অনন্ত গুছাইত, নয়াদিল্লি : দশ মাসের চলমান আন্দোলনে এখনো পর্যন্ত মৃত্যু হয়েছে ৫৩৭ জন কৃষকের। সরকারের ঘুম ভাঙ্গেনি। তাই এবার আন্দোলনের আর একটা ধাপ। সংযুক্ত কিষান মোর্চার ডাকে সোমবার ১২ ঘণ্টার ভারত বনধের ব্যাপক প্রভাব পড়েছে পাঞ্জাব, হরিয়ানা, উত্তরপ্রদেশ, দিল্লি,উত্তরাখণ্ড, ঝাড়খণ্ড, কেরলে।পাঞ্জাবের অন্তত ৩৫০ টি জায়গায় রেল ও পথ অবরোধ করে বনধের সমর্থকরা। হরিয়ানার একমাত্র জিন্ড জেলাতেই রাস্তা রেল অবরোধ করে কৃষকরা। দেড় কিলোমিটার রাস্তাজুড়ে যানজট তৈরি হয় দিল্লি- গুরুগ্রাম সড়কে। পাঞ্জাব ও হরিয়ানা দিয়ে চলাচল করা ১৪টি ট্রেন বাতিল করে দিতে হয়েছে।বেশ কিছু ট্রেন মাঝপথেই থামিয়ে দিতে হয়।
উল্লেখ্য, দশ মাস কেটে গিয়েছে কৃষক আন্দোলনের। এখনও কৃষি আইন প্রত্যাহারের দাবিতেই অনড় আন্দোলনকারী কৃষকরা। বিল প্রত্যাহারের দাবিতেই সকাল ৬টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত সারা দেশ জুড়ে বনধের ডাক দিয়েছিলো ৪০টি কৃষক সংগঠনের সংযুক্ত কিসান মোর্চা। মোর্চার পক্ষ থেকে বনধের সময় কেন্দ্রীয় ও রাজ্য সরকারের স্কুল, অফিস, বাজার, কারখানা সহ সমস্ত প্রতিষ্ঠানই এবং সরকারি ও বেসরকারি যানবাহনও চলাচল বন্ধ রাখার আবেদন জানানো হয়েছিল।
আরও পড়ুন : ভাঙন-রোধে মেলেনি রেলের সাড়া
এদিন বনধ মোটামুটি শান্তিপূর্নভাবে কাটলেও তামিলনাড়ুতে বনধ ঘিরে পুলিশের সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের সংঘর্ষ হয়।
চেন্নাইয়ের আন্না সালাই এলাকায় বনধ সমর্থকরা পুলিশি ব্যারিকেড ভেঙে এগোনোর চেষ্টা করে। এরপরই পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ হয়। ভারত বনধের প্রভাব পড়তে দেখা গেছে রাজধানীতেও। গুরুগ্রাম-দিল্লি সীমানায় দেখা গেছে দেড় কিলোমিটার জুড়ে ব্যাপক যানজট। এছাড়াও, নাশকতার আশঙ্কায় দিল্লি পুলিশ ও আধা সমরিক বহিনির জওয়ানরা গাড়ি চেকিং করায় এবং বনধের সমর্থকরা পথ অবরোধ করায় রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় যানজটের সৃষ্টি হয়। সকালে দিল্লির যন্তর মন্তরে বিভিন্ন রাজ্য থেকে কৃষক সংগঠনের নেতারা বনধের সমর্থনে সভা করেন। কর্নাটকেও কৃষকদের সমর্থনে পথে নামে একাধিক সংগঠন। বনধের সমর্থনে কর্নাটকের একাধিক সংগঠন ব্যাঙ্গালোরে কালাবুর্গি সেন্ট্রাল বাস স্ট্যান্ডের সামনে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করে।
এদিন ভোরেই বন্ধ করে দেওয়া হয় পঞ্জাব-হরিয়ানা সীমানার শম্ভু সীমান্ত। গাজিপুর সীমান্তে বিশাল সমাবেশ হয় কৃষকদের। বনধের জেরে অশান্তির আশঙ্কায় উত্তর প্রদেশ থেকে গাজিপুরগামী সমস্ত যানপরিবহন বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। হরিয়ানার কুরুক্ষেত্রে আন্দোলনকারীরা দিল্লি-অমৃতসর জাতীয় সড়ক বন্ধ করে দেয়।দক্ষিণের রাজ্য কেরলে বনধ ছিলো সর্বাত্মক। তবে মহারাষ্ট্রের মুম্বাইতে বনধের বিশেষ প্রভাব দেখা যায়নি। উল্লেখ্য, কৃষকদের সমর্থনে বিরোধী দলগুলি, বিভিন্ন ট্রেড ইউনিয়ন, কৃষক সংগঠন, সামাজিক সংগঠন , শিক্ষক ও ছাত্র সংগঠন সহ প্রায় ৩০০ টি সংগঠন ভারত বনধে সমর্থন জানিয়েছিল।