নবনীতা মণ্ডল নয়াদিল্লি: আমায় গ্রেফতার করা হয়েছিল তৃণমূল কংগ্রেসের স্ট্র্যাটেজি ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা জানতে৷ মোরবির ট্যুইটের জন্য নয়৷ মেঘালয়, গোয়া ও ত্রিপুরায় দলের কী ধরনের ভাবনা-পরিকল্পনা ও প্রচার কৌশল রয়েছে, বারবার সেটাই জানতে চাওয়া হয়েছে৷ নিজের গ্রেফতারির আসল উদ্দেশ্য নিয়ে একান্ত সাক্ষাৎকারে বললেন সাকেত গোখেল। আমার মোবাইল-সহ বাকি সব ডিভাইস নিয়ে নেওয়া হয়েছিল আমার দলের অন্দরের তথ্য জানার জন্যই, বিস্ফোরক সাকেত।
আরও পড়ুন-জনসংযোগ যাত্রা মন্ত্রী উদয়নের
মোরবি ব্রিজ সংক্রান্ত বিষয়ে ট্যুইটের জন্য ৪ দিনের মধ্যে দু’বার গ্রেফতার হন তৃণমূলের জাতীয় মুখপাত্র সাকেত গোখেল। মোরবিতে ব্রিজ ভেঙে পড়ার পরে সেখানে প্রধানমন্ত্রী সফর নিয়ে করা ট্যুইটে তাঁকে গ্রেফতারের পরে শুক্রবার আমেদাবাদ আদালত তাঁকে জামিন দেয়। এরপরই গুজরাতের বিজেপি সরকার এবং কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে সুর চড়ালেন সাকেত গোখেল। শনিবার একান্ত সাক্ষাৎকারে পরিষ্কার করে দিলেন বিজেপি সরকারের আসল উদ্দেশ্য। শুধু তৃণমূল কংগ্রেসের অন্দরের খবরই নয়, সাকেতকে বারবার জিজ্ঞেস করা হয়েছে তাঁর ব্যক্তিগত জীবন এবং তাঁর বান্ধবীর বিষয়েও। এমনকী কয়েকদিন আগে তাঁর যে কার্ডিয়াক অপারেশন হয়েছিল সেই টাকা কোথা থেকে এসেছে, সেই সংক্রান্ত প্রশ্নও তাঁকে করা হয়। কেড়ে নেওয়া হয় তাঁর ল্যাপটপ এবং ট্যাব।
আরও পড়ুন-বীরবাহার চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করে দেখান
সাকেত গোখেল যখন পুলিশকে প্রশ্ন করেন, আমি ট্যুইট করেছি আমার মোবাইল থেকে, তাহলে আমার অন্য ডিভাইস কেন হেফাজতে রাখা হবে? পুলিশের সাফ জবাব ছিল, ওপরমহলের নির্দেশ আছে, আমাদের রাখতেই হবে। সাকেতের বক্তব্য, তাঁকে তড়িঘড়ি গ্রেফতার করার বিষয়ে গুজরাত পুলিশের কাছে কোনও ইনফরমেশন আগে থেকে ছিল না। আর সেকথা গুজরাত পুলিশ তাঁর কাছে স্বীকারও করেছে বলে জানালেন তিনি। তাঁর কথায়, গুজরাত পুলিশের বেশ কিছু অফিসার-কনস্টেবল আমাকে বলেছেন, আমাদের কাছে কোনও ইনফরমেশন ছিল না। হঠাৎ করেই ওপরমহল থেকে নির্দেশ আসে আপনাকে এখনই গ্রেফতার করতে হবে। সেই অনুযায়ী আমরা অ্যাকশন নিয়েছি।
জেরার সময় সাকেত বারবার অফিসারদের জানান, আপনাদের যদি কোনও প্রশ্ন থাকে ট্যুইট সংক্রান্ত সেকথা আমাকে জিজ্ঞেস করুন কিন্তু অফিসাররা ট্যুইট সংক্রান্ত কোনও প্রশ্ন না করে শুধুমাত্র তৃণমূল কংগ্রেসের অন্দরের খবর নেওয়ার ক্ষেত্রে বেশি উৎসাহী ছিলেন।
আরও পড়ুন-রাস্তা সারাতেও দিচ্ছে না রেল: টক টু মেয়রে গৌতম
সাকেত বলেন, বিজেপি যদি মনে করে যে আমার মনোবল ভেঙে গেছে, তবে সেটা তাদের ভুল। বিজেপি যে রাজনৈতিক প্রতিহিংসা চরিতার্থ করার চেষ্টা করছে আমাকে দিয়ে তৃণমূল কংগ্রেসের বিরুদ্ধে তাতে তারা কোনওদিনই সাফল্য পাবে না। তিনি আরও বলেন, কোনওরকম ট্রানজিট রিমান্ড ছাড়াই তাঁকে জয়পুর থেকে আমেদাবাদ নিয়ে গিয়েছে পুলিশ। এই দীর্ঘ রাস্তায় তাঁর সঙ্গে অনেক অঘটন ঘটতে পারত। তাঁর এই গ্রেফতার সম্পূর্ণ বেআইনি বলে দাবি করেন সাকেত গোখেল। এমনকী এই গ্রেফতারি কতটা বেআইনি ছিল তার প্রমাণ, ম্যাজিস্ট্রেট সাকেতকে জিজ্ঞেস করেছিলেন তিনি গুজরাত পুলিশের বিরুদ্ধে কোনও এফআইআর করতে চান কি না। বিজেপির এই প্রতিহিংসাপরায়ণ রাজনীতির বিরুদ্ধে গর্জে উঠে সাকেত জানান, ২০২১-এ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ পশ্চিমবঙ্গে গিয়ে দাবি করেছিলেন তাঁরা ২০০ পার করবেন। অথচ তাঁদের ৭৭-এই থেমে যেতে হয়। বিজেপির শেষের কাউন্টডাউন তখনই শুরু হয়ে গিয়েছিল। তখন থেকেই তারা এজেন্সিকে কাজে লাগিয়েছে তৃণমূল নেতাদের বিরুদ্ধে। গুজরাত পুলিশও আমার বিরুদ্ধে এজেন্সি হিসেবেই কাজ করেছে।