অনুপম সাহা, দিনহাটা: এই ভাবে কাছে টেনে নেওয়া, মা বলে সম্বোধন করা, রুমাল বের করে চোখের জল মুছিয়ে দেওয়া। আমাদের পাশে এভাবে কেউ কোনওদিন দাঁড়াবে স্বপ্নেও ভাবতে পারিনি। আবেগপ্রবণ হয়ে চোখের জল মুছতে মুছতে একথা বললেন নিহত রাজবংশী যুবক প্রেমকুমার বর্মনের (Premkumar Barman) মা সুখমণি বর্মন।
প্রসঙ্গত, বাবা অসুস্থ থাকার কারণে আর্থিক উপার্জন না করতে পারায় ভিন রাজ্যে কাজ করে সেই উপার্জনের টাকা দিয়ে পরিবারের দায়িত্ব নিজের কাঁধে তুলে নিয়েছিলেন প্রেমকুমার বর্মন (Premkumar Barman)। কয়েকদিনের জন্য বাড়িতে ঘুরতে এসে গত ২৪ ডিসেম্বর দিনহাটা মহকুমার গীতালদহ-২ গ্রাম পঞ্চায়েতের ভারবান্ধা গ্রামে বিএসএফের গুলিতে মৃত্যু হয় ২৩ বছরের রাজবংশী যুবক প্রেমকুমার বর্মনের। সংসার সেভাবে না চললেও নির্মম এই ঘটনায় যুক্ত বিএসএফের শাস্তির দাবি করেন প্রেমকুমার বর্মনের পরিবার। গত শনিবার মাথাভাঙা কলেজের মাঠে জনসভায় সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় সভামঞ্চে ডেকে নেন বিএসএফের গুলিতে নিহত যুবক প্রেমকুমার বর্মনের মা সুখমণি বর্মন, বাবা শিবেন বর্মন, দাদার সুকুমার বর্মনকে। সেই সভামঞ্চে দাঁড়িয়েই অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় (Abhishek Banerjee) বলেন, “আপনারা চিন্তা করবেন না। আমি আছি, একদম এর শেষ দেখে ছাড়ব৷ যে গুলি চালিয়েছে তার মাথায় যদি ভারতবর্ষের প্রধানমন্ত্রীরও হাত থেকে আমি এর শেষ দেখে ছাড়ব। ভারতবর্ষের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীরও হাত থেকে আমি এর শেষ দেখে ছাড়ব।” সুখমণি বর্মন বলেন, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় আমার পাশে থাকার আশ্বাস দিয়েছেন। আমাদের ছেলে চোরাচালানকারী নয়, গরু পাচারকারী নয়, তার কাছ থেকে কিছুই পায়নি বিএসএফ। যারা গুলি করে ছেলেকে হত্যা করল তাদের কঠোর শাস্তি চাই।
উল্লেখ্য, ১৮০ বুলেটে ঝাঁঝরা হয়ে গিয়েছে প্রেমকুমারের দেহ। রবিবার এআইটিসির সোশ্যাল মিডিয়ার পেজে ময়নাতদন্তের এই রিপোর্টও প্রকাশ করা হয়েছে। পাশাপাশি, এলাকার বিজেপির মন্ত্রী, সাংসদদের প্রতি তীব্র ক্ষোভ উগরে দেওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন-সুকান্ত মেনে নিলেন পঞ্চায়েতে সব কেন্দ্রে বিজেপি প্রার্থী দিতে পারবে না