প্রতিবেদন : প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখা সংলগ্ন এলাকায় ফের বড় মাপের চিনা নির্মাণের ছবি ধরা পড়ল উপগ্রহ চিত্রে। উপগ্রহ চিত্রে ধরা পড়েছে চিন অধিকৃত তীব্বতে ব্রহ্মপুত্র নদ স্থানীয় ভাষায় যা ইয়ার লুং জ্যাম্বো নামে পরিচিত তার উপর বিশালাকার জলবিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র তৈরি করছে বেজিং। শুধু ইয়ার লুং জ্যাংবো নয়, ভারত, চিন ও নেপালের সীমান্তবর্তী এলাকায় গঙ্গার উপনদী মাবজা জাংবো নদীর উপরেও একটি বড়সড় বাঁধ নির্মাণ (China building dam close) করছে জিনপিং সরকার।
আমেরিকার ইন্টেল ল্যাবের ভূতত্ত্ব গবেষক ড্যামিয়েন সাইমন বৃহস্পতিবার এই ছবিগুলি প্রকাশ করেছেন। ওই গবেষক জানিয়েছেন, তিব্বতের বুরাং কাউন্টিতে মাবজা জাংবো নদীর উপর এই বাঁধ ও জলাধার নির্মাণের ছবি তোলা হয়েছে। যে এলাকায় ওই বাঁধ নির্মাণ করা হচ্ছে তার থেকে ঢিল ছোঁড়া দূরত্বেই উত্তরাখণ্ড। ভারত-নেপাল ও চিন— এই তিন দেশের সীমান্ত এলাকা থেকে মাত্র কয়েক কিলোমিটার দূরে প্রায় ৩৫০ থেকে ৪০০ মিটার দীর্ঘ এই বাঁধ তৈরি করছে বেজিং। আশঙ্কা করা হচ্ছে, ওই বাঁধ (China building dam close) সংলগ্ন এলাকায় বিমানবন্দরও তৈরি করবে তারা। বাঁধ নির্মাণের পাশাপাশি তিন দেশের সীমান্ত সংলগ্ন ওই এলাকায় লাল ফৌজের আনাগোনা বাড়ছে। তৈরি হচ্ছে সেনা ছাউনি।
আরও পড়ুন-সৌদি-অভিষেকের পর মেসিকে বার্তা রোনাল্ডোর
এই বাঁধ নির্মাণে প্রমাদ গুনছেন বিশেষজ্ঞরা। তাঁদের অনুমান, তিন দেশের সীমান্ত সংলগ্ন এলাকায় এই বিপুলাকৃতি বাঁধ তৈরি হলে মাবজা জাংবো নদীর গতিপথ অবরুদ্ধ হয়ে পড়বে। এই বাঁধের কারণে নিম্ন পার্বত্য এলাকায় একাধিক নদীর গতিপথ অবরুদ্ধ হয়ে যেতে পারে। যে কারণে নিম্ন অববাহিকায় দেখা দেবে বন্যা। তাছাড়া এই বাঁধ নির্মাণের মাধ্যমে সীমান্তে নিজেদের কর্তৃত্বও কায়েম করতে চাইছে বেজিং।
চিনের এই কর্মকাণ্ডের কথা জেনে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন পরিবেশবিদরা। তাঁরা বলেছেন, সমতলে ব্রহ্মপুত্রের গতিপথের বেশিরভাগটাই ভারতে। তাই নদীর উচ্চগতিতে কোনও পরিবর্তন করা হলে বা বাধা তৈরি হলে নিম্নগতিতে তার বড়সড় প্রভাব পড়বে। উচ্চগতিতে চিনের বাঁধ নির্মাণের কারণে ভারতে ব্রহ্মপুত্র উপত্যকায় বসবাসকারী মানুষ বিভিন্ন ধরনের সমস্যায় পড়তে পারেন। এমনকী, জলের অভাবে ব্রহ্মপুত্র উপত্যকায় তীব্র খরা দেখা দিতে পারে। সেক্ষেত্রে অসম ও অরুণাচল প্রদেশের একাংশে চাষবাস বন্ধ হয়ে যেতে পারে। উল্লেখ্য, ইয়ার লুং জ্যাম্বো অরুণাচল প্রদেশে প্রবেশের পর তার নাম হয়েছে সিয়াং। অসমে প্রবেশের পর সিয়াং পরিচিত হয়েছে ব্রহ্মপুত্র নামে।