প্রতিবেদন : কুৎসা, অপপ্রচার, মিথ্যাচার। এক কথায় এটাই ভরসা বিরোধীদের। এ যে শুধু কথার কথা নয়, বাস্তব তার প্রমাণ দিল আবাস যোজনা প্রকল্প। মূলত বিজেপি আর সিপিএমের অভিযোগ, আবাস যোজনায় (Awas Yojana) যাদের বাড়ি দেওয়া হয়েছে, তাদের নাকি পাকা বাড়ি, আবার কারও কারও গাড়িও আছে। একটি গ্রামে তদন্তে যেতেই আসল চিত্র বেরিয়ে এল। মিথ্যাচার আর কুৎসা কোন পর্যায়ে যেতে পারে তার উদাহরণ এই ঘটনা।
আরও পড়ুন: সংবিধানের মূল কাঠামো ধ্রুবতারার মতো, কেন্দ্রকে জবাব দেশের প্রধান বিচারপতির
কোচবিহার শহর থেকে ২৫ কিলোমিটার দূরে চান্দামারি গ্রামের ৫৫ নম্বর বুথ। এখানকার আবাস যোজনা (Awas Yojana) নিয়ে একরাশ অভিযোগ। আর বাস্তব চিত্র ঠিক বিপরীত।
সামসুর রহমান। মসজিদের গায়ে তাঁর বাড়ি। টিনের বেড়ার দুটি ঘর। মাটির দাওয়া। একটা টোটো। বিজেপি অভিযোগ করেছিল, সামসুরের পাকা বাড়ি আর গাড়ি আছে। সামসুর বলছেন, বাড়িতে ৯ জন লোক। দুটো ঘরে থাকি। ওই টোটোটাই তো সম্বল। ওটা চালিয়েই তো এতগুলো লোকের পেটে অন্ন ওঠে। সেই কারণেই তো আবাসে দরখাস্ত করেছি।
সামসুরের বাড়ি থেকে কিছুটা এগিয়ে আয়ুব আলির বাড়ি। বিজেপির অভিযোগ, আয়ুবের বাড়ি পাকা। আর বাস্তব হল, মাটির বাড়ি, টিনের বেড়া। স্ত্রী মেনকা বিবি বললেন, অনেক কষ্টে টিনের বেড়া দিয়েছি। পাকা বাড়ি হলে বেঁচে যাই।
উদাহরণ তিন, হজরত আলি। খুঁটি পাকা। কিন্তু টিনের ঘর। মাটির বারান্দাই রান্না ঘর। বিজেপির দাবি, হজরতের পাকা বাড়ি তো আছেই। গাড়িও আছে। সেসব শুনে হজরত বলছেন, একটা সাইকেলও কিনতে পারিনি। এরা সব বদনাম করছে। আমি তো ব্লক অফিসে গিয়ে বলেছি, কেন মিথ্যচার হচ্ছে? একটা সাইকেল নেই, গাড়ির কথা তো দূর অস্ত।
তৃণমূলের গ্রাম পঞ্চায়েত সদস্য মহেন্দ্র বর্মন চান্দামারি পঞ্চায়েতের উপপ্রধান। অভিযোগ থেকে তিনিও বাদ নন। তাঁরও কাঁচা বাড়ি। কিন্তু জনপ্রতিনিধি হয়ে পাকা বাড়ির সুযোগ নেবেন না, স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন। আরও উদাহরণ দেওয়া যায়। লজ্জা পাবেন বিজেপির নেতারা। তারা কী বলছেন? পালাতে পারলে বাঁচেন গোছের উত্তর। স্থানীয় নেতৃত্ব যে তালিকা দিয়েছে, তার ভিত্তিতেই বলা হয়েছে। প্রশাসন তদন্ত করুক। তৃণমূলের কোচবিহারের জেলা চেয়ারম্যান গিরীন্দ্রনাথ বর্মন বলছেন, তৃণমূলের বিরোধিতা করতে গিয়ে মিথ্যচার শুরু করেছে বিজেপি। আর সেই মিথ্যচারই প্রচারে আনছে। গ্রামের মানুষকে বঞ্চিত করছে।
দু-একটি ঘটনা ব্যতিরেখে এই মিথ্যাচার সর্বত্র চলছে। দরকার কোচবিহারের চান্দামারির মতো বিষয়টি প্রকাশ্যে আনা। মুখোশ খুলে যাবে বিজেপির।