প্রতিবেদন : এতদিন কাশ্মীরের অংশ হিসাবেই ভাল ছিল লাদাখ (Kashmir- Ladakh)। কাশ্মীর থেকে ৩৭০ ধারা প্রত্যাহার করার পাশাপাশি লাদাখকে কাশ্মীর থেকে আলাদা করে দেওয়া হলেও তাতে লাদাখের বিশেষ কোনও উন্নতি হয়নি। এই অভিযোগ তুলে কেন্দ্রীয় সরকারের বিশেষ কমিটি থেকে সরে দাঁড়ালেন লাদাখের নেতৃবৃন্দ। এ ঘটনায় লাদাখে বড় ধাক্কা খেল কেন্দ্রের নরেন্দ্র মোদি সরকার। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক লাদাখ-কারগিলের সমস্যা সমাধানের জন্য স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী নিত্যানন্দ রাইয়ের নেতৃত্বে একটি কমিটি গঠন করেছিল। লাদাখের লেফটেন্যান্ট গভর্নর, সাংসদ, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের একজন শীর্ষ আধিকারিক এবং লে ও কারগিল ডেমোক্রেটিক অ্যালায়েন্সের এপেক্স বডির নয়জন প্রতিনিধিকে এই কমিটির সদস্য করা হয়েছিল। সোমবার লাদাখি নেতারা কেন্দ্রের ওই উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন কমিটি থেকে পদত্যাগ করেন।
পদত্যাগী নেতারা সাফ জানিয়েছেন, একাধিক প্রতিশ্রতি দিয়েও তা পূরণ করেনি মোদি সরকার। তাঁরা স্পষ্ট বলেছেন, লাদাখকে অঙ্গরাজ্যের স্বীকৃতি না দেওয়া পর্যন্ত কেন্দ্রের সঙ্গে কোনও আলোচনা নয়। তাঁরা সর্বসম্মতিক্রমে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, লাদাখকে (Kashmir- Ladakh) রাজ্যের মর্যাদা এবং সংবিধানের ষষ্ঠ তফসিলের অধীনে বিশেষ মর্যাদা-সহ তাঁদের বিভিন্ন দাবি আলোচ্যসূচির অংশ না করা পর্যন্ত তাঁরা ওই উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন কমিটির কোনও কাজে যোগ দেবেন না। অন্যদিকে লাদাখ সীমান্তে ক্রমশই আগ্রাসন বাড়ছে চিনের। এরই মধ্যে লাদাখের নেতাদের এই পদক্ষেপ নিশ্চিতভাবেই নরেন্দ্র মোদি সরকারকে বিপাকে ফেলল।
আরও পড়ুন-প্রাক্তন কংগ্রেস বিধায়কের নাতিকে পিটিয়ে খুন দুষ্কৃতীদের
কয়েকদিন আগেই লাদাখের সমস্যা সমাধান করতে একটি কমিটি গঠন করে কেন্দ্র। স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী নিত্যানন্দ রাইয়ের নেতৃত্বে ওই কমিটিতে ঠাঁই দেওয়া হয়েছিল লাদাখের প্রতিবাদী নেতাদের। কিন্তু লাদাখের স্বশাসিত পরিষদ ও কারগিল ডেমোক্র্যাটিক অ্যালায়েন্সের তরফে এক যৌথ বিবৃতিতে জাননো হয়েছে, এই কমিটির বৈঠকে তাঁরা যোগ দেবেন না। কেন্দ্রের কোনও উদ্যোগেই তাঁরা যুক্ত হবেন না। লাদাখ বুদ্ধিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট তথা বিজেপির প্রাক্তন মন্ত্রী শেরিং দোরজে সাফ জানিয়েছেন, তাঁরা মনে করছেন, কাশ্মীরের অংশ হয়ে থাকলেই তাঁদের ভাল হত। মোদি সরকার তাঁদের ভুল বুঝিয়েছে। লাদাখের উন্নতির প্রতিশ্রুতি দেওয়া হলেও তা পালন করা হচ্ছে না। এখন তাঁরা বুঝতে পারছেন যে, কেন্দ্র তাঁদের রাজ্য এবং ষষ্ঠ তফসিলের দাবির বিরুদ্ধে। এক বছরেরও বেশি সময় ধরে লাদাখের বাসিন্দারা সংবিধানের ষষ্ঠ তফসিলের অধীনে রাজ্য এবং বিশেষ মর্যাদার দাবিতে আন্দোলন করছেন। কারগিল ডেমোক্র্যাটিক অ্যালায়েন্সের নেতা সাজ্জাদ হুসেন বলেছেন, গিলিগিট ও বালুচিস্তানের প্রতি পাকিস্তান যেমন আচরণ করে, তাঁদের সঙ্গে সে ধরনের আচরণ করা হলে তাঁরা সেটা মানবেন না।