বৃষ্টিতে নাকাল গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গ

Must read

প্রতিবেদন : গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গকে নাকাল করে ছাড়ছে বৃষ্টি। হাওড়া , হুগলি, দুই মেদিনীপুর বৃষ্টিতে হাবুডুবু অবস্থা।

প্রবল বৃষ্টিতে জলমগ্ন হাওড়া জেলার গ্রামীণ এলাকা। অধিকাংশ চাষের জমি জলের তলায়। নষ্ট হয়েছে প্রচুর ফসল। বেশ কিছু এলাকায় কাঁচাবাড়ি ধসে পড়েছে। বিপর্যয় শুরুর আগে থেকেই প্রস্তুত প্রশাসন। অতিবৃষ্টির জেরে বিভিন্ন এলাকা জলমগ্ন হতে শুরু করতেই ঝাঁপিয়ে পড়েছে ত্রাণে। অনেককে নিরাপদ জায়গায় সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। কয়েকটি এলাকায় ত্রাণশিবির খোলা হচ্ছে। উলুবেড়িয়া দক্ষিণ কেন্দ্রের অধিকাংশ গ্রামেরই চাষের জমি জলের তলায়। হিরাপুর, ধূলাসিমলা, নবগ্রাম প্রভৃতি গ্রামের অনেক রাস্তায় জল। বাগনানের বাইনান, চন্দ্রপুর, উদয়নারায়ণপুর, সাঁকরাইল প্রভৃতি এলাকাও জল থইথই। বাগনান গ্রামীণ হাসপাতালচত্বর জলমগ্ন। ইতিমধেই জেলাশাসক দুর্গত এলাকার পরিস্থিতি পর্যালোচনা করেন। দুর্গতদের ত্রাণ পৌঁছে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন।

আরও পড়ুন :হঠাৎ অপসারিত দিলীপ ঘোষ

প্রবল বৃষ্টিতে ফের রূপনারায়ণের জল ঢুকে প্লাবিত হুগলির খানাকুলের একাধিক গ্রাম। যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন ধান্যঘোরী গ্রামপঞ্চায়েতের বিস্তীর্ণ এলাকা। একে বন্যা পরিস্থিতি তার উপর নিম্নচাপের ভারী বৃষ্টি। প্রায় দেড় মাস আগে নদীর জলের তোড়ে ভেঙেছিল বাঁধ। এরপর নিম্নচাপের টানা বৃষ্টিতে আবার সেখানে বিপর্যয়। বাঁধ ছাপিয়ে, বালির বস্তা ছাপিয়ে রূপনারায়ণের জল ঢুকছে হুগলির খানাকুল দু’নম্বর ব্লকের একাধিক গ্রামে। ঘরবাড়ি, চাষের জমি জলের তলায়। আরামবাগ সড়কও জল থইথই। তবে প্রশাসনের তৎপরতায় জল দ্রুত নিষ্কাশনের কাজ চলছে। দুর্গতদের পৌঁছে দেওয়া হয়েছে ত্রাণ। নিচু এলাকার বহু মানুষকে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।

পশ্চিম মেদিনীপুরের জলভাসি পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হলেও পূর্ব মেদিনীপুরের পটাশপুর ভগবানপুরের পর এগরা ও কাঁথি মহকুমার একটা অংশ নতুন করে প্লাবিত হতে শুরু করেছে। তার উপর সোমবার থেকে একটানা বৃষ্টি চলছে দুই মেদিনীপুর জুড়ে। ফের নিম্নচাপের ফলে এই বৃষ্টি মঙ্গলবারও চলবে বলে আবহাওয়া দফতর পূর্বাভাস দিয়েছে। পূর্ব মেদিনীপুরের সাউথখণ্ড ঘোড়াবসান, পচেট, পুরুষোত্তমপুর, মংলামাড়ো থেকে তালছিটকিনি পর্যন্ত এলাকা এখনও এককোমর জল। জলমগ্ন ভগবানপুর ১ ও ২ ব্লক। পটাশপুরের বিধায়ক উত্তম বারিক দুর্গত মানুষদের পাশে দাঁড়িয়েছেন। পটাশপুর ২ ব্লকে তৃণমূল কংগ্রেস শ্রমিক সংগঠনের পক্ষ থেকে শ্রীরামপুর মৌজায় ইতিমধ্যে দুই হাজার জলভাসিদের খাবার দেওয়া হয়েছে। পটাশপুর ও ভগবানপুর এলাকার বহু বানভাসি মানুষজন বাড়ি ছেড়ে স্কুলে রয়েছেন। পূর্ব মেদিনীপুর জেলায় ইতিমধ্যে এক লক্ষ সাতাত্তর হাজার হেক্টর জমির ধান পুরোপুরি জলের তলায় চলে গিয়েছে বলে কৃষি দফতরের খবর। প্রচুর ভেড়ি ও পুকুর ভেসে যাওয়ায় চিংড়ি চাষের পাশাপাশি অন্যান্য মাছ চাষেও ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। সবজি, পান, ফুল, শাকচাষের ক্ষতিও যথেষ্ট পরিমাণে হয়েছে। তবে কেলেঘাই নদীর জলে এগরা, চণ্ডীপুর, পাঁশকুড়া-সহ কাঁথি ৩ ব্লকের বেশ কয়েকটি মৌজা ইতিমধ্যে জলমগ্ন। পাঁশকুড়ার বিধায়ক ফিরোজা বিবি নৌকো করে প্লাবিত এলাকা ঘুরেছেন। সবং, পিংলা ও ডেবরা এলাকার বন্যা পরিস্থিতি একই অবস্থা।

 

Latest article