প্রতিবেদন : ধমকে-চমকে নয়, ভাল ব্যবহার, আন্তরিক কথাবার্তার মধ্যে দিয়ে মনের কথা বের করে আনার প্রয়াস। জেরা বা জিজ্ঞাসাবাদের ক্ষেত্রে এবারে এই কৌশল নেওয়ার পরিকল্পনা নিচ্ছে কলকাতা পুলিশ। উচ্চস্বরের বদলে নিচুস্বরে সুন্দর ব্যবহার। অভিযুক্ত বা সন্দেহভাজনের বিশ্বাস অর্জন করে স্নায়ুযুদ্ধে জেতা। জেরার এই কৌশল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং নেদারল্যান্ডসে (USA-Netherlands Model) ইতিমধ্যেই রীতিমতো সাফল্যলাভ করেছে। মনোবিজ্ঞানের ভাষায় যাকে বলে ক্যাথারসিস, মানে মনের লুকানো কথা উজাড় করে দেওয়া তদন্তকারীর ভাল ব্যবহারে তা অনেকটাই তরান্বিত হয় নিশ্চিতভাবেই। এই কৌশল এখানে কতটা ফলপ্রসূ হতে পারে তা জানতে পরীক্ষা-নিরীক্ষার মধ্যে দিয়ে এগতে চাইছে কলকাতা পুলিশ। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং নেদারল্যান্ডস (USA-Netherlands Model) পুলিশের বিশেষজ্ঞদের কাছে এ বিষয়ে প্রশিক্ষণের সম্ভাবনাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। প্রয়োজনে নেওয়া হতে পারে মনোবিদদের পরামর্শও।
আরও পড়ুন-বঞ্চনা থেকে মুক্তি দিতে রাজ্যের নয়া পদক্ষেপ, পরিচারিকাদের ন্যূনতম বেতন
একটা সময় ছিল যখন অপরাধী, অভিযুক্ত কিংবা সন্দেহভাজনের পেট থেকে গোপন কথা আদায়ের জন্য প্রয়োগ করা হত থার্ড ডিগ্রি। ভয় দেখিয়ে, বিভিন্নভাবে মানসিক চাপ দিয়ে আদায় করা হত স্বীকারোক্তি। সময়ের হাত ধরে আধুনিকতার ছোঁয়া লেগেছে তদন্ত-বিজ্ঞানে। অপরাধ-বিজ্ঞানের সঙ্গে সমন্বয় ঘটেছে মনোবিজ্ঞানের। মানবাধিকার কমিশনের নির্দেশ মেনে ধীরে ধীরে বিদায় নিয়েছে শারীরিক বা মানসিক নিগ্রহের প্রবণতাও। সবচেয়ে বড় কথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে বাংলার পুলিশ এখন অনেক বেশি মানবিক। আইনশৃঙ্খলা রক্ষা থেকে শুরু করে অপরাধের তদন্ত— সব কিছুতেই মানবিক আচরণ প্রতিফলিত হচ্ছে পুলিশের। জনসংযোগের ক্ষেত্রেও পুলিশের মূলমন্ত্র সমানুভূতি। এই এমপ্যাথি বা সমানুভূতিকেই কোনও ঘটনার রহস্য উন্মোচনের চাবিকাঠি হিসেবে এবার ব্যবহার করতে চায় কলকাতা পুলিশ। ব্রিটিশ এবং বাম আমলের দুর্ব্যবহারের অভ্যাসকে বিদায় জানাতে চায় চিরতরে।