প্রতিবেদন : পাঁচ জেলায় বাঁধভাঙা বৃষ্টি৷ কোথাও টানা ২৪ ঘণ্টায় বৃষ্টি হয়েছে ৩৫০ মিলিমিটারেরও বেশি৷ আবার কোথাও ডিভিসির ছাড়া জলে ভেসে গিয়েছে এলাকা৷ সাম্প্রতিক অতীতে বৃষ্টি এবং জল ছাড়ার কারণে একের পর এক জেলার জলমগ্ন হওয়ার ঘটনা বাস্তবিকই ব্যতিক্রমী৷ কোথাও বাঁধ ভেঙেছে, কোথাও সেতু ভেঙেছে, কোথাও জলের তলায় বসতবাড়ি৷ বৃষ্টির জল তো ছিলই, তার সঙ্গে যোগ হয়েছে ঝাড়খণ্ড থেকে দামোদর ভ্যালি কর্পোরেশনের ছাড়া জলে জেলার পর জেলায় হাহাকারের ঘটনা৷ যা নিয়ে ক্ষুব্ধ মুখ্যমন্ত্রী কোনওরকম রাখঢাক না করেই তোপ দেগে বলেছেন, কতবার বলেছি না বলে জল ছাড়বেন না৷ বলে বলে ক্লান্ত ও হতাশ হয়ে গিয়েছি৷ না জানিয়ে রাত ৩টের সময় যদি জল ছেড়ে দেয় তা হলে তো মানুষ ঘুমন্ত অবস্থাতেই ভেসে যাবে৷ এটা পাপ, এটা অপরাধ৷ ঝাড়খণ্ডের বোঝা আমরা কেন নেব? এটা ম্যানমেড বন্যা৷
ঘুম নেই প্রশাসনের
ডিভিসির ছাড়া জলে ম্যানমেড বন্যার পরিস্থিতি তৈরি হতেই মুখ্যমন্ত্রীর এই বিবৃতি৷ এর পরেই মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদী ঝাড়খণ্ডের মুখ্যমন্ত্রীকে ফোন করে তীব্র অসন্তোষ প্রকাশ করেন৷ আজ শনিবার মুখ্যমন্ত্রী আকাশপথে জেলাগুলির বাস্তবিক পরিস্থিতি খতিয়ে দেখবেন৷ ইতিমধ্যে প্রশাসন যুদ্ধকালীন প্রস্তুতিতে ঝাঁপিয়ে পড়েছে উদ্ধারকাজে৷ নেমেছে সেনা৷ সঙ্গে রয়েছে এনডিআরএফ, এসডিআরএফ৷ আধিকারিকদের নির্দেশ, সবরকমভাবে মানুষের পাশে দাঁড়াতে হবে৷ জলমগ্ন এলাকায় বেবি ফুড, পানীয় জল, শুকনো খাবার, ওষুধপত্র পাঠানো হচ্ছে৷ জেলা ভাগ করে দিয়ে মন্ত্রীদের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে৷ জলমগ্ন এলাকায় গিয়ে কাজ তদারকির নির্দেশ দেওয়া হয়েছে৷
বৃষ্টি আর কতদিন?
আরও পড়ুন : ডিভিসির জলে ভাসল দক্ষিণবঙ্গ, উদ্ধারে নামানো হল সেনা
জেলাগুলিতে বৃষ্টি থেমে গেলেও ঝাড়খণ্ড ও বিহারে নিম্নচাপ রয়েছে৷ শুক্রবার সেটি শক্তি হারিয়ে ঘূর্ণাবর্ত হবে৷ ফলে শনিবার থেকে টানা বৃষ্টি হবে উত্তরবঙ্গে৷ রবিবার সন্ধ্যায় এসে তা কমবে৷ দিল্লির মৌসম ভবন জানিয়েছে, পুজোর আগেই বর্ষা বিদায় নেবে৷ ফি বছর সেপ্টেম্বরের মাঝ মধ্যিখানে বর্ষা সাধারণত বিদায় নেয়৷ এবার তিন সপ্তাহ বেশি রইল৷ এবং ধ্বংসাত্মক মেজাজে৷ শুধু কলকাতাতেই এবার ৩১ শতাংশ বেশি বৃষ্টি হয়েছে৷
ত্রাণ তহবিলে সাহায্য করুন
ম্যানমেড বন্যা৷ সৌজন্যে ঝাড়খণ্ড৷ তবু এতটুকু সময় নষ্ট করতে চান না মুখ্যমন্ত্রী৷ প্রচুর ক্ষতি জেলায় জেলায়৷ ২২ লক্ষ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত৷ ১ লক্ষের বেশি বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত৷ ৪ লক্ষ মানুষকে নিরাপদ স্থানে সরানো হয়েছে৷ ত্রাণশিবিরে রয়েছেন ২ লক্ষ মানুষ৷ মৃত ২৷ শুধু সরকারি উদ্যোগে সামাল দেওয়া মুশকিল৷ কেন্দ্রের থেকে সাহায্য পাওয়া দুষ্কর৷ তাই আবেদন, মুখ্যমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলে সাহায্য করুন৷ এটা পিএম কেয়ার ফান্ডের মতো নয়, এটা সরকারি ফান্ড৷ জমা অর্থ বিপর্যয়ে খরচ হয়৷ অডিটও হয়৷