প্রয়াত সাহিত্যিক ষষ্ঠীপদ চট্টোপাধ্যায়। বাঙালি পাঠকের শৈশবের রোমাঞ্চের সঙ্গী খুদে পাঁচ গোয়েন্দা, সাহিত্যে তাঁদের পথ চলা শুরু করেছিলেন সাহিত্যিক ষষ্ঠীপদ চট্টোপাধ্যাইয়ের (Sasthipada Chatterjee) কলম ধরে। ১৯৮১ সালে তাঁর সৃষ্ট পাণ্ডব গোয়েন্দার কাহিনি সর্বাধিক জনপ্রিয়তা দেয় সাহিত্যিকে। দুর্গম পাহাড় থেকে শুরু করে বুদ্ধির ভেলকি দিয়ে রহস্যের সমাধান করে বাঙালি মননে বাবলু, বাচ্চু , বিলু, ভোম্বল, বিচ্চু এবং পঞ্চু পাকাপাকি জায়গা করে নিয়েছে। কিশোরদের এই রহস্য উন্মোচনের নেশা বাঙালিকে পাণ্ডব গোয়েন্দার প্রেমে পড়তে বাধ্য করেছে। কিন্তু এবার সব শেষ। শুক্রবার সকাল ১১ নাগাদ হাওড়ার নার্সিংহোমে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করলেন বিশিষ্ট সাহিত্যিক ষষ্ঠীপদ চট্টোপাধ্যায় (Sasthipada Chatterjee)। মৃত্যুকালে বয়স হয়েছিল ৮২ বছর। তাঁর মৃত্যুতে শোকপ্রকাশ করেছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
শোকবার্তায় মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “তাঁর প্রয়াণ সাহিত্য জগতের এক অপূরণীয় ক্ষতি। আমি ষষ্ঠীপদ চট্টোপাধ্যায়ের পরিবার-পরিজন ও অনুরাগীদের আন্তরিক সমবেদনা জানাচ্ছি।”
অজস্র রহস্য-রোমাঞ্চ কাহিনি, ভৌতিক গল্প, ভ্রমণ কাহিনীর স্রষ্টা সাহিত্যিক ষষ্ঠীপদ চট্টোপাধ্যায়। ১৩৪৭ বঙ্গাব্দে হাওড়া জেলার খুরুট ষষ্ঠীতলায় জন্মগ্রহণ করেন লেখক। কিশোর বয়েস থেকেই তাঁর সাহিত্যসাধনা শুরু হয়। ছোটবেলা থেকেই অ্যাডভেঞ্চার প্রিয় ছিলেন, বিভিন্ন জায়গায় সাধু-সন্ন্যাসীর সঙ্গ করেছেন তিনি। তাঁর গল্প উপন্যাসে ভ্রমণের প্রতি তাঁর ভালবাসার ছাপ পাওয়া যায়।
বর্তমানে হাওড়ার রামরাজাতলাতে নিজ বাসভবনে থাকতেন এই সাহিত্যিক।পাণ্ডব গোয়েন্দা ছাড়াও প্রাইভেট ডিটেকটিভ অম্বর চ্যাটার্জী, কিশোর গোয়েন্দা তাতার এর অভিযান ইত্যাদি সিরিজ গোয়েন্দা কাহিনী রচনা করেছেন। তাঁর রচিত ‘চতুর্থ তদন্ত’, ‘সোনার গণপতি হীরের চোখ’, ‘হিমালয়ের নয় দেবী’,’কাকাহিগড় অভিযান’ কিশোর পাঠকদের কাছে আজও জনপ্রিয়। বেশ কিছুদিন ধরে শারীরিক অসুস্থতায় ভুগছিলেন সাহিত্যিক। স্ট্রোকে আ*ক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন তিনি। বৃহস্পতিবার রাত থেকেই তাঁর শারীরিক অবস্থার অবনতি হতে শুরু করে। শুক্রবার সকালে সেখানেই শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। শোকের ছায়া সাহিত্য মহলে।