প্রতিবেদন : বাংলার রাজনৈতিক মহলকে চমকে দিয়ে তৃণমূল কংগ্রেসে যোগ দিলেন বাবুল সুপ্রিয়। শনিবার দুপুরে তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাত ধরে তৃণমূল কংগ্রেসে যোগ দিলেন আসানসোলের সাংসদ। যোগদান পর্বে ছিলেন রাজ্যসভার দলনেতা ডেরেক ও’ব্রায়েন। বাবুল বলেন, কাজ করার দুর্দান্ত একটা সুযোগ পেয়েছি। বাংলার জন্য কাজ করতে চাই। এক সময় সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম রাজনীতি করব না। কিন্তু আজ বলছি, সিদ্ধান্ত বদলের জন্য গর্বিত। যেভাবে তৃণমূল কংগ্রেসে আমাকে স্বাগত জানানো হল, তাতে আমি আপ্লুত।
আরও পড়ুন :বি ফর ভবানীপুর, ভারতও
জুলাই মাসে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার রদবদলের সময় বাবুল মন্ত্রিত্ব হারান। তারপরই বাবুল জানান, তিনি রাজনীতি থেকে সন্ন্যাস নিচ্ছেন। সাংসদ পদও ছাড়বেন। সে নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়। নিষ্ক্রিয়তা চোখে পড়ে রাজনৈতিক মহলের। বিজেপিও মুখ রাখতে বাবুলকে বোঝায়। উপনির্বাচনে বিজেপির তরফে বাবুলকে ‘স্টার ক্যাম্পেনার’ বা তারকা বক্তার তালিকায় রাখা হয়। বিজেপির রাজ্য সভাপতি তাঁকে দলের মুখ বলে বর্ণনাও করেন। বাবুল যদিও জানিয়ে দেন, প্রচারে থাকবেন না। সে নিয়ে গুঞ্জন তৈরি হয়। কিন্তু সবরকমের জল্পনাকে পিছনে ফেলে শনিবারের দুপুরে তৃণমূল কংগ্রেসে বাবুলের যোগ দেওয়া কার্যত রাজনৈতিক মহলকে চমকে দিয়েছে। সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাত ধরে বাবুলের যোগদানপর্বের কথা মিডিয়া জানতে পারে দলের ট্যুইটার থেকে। বাবুল জানিয়েছেন, অনেক কথা আছে। রবিবার বিকেলে বিস্তারিত বলব।
আরও পড়ুন :ভিডিওয় বিতর্ক , মোদির সাফল্য দেখাতে গিয়ে লস অ্যাঞ্জেলেসের ছবি
তবে একথাও জানান, বিগত তিন-চারদিনেই বিজেপি ছাড়ার প্রেক্ষাপট তৈরি হয়। দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে ফোনে কথা হয়। সোমবার দলনেত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎও হবে। বাবুল বলেন, বাংলার হয়ে কাজ করার সুযোগ দিদি আর অভিষেক করে দিয়েছেন। এই সুযোগ হাতছাড়া করতে চাইনি। স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন ওঠে বাবুলের রাজনীতি ছেড়ে দেওয়ার বিষয়টি নিয়েও। এ প্রসঙ্গে কেন্দ্রের সাত বছরের মন্ত্রীর বক্তব্য, রাজনীতি ছাড়ার কথা মন থেকে বলেছিলাম। এর মধ্যে কোনও নাটক বা প্রতিহিংসা নেই। মন্ত্রী থাকলেও রাষ্ট্রমন্ত্রীর ক্ষমতা যে অনেকটাই সীমাবদ্ধ তা বোঝেন।
আরও পড়ুন :বিজেপি প্রথম এগারোয় সুযোগ দেয়নি, সম্মান দিয়েছে বলেই তৃণমূলে যোগদান: বাবুল
নিজেকে ওয়ার্কহোলিক বলে বর্ণনা করে বাবুল বলেন, অতীত বা বিজেপি সম্পর্কে যত কম বলা যায় তত ভাল। সামনের দিকে তাকাতে চাই। বাংলার জন্য কাজ করতে চাই। বাবুলের তৃণমূলে যোগদান নিঃসন্দেহে বিজেপির কাছে বড় ধাক্কা। মুকুল রায় দিয়ে শুরু। তারপর একের পর এক বিধায়করা এসেছেন। এবার একেবারে প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী। রাজনৈতিক মহল বলছে, ভোটের আগে যোগদান মেলার রিভার্স এফেক্ট চলছে। তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ কটাক্ষ করে বলেছেন, ঘটনা সম্বন্ধে একটা কথাই মনে আসছে— দেখ কেমন লাগে। আর অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, এই তো সবে শুরু।