প্রতিবেদন : রীতিমতো যুক্তি এবং তথ্য দিয়ে বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতির কুৎসার জবাব দিল তৃণমূল কংগ্রেস (TMC- BJP)। করোনাকালে অক্সিজেনের জোগান থেকে শুরু করে বিচারব্যবস্থা— প্রতিটি বিষয়ই যুক্তি দিয়ে জবাব দিয়েছে তৃণমূল (TMC- BJP)।
অক্সিজেনের সংকট : কোভিড-ত্রাসের সময় অক্সিজেনের সংকটের জন্য যে আসলে দায়ী প্রধানমন্ত্রী নিজেই তা চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দেওয়া হল তৃণমূলের পক্ষ থেকে। মনে করিয়ে দেওয়া হয়েছে, সংসদে তৃণমূল দলনেতাকে মাস্ক খুলে ফেলতে বলেছিলেন প্রাক্তন উপরাষ্ট্রপতি বেঙ্কাইয়া নায়ডুই। গঙ্গায় ভাসমান দেহগুলির কথা আজও মানুষের স্মৃতিতে। অথচ বিশ্বব্যাপী নিন্দা এবং সমালোচনার মুখে পড়ে নিজেদের অব্যবস্থা ঢাকতে সংসদে তাঁরা বলেছিলেন অক্সিজেনের অভাবে কোনও মৃত্যু হয়নি। নির্বাচনী প্রচার করে গিয়েছেন মানুষের কথা না ভেবে। শোনা হয়নি নির্বাচন স্থগিত রাখার জন্য তৃণমূলের দাবি।
স্বাস্থ্যসাথী : আয়ুষ্মান ভারত এরাজ্যে লাগু না হতে দেওয়ার অভিযোগও মিথ্যে। এর থেকে অনেক সুবিধাযুক্ত স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্প চালু করেছে রাজ্য। আয়ুষ্মানের মতো তা আদৌ শর্তাধীন নয়। স্বাস্থ্যসাথীতে উপকৃত হচ্ছেন বাংলার আমজনতা। পাচ্ছেন বিনামূল্যে চিকিৎসা।
বিজেপির আবাস দুর্নীতি : লিখিত বিবৃতিতে তৃণমূল কংগ্রেস দেখিয়ে দিয়েছে, আবাস যোজনার দুর্নীতিতে কেমনভাবে ডুবে আছেন বিজেপি নেতারা। পঞ্চায়েত প্রধান সুশান্ত শীটের বিশাল বাড়ি থাকা সত্ত্বেও তাঁর বাবা ভাস্কর শীটের নাম রয়েছে প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার তালিকায়। হেলেঞ্চায় বিডিওকে ঘেরাও এবং আক্রমণ করতে উসকানি দিয়েছেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি এবং সাংসদ দিলীপ ঘোষ। বিজেপির পঞ্চায়েত প্রধান আবাস যোজনায় নিজের পরিবারের সদস্যদের নাম তোলার জন্য অঙ্গনওয়াড়ি এবং আশাকর্মীদের উপর প্রচণ্ড চাপ দিচ্ছেন।
তাহলে কেন? সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য বিষয়, শুভেন্দু অধিকারীর জেলায় ৩,০২,৫৯৭ জনের মধ্যে তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে ১,২৫,৩৮৮টি নাম। অর্থাৎ বাদ পড়েছে ৪১.৪৩ শতাংশ নাম। রাজ্যের জেলাগুলির মধ্যে যা সর্বাধিক। কেন? ২০১৮ তে কে পূর্ব মেদিনীপুরের দলের নেতা ছিলেন? কারা ছিলেন সাংসদ? ওই অঞ্চলের পঞ্চায়েত প্রধান কে ঠিক করতেন তখন? উঠেছে সেই প্রশ্নই।
আরও পড়ুন-টাকা দিন, নয় জঙ্গলের অধিকার ছাড়ুন
শুভেন্দুর দুর্নীতি : রাজ্যে রাক্ষুসে-তল্লাশি চালাচ্ছে কেন্দ্রীয় অদন্তকারী সংস্থাগুলি। কিন্তু শুভেন্দু অধিকারীর মতো একজন দুর্নীতিগ্রস্তকে তারা রেহাই দিচ্ছে কোন যুক্তিতে? এই প্রশ্ন বারবারই তুলেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। এফআইআর-এ নাম থাকা শুভেন্দুর ব্যাপারে কেন্দ্রীয় এজেন্সি নীরব কেন? উত্তর চায় তৃণমূল কংগ্রেস। এসএসসি মামলায় অভিযুক্তের বাড়িতে দিলীপ ঘোষের বাড়ির দলিল কেন? প্রশ্ন উঠেছে সে নিয়েও।
বিচারে কেন পক্ষপাতিত্ব? তৃণমূল কংগ্রেস বিচারব্যবস্থার পূর্ণ স্বাধীনতার পক্ষে। কিন্তু শুভেন্দু অধিকারীর প্রতি বিচারপতি রাজাশেখর মান্থার পক্ষপাতিত্ব কেন? কোন যুক্তিতে তাঁকে গ্রেফতার না করার সুরক্ষা-কবচ? প্রশ্ন উঠেছে তা নিয়েও।
প্রাপ্য দিচ্ছে না কেন্দ্র : জিএসটি এবং অন্যান্য খাতে রাজ্য থেকে টাকা তুলছে কেন্দ্র। কিন্তু রাজ্যের পাওনা টাকা মেটাচ্ছে না কেন? কেন্দ্র রাজ্যের প্রাপ্য ৬০০০ কোটি টাকা না দেওয়ায় ১০০ দিনের কাজের মজুরি থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন মেহনতি মানুষ? কেন? জবাব চায় তৃণমূল। তবুও লক্ষ্মীর ভাণ্ডার সহ অজস্র সমাজকল্যাণ প্রকল্প নিজেদের টাকাতেই সফলভাবে চালিয়ে যাচ্ছে রাজ্য।
নাড্ডা জানেন না? নাড্ডা জানেন না শুভেন্দু অধিকারীর কীর্তি? সারদা-নারদা কাণ্ডে তাঁর বিরুদ্ধে এফআইআর-এ নাম থাকার কথা? এরপরেও কীভাবে একই মঞ্চে বসলেন তাঁর সঙ্গে? তৃণমূলের দাবি, এখনই কোটি কোটি টাকা দুর্নীতির কথা স্বীকার করে নিয়ে আত্মসমর্পণ করুক শুভেন্দু।