিতে শ্রীখণ্ড গ্রামের ছায়াঘেরা বড়ডাঙাতলায় ‘গৌর নরহরির মিলন উৎসব’ ও কীর্তনমেলার সূচনা হয় ১৫৬২ খ্রিস্টাব্দে। শেষ বয়সে শ্রীখণ্ডের পূর্ব প্রান্ত গ্রাম থেকে প্রায় ২ কিমি দূরে জঙ্গলঘেরা বড়ডাঙাতলাতে বসবাস করতেন নরহরি। গৌরাঙ্গভক্তির কারণেই বৈষ্ণব সমাজে তিনি ‘নরহরি-চৈতন্য’ নামে খ্যাত। এই বড়ডাঙাতেই গৌরনাম জপতে জপতে ‘অপ্রকট’ হন। ফি অগ্রহায়ণে কৃষ্ণা একাদশী তিথি থেকে চার দিন চলে উৎসব। মন্দির থেকে গৌর-গোপীনাথ বিগ্রহকে চতুর্দোলায় চাপিয়ে কীর্তন গাইতে গাইতে গোটা গ্রাম ঘুরিয়ে বড়ডাঙাতলায় আনা হয়।
আরও পড়ুন-ভূমিহীনদের কৃষিপাট্টা দেবেন মুখ্যমন্ত্রী
নরহরি ও তাঁর দাদা মুকুন্দ এবং মুকুন্দর পুত্র রঘুনন্দন মিলে শ্রীখণ্ডকে গৌরনাগরী ভাবের কেন্দ্রে পরিণত করেন। অনেকে মনে করেন, নীলাচল যাত্রার সময় চৈতন্য মহাপ্রভু এই বড়ডাঙাতলায় এসে বিশ্রাম নিয়েছিলেন। রাতভর নরহরির সঙ্গে শাস্ত্র আলোচনা করেছিলেন। উৎসব উপলক্ষে অন্নভোগ ও চিঁড়েভোগ বিতরণ করা হয়। বসে মেলা। এবার জনসমাগম হয়েছে চোখে পড়ার মতো।