প্রতিবেদন : দেশের জ্বলন্ত ইস্যুগুলি থেকে মানুষের নজর ঘোরাতে জি-২০ প্রেসিডেন্সিকে (G20 Presidency) ঢাল করতে চাইছে মোদি সরকার (Modi Government)। কেন্দ্রের এই কৌশল তুলে ধরে বিবৃতি জারি করল নাগরিক সমাজ। বিবৃতিতে স্বাক্ষর করেছেন সমাজের বিভিন্ন স্তরের ১১৪ জন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিত্ব। এর মধ্যে আছেন প্রাক্তন আমলা, সাংসদ, সমাজকর্মী, শ্রমিক সংগঠক ও বিভিন্ন পেশার বিশিষ্টরা। বলা হয়েছে, দেশের ক্রমবর্ধমান সামাজিক অসাম্য, দারিদ্র, অপুষ্টি, জলবায়ু পরিবর্তনের মতো বিষয়গুলি সম্পর্কে পদক্ষেপ না করে কেন্দ্রীয় সরকার জি-২০ নিয়ে প্রচার করে রাজনৈতিক ফায়দা লুঠতে চাইছে। রুটিনমাফিক জি-২০-র প্রেসিডেন্সি (G20 Presidency) প্রাপ্তিকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির (PM Narendra Modi) কৃতিত্ব হিসেবে তুলে ধরে নির্বাচনী সাফল্যলাভের হাতিয়ার করতে চাইছে বিজেপি। মঙ্গলবার যখন দিল্লিতে শুরু হয়েছে জি-২০ গোষ্ঠীর বিদেশমন্ত্রীদের বৈঠক, সেদিনই এই বিবৃতি প্রকাশ বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ।
মোদি সরকারের ভূমিকার সমালোচনা করে এই বিবৃতিতে স্বাক্ষর করেছেন তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্যসভার সাংসদ তথা প্রাক্তন আমলা জহর সরকার, প্রাক্তন আমলা অভয় শুক্লা, সমাজকর্মী তিস্তা শীতলাবাদ ও মেধা পাটেকরের মতো ব্যক্তিত্ব। তাঁদের বক্তব্য, যেভাবে উজ্জ্বল ভারতের ছবি তুলে ধরে জি-২০ বৈঠকগুলি আয়োজন করা হচ্ছে তা দেশের বর্তমান পরিস্থিতির সঙ্গে আদৌ সাজুয্যপূর্ণ নয়। প্রায় সমস্ত সামাজিক সূচকেই ভারতের অবস্থা ভয়ঙ্কর। অথচ করদাতাদের টাকায় বৈভবের ছবি তুলে ধরা হচ্ছে। সৌন্দর্যায়নের নামে দেশের বিভিন্ন শহরে জি-২০ বৈঠকের প্রস্তুতি হিসেবে গৃহহারা মানুষদের উৎখাত করে বহুদূরে পাঠিয়ে দিয়েছে সরকার। রাস্তার হকার ও ছোট দোকানদারদের তুলে দেওয়ায় তাঁদের জীবিকা বিপন্ন। সংখ্যালঘুদের উপর লাগাতার আক্রমণ, স্বশাসিত সংস্থাগুলিকে অকেজো করে দেওয়ার মাধ্যমে নাগরিক সমাজকে ধ্বংস করে দিতে চাইছে এই সরকার। বিশিষ্টদের বক্তব্য, ফ্যাসিবাদের উত্থানে কেন নীরবতা, তা নিয়ে জি-২০ মঞ্চে প্রশ্ন ওঠা দরকার। দেশের নাগরিক সমাজ, পড়ুয়া, যুবসম্প্রদায় ও শ্রমিক সংগঠনের প্রতিনিধিদের কেন্দ্রীয় সরকারের চমকের ফাঁদে পা না দিয়ে দেশের সার্বিক উন্নয়ন নিয়ে লড়াই করা উচিত।