সংবাদদাতা, কাটোয়া : কচুরিপানা থেকে শিল্পসামগ্রী তৈরির সরকারি অনুমোদন মিলল। রাজ্যে প্রথম নাদনঘাটে এই প্রকল্পটি তৈরির জন্য রাজ্যের ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প এবং বস্ত্র দফতর ৪৬ লক্ষ ৮৬ হাজার টাকা বরাদ্দ করেছে। কাল, ২ ফেব্রুয়ারি বর্ধমান সফরে এসে মুখ্যমন্ত্রী এই প্রকল্পের আনুষ্ঠানিক সূচনা করবেন। ভবিষ্যতে সব জেলাতেই এই ধরনের শিল্প তৈরির পরিকল্পনা রয়েছে খাদি ও গ্রামীণ শিল্প পর্ষদের।
আরও পড়ুন-মেজাজ হারিয়ে ভুল করেছি, নেদারল্যান্ডস ম্যাচের আচরণে অনুতপ্ত মেসি
কচুরিপানাকে যে শিল্পে উন্নীত করা যায়, এই ভাবনা এলাকার মন্ত্রী স্বপন দেবনাথের। রাজ্যের স্বীকৃতি ও অর্থসাহায্য মেলার মঙ্গলবার বাঁশদহ বিলের গায়ে ম্যারাপ বেঁধে সকলকে নিয়ে বিজয় উৎসব পালন করেন মন্ত্রী। বলেন, ‘‘জলাশয় থেকে কচুরিপানা সাফ করার জন্য সাধ্যসাধনা করতে হয়। পয়সা দিয়েও মজুর মেলে না। কিন্তু এমন একদিন আসবে, যেদিন কচুরিপানা কেনার জন্য জলাশয়ের মালিকদের বাড়ির সামনে লাইন পড়ে যাবে।’’ কচুরিপানা শুকিয়ে ট্রে, ফুলের সাজি, ফলের ঝুড়ি, ব্যাগ, ফুলদানি-সহ ঘর সাজানোর নানা জিনিস তৈরি হবে। মন্ত্রী বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী বরাবরই ক্ষুদ্র ও কুটিরশিল্পকে গুরুত্ব দেন। আমি নিশ্চিত, এই শিল্পে প্রচুর কর্মসংস্থান হবে।’’
আরও পড়ুন-তিতাসদের নিয়ে উচ্ছ্বসিত সৌরভ
নাদনঘাটে পরিকাঠামো তৈরির জন্য তিনি নিমতলায় ২ কাঠা জমির ব্যবস্থা করেছেন। সেখানে উৎপাদন ও বিপণনের আলাদা ব্যবস্থা থাকবে। শিল্পসামগ্রী তৈরির জন্য তৈরি রয়েছে ‘খালবিল ওয়েলফেয়ার সোসাইটি’। স্বনির্ভর গোষ্ঠীর ২০ জন মহিলাকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। ঝাড়গ্রাম ও বিশ্বভারতী থেকে ডিজাইনার আনা হবে। নাদনঘাটের বড়কোবলা মধ্যপাড়ার রাজু বাগ ও তাঁর মা মিনতি বাগ কচুরিপানা দিয়ে ঝুড়ি, ম্যাট, ব্যাগ ও ঘর সাজানোর নানা উপকরণ গড়ে প্রথম নজর কাড়েন মন্ত্রীর।
আরও পড়ুন-হৃষীকেশের আশ্রমে বিরাট
বিশ্বভারতী থেকে ক্র্যাফট ডিজাইন পাশের বিদ্যে কাজে লাগান রাজু। মন্ত্রীর কথায়, ‘‘কচুরিপানা দিয়ে যে সুন্দর শিল্পকর্ম হতে পারে না দেখলে বিশ্বাস হত না।’’ এর জন্য নাদনঘাটকে বাছার কারণ, এলাকাতেই রয়েছে ১০০ একর জায়গা জুড়ে দুটি বিশাল জলাশয় বাঁশদহ ও চাঁদের বিল। সেখানে কচুরিপানার অভাব নেই। বিল থেকে কচুরিপানা সরিয়ে মাছ চাষে সুবিধা হবে, জলাশয় পরিষ্কার থাকবে। আর কচুরিপানা তুলে শুকিয়ে শিল্পকর্ম তৈরি হবে।