মণীশ কীর্তনিয়া, নয়াদিল্লি: বুধবার, দিল্লিতে দলীয় সাংসদদের সঙ্গে বৈঠকের পরে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে কেন্দ্রের মোদি সরকারের বিরুদ্ধে গর্জে উঠলেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (CM Mamata Banerjee)। তিনি জানান, সংসদের শীতকালীন অধিবেশনে রাজ্যের পক্ষে বিপজ্জনক বিল আনছে কেন্দ্র। সংখ্যাগরিষ্ঠাতার জোরে তা পাশ করিয়ে নেবে। এটা একেবারেই উচিত নয়। যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোয় আঘাত। একইসঙ্গে সংসদের অধিবেশনের প্রথম দিনে দলীয় সংসদদের জন্য একগুচ্ছ নির্দেশ দেন তৃণমূল কংগ্রেস সুপ্রিমো।
দলীয় সাংসদ সৌগত রায়ের দিল্লির বাসভবনে এদিন বৈঠক করেন তৃণমূল সুপ্রিমো। ছিলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় (Abhishek Banerjee), সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়, ডেরেক ওব্রায়েন, সুখেন্দুশেখর রায়, শতাব্দী রায়-সহ প্রবীণ-নবীন প্রায় সব সাংসদই। আলোচনা শেষে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “সংসদে অনেক বিল আসতে চলেছে। কিছু বিল রাজ্যের পক্ষে বিপজ্জনক বিল। এরফলে যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোতে ভাঙন ধরতে পারে।” এইসব নিয়ে লোকসভা ও রাজ্যসভার সাংসদদের সঙ্গে বিশদে আলোচনা হয়েছে বলে জানান তৃণমূল সুপ্রিমো। তাঁর অভিযোগ, বিরোধীরা প্রতিবাদ করার পরেও সংখ্যাগরিষ্ঠতার জোরে বিল পাশ হয়ে যাচ্ছে। সব রাজ্যের প্রতিনিধিই সংসদে আছেন। তাঁদের কথা না শুনে সংসদে বিল পাশ করানো উচিত নয়।
আরও পড়ুন: দিল্লি পুরনিগম দখল করল আপ
দায়িত্বশীল বিরোধীদের ভূমিকা পালন করবে তৃণমূল। এই কথা জানিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (CM Mamata Banerjee) বলেন, “রাজ্যের অধিকারে হস্তক্ষেপ করা হচ্ছে। রাজ্যকে বুলডোজ করে বিল পাশ করা হচ্ছে। বিরোধীদের বুলডোজ করা যাবে না। আমরা বিরোধীদের সঙ্গে থেকে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে লড়াইতে নামব।”
এদিনই ১০০ দিনের কাজে বকেয়া মেটানোর আশ্বাস দিয়েছেন কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রী। এই বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে মুখ্যমন্ত্রীর বলেন, বছর শেষে কেন্দ্র টাকা পাঠাচ্ছে, যেন ভিক্ষা দিচ্ছে! এখন ট্রেন্ডার ডেকে কাজ শুরু করতেই সময় চলে যাবে। সঠিক সময়ে রাজ্যের বকেয়া মেটানোর দাবি জানান মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
বৈঠকে দলীয় সাংসদের বেশ কিছু নির্দেশ দিয়েছেন তৃণমূল সুপ্রিমো।
• সব দলীয় সাংসদকে অধিবেশনে উপস্থিত থাকতে হবে।
• না জানিয়ে কোনও দলীয় সাংসদ বিদেশ যেতে পারবেন না।
• সংবাদ মাধ্যমের সামনে বিবৃতি দিতে গেলে দলের থেকে অনুমতি নিয়ে হবে।
• অধিবেশনে সরব হবেন সাংসদরা কিন্তু ভাষা সংযম বজায় রাখতে হবে।
• এক-দুজন নয়, সব সাংসদকেই অধিবেশনে বক্তব্য পেশ করতে হবে।