প্রবীর ঘোষাল, দোহা: অমরত্ব পেয়ে গেলেন লিওনেল মেসি (Lionel Messi)! রবিবাসরীয় লুসেইল একই বিন্দুতে মিলিয়ে দিল দিয়েগো মারাদোনা ও মেসিকে। ৩৬ বছরের খরা কাটিয়ে ফের বিশ্বকাপ ট্রফিটা মুঠোয় নিলেন এক আর্জেন্টাইন মহাতারকা।
অবিশ্বাস্য ফুটবল জীবনে অজস্র গোল করেছেন। সতীর্থদের দিয়ে গোলও করিয়েছেন অজস্র। কত যে সুদৃশ্য ট্রফি তাঁর ড্রয়িংরুমের শো-কেসে সাজানো, তার কোনও হিসেব নেই। দেশ ও ক্লাবকে কত ম্যাচ জিতিয়েছেন, তার হিসেব রাখতেও পরিসংখ্যানবিদরা হিমশিম খেয়ে যান। অথচ এই একটা ট্রফি অধরাই থেকে গিয়েছিল মেসির। রবিবাসরীয় লুসেইলে সেই বৃত্তটাও সম্পূর্ণ হল।
রবিবার ছিল কাতারের জাতীয় দিবস। শনিবার রাত থেকেই যার উদযাপন শুরু হয়ে গিয়েছিল বাজি পোড়ানো দিয়ে। কিন্তু এদিন সকাল থেকেই গোটা দোহা চলে গিয়েছিল আর্জেন্টিনা সমর্থকদের দখলে। স্টেডিয়ামে ঢোকার মুখে দু’ধারে মেসি ও মারাদোনার অসংখ্য কাট আউট ও পোস্টার দেখে মনে হচ্ছিল, এটা দোহা নাকি বুয়েনস আইরেস!
আরও পড়ুন-এখনই অবসর নিচ্ছেন না মেসি!
ফাইনাল শুরুর ৩-৪ ঘণ্টা আগে থেকেই উৎসব শুরু হয়ে গিয়েছিল আর্জেন্টাইনদের। স্টেডিয়ামের জায়ান্ট স্ক্রিনে যখন দেখাল, আর্জেন্টিনা ফুটবল দল টিমবাস থেকে নামছে, তখন গোটা স্টেডিয়াম যেভাবে গর্জনে ফেটে পড়ল, তাতে মনে হচ্ছিল মেসি তখনই বিশ্বকাপটা জিতে ফেলেছেন। আর্জেন্টাইনদের সেই গর্জন আর থামেনি। ম্যাচ চলাকালীন মেসির পাশাপাশি অ্যাঞ্জেল ডি’মারিয়ার পায়ে বল পড়লেই গর্জে উঠছিল গ্যালারি।
মাঝে এমবাপে-ম্যাজিকে উৎসাহে কিছুটা ভাঁটা পড়েছিল ঠিকই। কিন্তু ম্যাচ শেষে আর্জেন্টাইনদের গর্জন বদলে গেল উৎসবে। খেলা শেষ হওয়ার পর রাত যত গড়াল, ততই সেই উৎসবের তীব্রতা আরও বাড়ল। ফাইনাল শেষ হওয়ার বেশ কয়েক ঘণ্টা পরেও রাস্তায় নীল-সাদা জার্সিধারীদের ঢল। তাঁদের চোখে জল, মুখে বিশ্বজয়ের চওড়া হাসি। মেসির (Lionel Messi) বিশ্বজয়ের মঞ্চে রইল এক চিলতে ভারতও! খেলা শুরুর আগে বিশ্বকাপজয়ী স্প্যানিশ অধিনায়ক ইকের ক্যাসিয়াসের সঙ্গে বিশ্বকাপ ট্রফি উন্মোচন করলেন দীপিকা পাড়ুকোন। তিনি স্টেডিয়ামে পা রাখতে, যেভাবে হাততালির ঝড় উঠল, তাতে ভারতীয় অভিনেত্রীর জনপ্রিয়তা টের পাওয়া গেল। মন কাড়ল মিনিট পনেরোর বর্ণাঢ্য সমাপ্তি অনুষ্ঠানও। সব মিলিয়ে এক মাসের ফুটবল যজ্ঞ শেষ হল বর্ণময় ভাবেই। এবার আরও চার বছরের অপেক্ষা।