দোহা, ২ ডিসেম্বর : জাপান-কোরিয়ার রোমহর্ষক ফুটবলের পর কিছুতেই একে আর অঘটনের বিশ্বকাপ বলা যাবে না। বরং কাতারে পরপর দু’দিন যা ঘটল, তাতে এশীয় ফুটবল একেবারে অন্য উচ্চতায় চলে গেল।
জার্মানি কোস্টারিকাকে ৪-২ গোলে হারিয়েও রাউন্ড অফ সিক্সটিনে যেতে পারেনি। শুক্রবার উরুগুয়েও ঘানাকে ২-০ গোলে হারিয়ে সেই বিদায়ের পথ ধরল। ধরতে হল কারণ, কোরিয়া ততক্ষণে দোহার এডুকেশন স্টেডিয়ামে ২-১ গোলে হারিয়ে দিয়েছে পর্তুগালকে (Portugal vs Korea)। গোলপার্থক্যে সনের দল উরুগুয়েকে টপকে শেষ ষোলোয় চলে গেল। তবে হেরেও গ্রুপ এইচ-এ এক নম্বর দল থেকে গেল পর্তুগালই।
অতিরিক্ত সময়ে খেলার ফল যখন ১-১, তখন পর্তুগালের (Portugal vs Korea) কর্নার কিক থেকে ফ্রি বল ধরে সন হিউং মিন বিপক্ষের বক্সের কাছে চলে আসেন। এরপর তিনি পাস বাড়িয়ে দেন হুয়াং হি চানের দিকে। যিনি দিয়েগো কোস্তার পাশ দিয়ে পর্তুগালের গোলে বল জড়িয়ে দেন। রিজার্ভ বেঞ্চে বসে থাকা লুই সুয়ারেজকে দেখা গেল হতাশায় মুখ ঢেকেছেন। এটা তাঁর শেষ বিশ্বকাপ। ফিরছেন গ্রুপ পর্ব থেকেই। ঠিক যেভাবে আগেরদিন টুর্নামেন্ট থেকে ছিটকে গিয়ে অবসরের ইঙ্গিত দিয়েছেন জার্মান স্ট্রাইকার টমাস মুলার।
জাপান আগেরদিন স্পেনকে হারিয়ে চমকে দিয়েছিল ফুটবল বিশ্বকে। তবে কোরিয়া কিন্তু দু’দশক আগে একবার বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে উঠেছিল। পর্তুগাল কেন হারল, এই প্রশ্নের সামনে এটা বলতে হয় যে, এই দলের পুরোটাই রোনাল্ডো-নির্ভর। এমন নয় যে নুনেজ, কনসেলোরা কিছু নয়। কিন্তু দলটার মধ্যে একটা সংঘবদ্ধ বার্তা ছড়িয়ে আছে যে, বল ধরো আর সিআর সেভেনের পায়ে-মাথায় ফেলো। কিন্তু ৩৭-এর রোনাল্ডো আর ২৭-এর লোক নন।। তাঁকে শেষপর্যন্ত ৬৪ মিনিটে তুলেই নিতে হল।
তার আগে প্রথমার্ধে সিআর সেভেন বেশ কয়েকটা সুযোগ নষ্ট করেছেন। তাঁকে এতে খুব বিরক্ত দেখিয়েছে। দিয়েগো দালোতের বাড়ানো যে পাস তিনি প্রথমার্ধে কাজে লাগাতে ব্যর্থ হলেন, সেই পরিস্থিতিতে আগে অনেক গোল করেছেন। এখানে অফসাইড হলেন, শটেও তেমন ধার ছিল না।
তবে ম্যাচের ৫ মিনিটের মধ্যে গোল করে পর্তুগালকে ১-০ তে এগিয়ে দিয়েছিলেন রিকার্ডো হোরতা। যাঁর আবার একটা ঘটনা আছে। ২০১৪-তে প্রথমবার বিশ্বকাপ খেলেছিলেন। কিন্তু দ্বিতীয় ম্যাচ খেলতে ৮ বছর লেগে গেল। তবে ২৭ মিনিটে কোরিয়ার হয়ে গোল শোধ করে দেন ইউং গুন কিম। কিছুটা ডিফেন্সের গড়িমসি ছিল পর্তুগালের। এই সময় পর্তুগাল ডিফেন্সের উপর ভয়ঙ্কর চাপ তৈরি করেছিলেন সন-জং হোরা। কিন্তু অতিরিক্ত সময়ের চাপটা আরও বড় হয়ে গেল! পর্তুগাল সমতা ফেরানোর সময় পায়নি।
ঘানার বিরুদ্ধে ২১ মিনিটে পেনাল্টি মিস করেছেন আন্দ্রে আয়ো। তবে প্রথমার্ধেই দুটি গোল করে উরুগুয়েকে এগিয়ে দিয়েছিলেন জিওরজিও দে আরাসকায়েতা। কিন্তু যার শেষ ভাল, তার সব ভাল। সেটাই হয়নি!
আরও পড়ুন-ব্রাজিলকে হারিয়েও বিদায় ক্যামেরুনের, বিশ্বকাপে আরও এক অঘটন