সংবাদদাতা, কাটোয়া : বাঁচার তাগিদে হাতে তুলে নিয়েছেন আঁকার সরঞ্জাম। রাস্তায় কাঠকয়লা, চক, ইটের টুকরো দিয়ে আঁকছেন ছবি। দেখে তারিফ ঝরছে পথচারীদের মুখে-চোখে। কাটোয়া স্টেশন লাগোয়া রাজপথে ওই ভবঘুরে শিল্পী শুধু ছবিই আঁকেন না, কাব্যকথায় নানা উপদেশও ফুটিয়ে তোলেন। কখনও তাতে গভীর দর্শনের ইঙ্গিত। যেমন— এমন জীবন তুমি করিবে গঠন,/ মরিলে হাসিবে তুমি, কাঁদিবে ভুবন।
আরও পড়ুন-আরসিবিতে আজ ‘হল অফ ফেম’ এবি ও গেইল, বিকেলে স্টেডিয়ামে ‘আনবক্স‘
রোগাপাতলা চেহারা। পরনে মলিন লুঙ্গি-গেঞ্জি। মাথা থেকে গলা অবধি চাদর জড়ানো। মুখে মাস্ক। আঁকার সরঞ্জাম ততোধিক মলিন পোঁটলায় বাঁধা। কথা বলতে না পারলেও তাঁর ছবি বাঙ্ময়। ছবির পাশেই গোটা গোটা অক্ষরে লেখা, অনিল অধিকারী, মেদিনীপুর। তাঁর ছবির সঙ্গে পিংলার পটচিত্রের যথেষ্ট সাযুজ্য রয়েছে, দাবি কাটোয়ার বিশিষ্ট শিল্পী ও শিক্ষক বুদ্ধদেব বন্দ্যোপাধ্যায়ের। কয়েকদিন ধরে ওই ভবঘুরেকে কাটোয়া শহরের বিভিন্ন রাস্তায় ছবি আঁকতে দেখা গিয়েছে। কেন আঁকেন? ইশারায় জানান, খিদের জ্বালা মেটাতে। এর বেশি আর কিছু ভাঙতে চান না। কেউ খাবার বা অর্থসাহায্য করলে সাদরে গ্রহণ করছেন। রাতে হাইড্রান্টের ধারে চাদর মুড়ি দিয়ে ঘুমোন। সূর্য উঠলেই আবার রাস্তা-ক্যানভাসে ফুটতে থাকে শিল্প। ছবি মোবাইলবন্দি করলে বেজায় চটে যান। একজায়গায় বেশিদিন থিতু হন না। কোথায় হারিয়ে যান।