নয়াদিল্লি : ডিসেম্বরে ভোট মেটার পর অবশেষে ফেব্রুয়ারিতে এসে মেয়র পেল রাজধানী। দিল্লির নতুন মেয়র আম আদমি পার্টির শেলি ওবেরয় (Shelly Oberoi- Delhi Mayor)। বিজেপিকে বড় ধাক্কা দিয়ে মেয়র নির্বাচনে জয় ছিনিয়ে নিল আম আদমি পার্টি (AAP)। কার্যত দিল্লির বুকে ইতিহাস সৃষ্টি করে রাজধানী পেল প্রথম মহিলা মহানাগরিক। দিল্লি পুরসভা গঠনের পর এই প্রথম মেয়র পদে আসীন হলেন কোনও মহিলা। তিন-তিনবারের ব্যর্থ প্রচেষ্টার পর অবশেষে চতুর্থবারের চেষ্টায় অরবিন্দ কেজরিওয়ালের দল আম আদমি পার্টি ঘোষণা করল দিল্লির নতুন মেয়রের নাম। দিল্লির মেয়র নির্বাচনে এদিন ভোট দেন ২৬৬ জন নির্বাচিত কাউন্সিলর। তার মধ্যে ১৫০টি ভোট পেয়ে জয়লাভ করেন আম আদমি পার্টির মেয়র প্রার্থী শেলি ওবেরয়। অন্যদিকে বিজেপির মেয়র পদপ্রার্থী রেখা গুপ্তা ১১৬টি ভোট পেয়েছেন। শেলি ওবেরয় দিল্লির প্যাটেলনগর বিধানসভার ওয়ার্ড নম্বর ৮৬ থেকে নির্বাচিত কাউন্সিলর। পেশায় শিক্ষক। দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল জনতার জয় বলে উল্লেখ করেছেন এই সাফল্যকে। সঙ্গে তিনি ট্যুইটারে লিখেছেন, ‘গুন্ডারা হেরেছে।’
এদিকে আপের তরফে শেলি ওবেরয়কে (Shelly Oberoi- Delhi Mayor) দিল্লির মেয়র হিসেবে ঘোষণা করেন উপমুখ্যমন্ত্রী মণীশ সিসোদিয়া। তিনি ট্যুইটারে লেখেন, দিল্লির জনতার কাছে গুন্ডাদের পরাজয় হয়েছে। দিল্লি পুরসভার মানুষ পেলেন আপের মেয়র। আম আদমি পার্টির প্রত্যেক সদস্যকে আমার শুভেচ্ছা। কারণ দিল্লি পুরসভার মেয়র নির্বাচিত হয়েছেন আমাদের প্রার্থী। এ জন্য দিল্লির মানুষ এবং আপ কর্মীদের শুভেচ্ছা জানাচ্ছি। টানা তিনবারের অসফল চেষ্টার পর তাঁর জয়ের খবর পেয়ে দিল্লির নতুন মহানাগরিক শেলি বললেন, ‘‘ভারত মাতাকি জয়।’’
আরও পড়ুন: এবছর খুব দ্রুত শুরু হবে তাপপ্রবাহ
প্রসঙ্গত, গত বছরের ডিসেম্বরে দিল্লি পুরসভার ভোট হয়। তার পর থেকে তিনবার মেয়র নির্বাচনের প্রক্রিয়া শুরু হলেও প্রতিবারই তা ভেস্তে যায় বিজেপি এবং আপের সমর্থকদের মধ্যে ঝামেলার ফলে। মামলা গড়ায় সুপ্রিম কোর্ট পর্যন্ত। শেষে শীর্ষ আদালত রায় দেয়, উপরাজ্যপাল মনোনীত সদস্যদের মেয়র নির্বাচনের ক্ষেত্রে ভোটাধিকার থাকবে না। মেয়র বাছাই হবে কেবলমাত্র পুর নির্বাচনে জয়ীদের ভোটের উপর ভিত্তি করেই। এর পরেই ভোট হয় এবং তাতে জয়ী হন আম আদমি পার্টির প্রার্থী এবং কাউন্সিলর শেলি ওবেরয়। দিল্লির পুর নির্বাচনে বিজেপির ১৫ বছরের রাজত্বের অবসান ঘটিয়ে জয় ছিনিয়ে নিয়েছিল অরবিন্দ কেজরিওয়ালের পার্টি। নির্বাচনে জিতলেও ঝুলেই ছিল দিল্লি পুরসভার মেয়র ও ডেপুটি মেয়র নির্বাচন প্রক্রিয়া। মূল সমস্যা ছিল দিল্লির উপরাজ্যপাল নির্বাচিত অল্ডারম্যান।
পুর নির্বাচনে সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেলেও দিল্লি পুরসভার মেয়র নির্বাচনের পদ্ধতিটা একটু জটিল, বিশেষ করে অল্ডারম্যান নিয়োগের পদ্ধতি। পুর নির্বাচনের পরে দিল্লির লেফটেন্যান্ট গভর্নর ভি কে সাক্সেনা দিল্লির নির্বাচিত সরকারকে উপেক্ষা করে একতরফা ভাবে ১০ জন অল্ডারম্যান নিয়োগ করে মেয়র নির্বাচনে তাঁদের ভোটাধিকার দিয়েছিলেন বলে অভিযোগ ওঠে। পরে শীর্ষ আদালতের মধ্যস্থতায় সমস্যার সমাধান হয়। রাজধানী পায় প্রথম মহিলা মেয়র।