সংবাদদাতা, দুর্গাপুর : মানুষের জীবনের চেয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে অনৈতিক উপায়ে লাভের অঙ্ক বাড়িয়ে চলা যে অনেক বেশি প্রাধান্য পায় তার আরও একবার হাতে গরম প্রমাণ পাওয়া গেল বুধবার সকালে। কিছুদিন আগেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেছিলেন, উত্তরাখণ্ডের জোশীমঠের মতো রানিগঞ্জ খনি অঞ্চলেও যে কোনওদিন নামতে পারে ভয়াবহ ধস। প্রাণ যেতে পারে প্রায় ২৫ থেকে ৩০ হাজার মানুষের। মুখ্যমন্ত্রীর সেই আশঙ্কা যে কতখানি সত্যি এদিন অন্ডাল (Andal- Land Slide) ব্লকের মুকুন্দপুর গ্রাম সংলগ্ন এলাকায় হঠাৎ সৃষ্টি হওয়া এক বিশাল ধসের ঘটনায় তা আরও একবার প্রমাণ হয়ে গেল। প্রায় দশ-বারো ফুট ব্যাসার্ধ জুড়ে একটি কুয়োর সৃষ্টি হয় এখানে। এবং সেই গভীর সেই কুয়োর মুখ থেকে গল গল করে বেরিয়ে আসছে কালো ধোঁয়া। ফলে আতঙ্কে ঘরবাড়ি ছেড়ে একটি ফাঁকা মাঠে এসে জড়ো হয়েছেন গ্রামবাসীদের অনেকেই। উল্লেখ্য, মাত্র সপ্তাহখানেক আগেই অন্ডালের (Andal- Land Slide) ধান্ডাডিহি গ্রামে বিশাল এলাকা জুড়ে ধসের ঘটনা ঘটে। এদিনের এই ধসের ব্যাপারে স্থানীয় তৃণমূল নেতা রূপেশ যাদব বলেন, ‘‘মধুসূদনপুর ৪ নম্বর পিটের একটি পরিত্যক্ত খনি ফের চালু করার উদ্যোগ শুরু করেছে ইসিএল কর্তৃপক্ষ। সেই প্রয়োজনেই যেখানে ধস নেমেছে তার খুব কাছেই বোরিং করে মাটির নিচ থেকে পাম্পের সাহায্যে ভূগর্ভস্থ জল তুলে নেওয়া হচ্ছে। মাটির নিচ থেকে জল তুলে নেওয়ার ফলেই যেখানে সেখানে নামছে ভয়াবহ ধসের ঘটনা। তিনি বলেন, অতীতে মাটির তলায় তলিয়ে গিয়ে বেশ কিছু মানুষের মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে। তারপরও হুঁশ ফেরেনি ইসিএল কর্তৃপক্ষের। সংস্থা অতিরিক্ত মুনাফার জন্য অনুমোদিত পরিমাণের অনেক বেশি কয়লা তুলে নিচ্ছে, অথচ মাটির নিচের শূন্যস্থান ঠিকমতো বালি প্যাকিং করছে না। এরপর কোনও মানুষের কোনওরকম ক্ষতি হলে তার দায় ইসিএলকে নিতে হবে।” স্থানীয় বাসিন্দা শ্রীমন্ত কোঁড়া বলেন, এই গ্রামে প্রায় শ’দুয়েক পরিবারে কম করেও হাজার দেড়েক মানুষের বাস। গ্রামবাসীরা এরপর রাত্রে নিশ্চিন্তে বাড়িতে ঘুমোতে পর্যন্ত পারবেন না। ঘটনার কথা ইসিএল-এর এজেন্টকে জানানো হয়েছে। তিনি বিষয়টিতে কোনওরকম গুরুত্বই দিতে চাননি। অবিলম্বে যুদ্ধকালীন তৎপরতায় বিকল্প ব্যবস্থা না করলে ইসিএলের বিরুদ্ধে তীব্র আন্দোলনে নামার হুমকি দিয়েছেন গ্রামবাসীরা।