সালটা ছিল ২০১৪। আসানসোলে বাবুল সুপ্রিয়র প্রচারে এসে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বলেছিলেন, “আমার মন্ত্রিসভায় বাবুলকে দরকার। ওকে জেতান। কথা রেখে ছিলেন আসানসোলবাসী। কথা রেখেছিলেন মোদিও। ক্ষমতায় আসার পর বাবুলকে প্রতিমন্ত্রী করেছিলেন। কিন্তু মাসখানেক আগে কোনও এক অজানা কারণে সেই “হাফ মন্ত্রী” পদও চলে নয় তাঁর। এরপর থেকেই “বেসুরো” হয়ে যায় বাবুল।অনেক অযোগ্য লোক মন্ত্রিসভায় জায়গা পেয়েছেন। ২০১৪, যখন বিজেপির কেউ ছিল না, তখন নিজের যোগ্যতায় সাংসদ হয়েছিলেন। ২০২৯-এও তাই। এরপর যখন তাঁর আরও উপরে যাওয়ার কথা ছিল, ঠিক তখন তাঁর মন্ত্রিত্ব কেড়ে নেওয়া হয়।
আরও পড়ুন-দ্রুত গরম হচ্ছে পৃথিবী, প্রতি দশকে দ্বিগুণ হচ্ছে ৫০ ডিগ্রি ছোঁয়ার সংখ্যা
বাবুল বলেন জীবন তাঁকে একটা নতুন নতুন সুযোগ দিয়েছে। স্বাভাবিক ভাবেই প্রশ্ন ধেয়ে এল, পরের পদক্ষেপ কী! বললেন, বড় সুযোগ এসেছে। খুশি মনে তা গ্রহণ করেছেন তিনি। কিন্তু সুযোগটা কী? বাবুল রহস্য জিইয়ে রাখলেন। রাজ্যসভায় সাংসদ পদ নাকি কোনও বিধায়ক পদ, মুচকি হেসে মুখ বন্ধই রাখলেন বাবুল সুপ্রিয়।
বাবুল এই নতুন চ্যালেঞ্জ নিয়ে এদিন বলেন, “আমাদের জীবনে বহু ঘটনা ঘটে। তা থেকে মনে যা হয় সেভাবেই আমরা প্রতিক্রিয়া দিই। আমি হয়তো গায়ক বলে কিছুটা আবেগপ্রবণ কিন্ত রাজনীতি ছাড়ার সিদ্ধান্তটা ঝোঁকের মাথায় ছিল না।” কিন্তু সেই সন্ন্যাস ভেঙে কেন তৃণমূলে যোগ দিচ্ছেন? বাবুলের এক কথায় ব্যাখ্যা, “প্লেইং ইলেভেন এ থাকতে চাই।” অর্থাৎ প্রথম একাদশে সুযোগ চান তিনি। বাবুল স্পষ্ট বুঝিয়ে দিলেন বিজেপিতে তিনি কোনঠাসা হয়ে পড়ছিলেন। তাহলে কি মন্ত্রিত্ব হারানো নিয়ে ক্ষোভ নাকি কাজ করতে না পারা, ক্রোধের মূল কারণটা কোথায় রাখা? বাবুল ভেঙে বললেন না।
আরও পড়ুন-১ অক্টোবর থেকে চালু নয়া শ্রম আইন
তা বলে অবশ্য ইতিহাসকে অস্বীকার করতে চাইছেন না বাবুল সুপ্রিয়। তাঁর কথায়, “যখন যেটা করি তখন সেটা মন দিয়ে করি। অতীতের কোনও পোস্ট ডিলিট করব না।”
কিন্তু গাঁটছড়াটা কে কবে বাঁধল! বাবুল বলছেন, “মাত্র চার দিন আগে ডেরেক ওব্রায়েন সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলেন। পুরো বিষয়টাই তার কাছে খুব অনুপ্রেরণার ছিল সেই করণেই এই সিদ্ধান্ত নেন।” সাংসদ পদ থেকে ইস্তফা দেওয়ার ব্যাপারে বাবুল স্পষ্ট জানালেন, বুধবারই স্পিকারের সঙ্গে দেখা করে পদত্যাগ করতে চান তিনি।
আরও পড়ুন-পাঞ্জাবের নতুন মুখ্যমন্ত্রী চরণজিৎ সিং চান্নি
বাবুলের যুক্তি, “আমি একটি সুযোগে প্রতিক্রিয়া দিচ্ছি। এই সুযোগ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তৈরি করে দিয়েছেন। বাবুলের কথায়, তৃণমূলের থেকে তিনি প্রাণ ভরা ভালবাসা পাচ্ছেন।” তৃণমূলে যোগদানের পর থেকেই ট্রোলিং চলছে। বিন্দুমাত্র না দমে বাবুল বলছেন, ভালোবাসা আর যুদ্ধে সবটাই জায়েজ।