‘জাগো বাংলা’র ২০২১-এর উৎসব সংখ্যা প্রকাশের অন্য রূপে ধরা দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর কথায় ও সুরে এবারও প্রকাশ হল পূজার গানের অ্যালবাম “জননী’। আর সেখানে স্তোত্র গান গেয়েছেন স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী। এদিন অনুষ্ঠানে সেই স্তোত্রগান শোনা গেল।
নবরূপে দৈনিক ‘জাগো বাংলা’র প্রশংসা করেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি জানান, সাপ্তাহিক থেকে এটিকে দৈনিক করার বিষয়টি প্রথম মাথায় আসে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের। তিনিই মূল উদ্যোক্তা। এরপর তৃণমূল মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়, নেতা সুব্রত বক্সি এই বিষয়টিকে এগিয়ে নিয়ে যান। কুণাল ঘোষ এবং ‘জাগো বাংলা’র সঙ্গে টিমকে অভিনন্দন জানান মুখ্যমন্ত্রী।
আরও পড়ুন-‘জাগোবাংলা’-য় কংগ্রেস নিয়ে কী লিখলেন বিস্ফোরক মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়?
একই সঙ্গে জানান, কীভাবে তাঁর গান গাওয়ার পরিকল্পনা হয়? ২৯ সেপ্টেম্বর সন্ধেবেলায় ইন্দ্রনীল সেনের বাড়িতে যান তৃণমূল সভানেত্রী ও গায়ক নচিকেতা। মুখ্যমন্ত্রীকে দিয়ে একপ্রকার জোর করেই গানটি সেখানে রেকর্ড করান নচিকেতা। ইন্দ্রনীল সেন জানান, এক টেকেই রেকর্ডিং ওকে করে দেন মমতা।
চিরকালই বাংলা শিল্প-সংস্কৃতির পৃষ্ঠপোষক মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কবিতা-গল্প-উপন্যাস-প্রবন্ধের পাশাপাশি গান রচনা এবং সুরও দেন তিনি। তাঁর কথায় ও সুরে প্রকাশিত অনেক সিডি ‘গোল্ডেন ডিস্ক’ পেয়েছে। তিনি শিল্পীও। রং-তুলিতে ক্যানভাসে ফুটিয়ে তোলেন নানা ছবি। ‘জাগো বাংলা’র উৎসব সংখ্যার প্রচ্ছদও তাঁর আঁকা।
এদিন মুখ্যমন্ত্রী জানান, বাংলা সঙ্গীত জগতের উন্নতিতে উদ্যোগ নেবেন। তিনি বলেন,”আমরা হিন্দি গান ভালোবাসি। তবে স্বর্ণযুগের বাংলা গানগুলি এখনও মনে রেখেছি। বাবুল এই যে প্রতুলদার গান গেয়ে গেল। এমন অনেক ভালো গান হৃদয়কে দোলা দেয়। কিন্তু আমরা ধরে রাখতে পারি না। এখন মাঝে মাঝে রিয়েলিটি শোয়ে কয়েকটা ছেলে-মেয়েকে পুরনো গান গাওয়ানো হয়। দেখতে ভালো লাগে।” তিনি বলেন, “বাংলার গান, নাটক, সংস্কৃতি, বাংলার শিক্ষা, সভ্যতা সব কিছু ভালো।”
দীপাবলির পরে এ বিষয়ে ইন্দ্রনীল, নচিকেতার সঙ্গে আলোচনায় বসবেন তিনি। এদিন মহালয়া উপলক্ষে প্রথমেই নচিকেতা-ইন্দ্রনীলকে মা দুর্গার গান গাওয়ার কথা বলেন মুখ্যমন্ত্রী।
এদিন অনুষ্ঠান মঞ্চে মুখ্যমন্ত্রীকে ‘পিয়ানিকা’ উপহার দেন তৃণমূল নেতা বাবুল সুপ্রিয়। নীল-সাদা রঙের পিয়ানিকা পেয়ে খুশি প্রিয় মূল সভানেত্রী। নতুন বাদ্যযন্ত্র শেখার উৎসাহ চোখে পড়ার মতো। ফুঁ দিয়ে ওই বাদ্যযন্ত্র বাজাতে হয়। হাসির ছলে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “যখন ফুঁ দিতে হবে বাবুলকে ডেকে নেব”।
আরও পড়ুন-রেল উন্নয়নেও রেকর্ড, ‘জাগোবাংলা’-য় আক্রমণাত্মক মমতা
লখিমপুরে শহিদ কৃষকদের পরিবারের পাশে দাঁড়িয়েছেন তৃণমূলের প্রতিনিধিদল। 12 ঘন্টা ধরে ঘুরে ঘুরে, দোলা সেন পাঞ্জাবি সেজে ঘটনাস্থলে পৌঁছন। উত্তরপ্রদেশে গণতন্ত্র নেই বলে মন্তব্য করেন মমতা। বিজেপিশাসিত রাজ্যে তৃণমূলের প্রতিনিধিদের আটকাতে 144 ধারা জারি করা হয়েছে বলেও অভিযোগ করেন তৃণমূল সুপ্রিমো।
উৎসবের দিনেও বাংলার শহিদ, নির্যাতিত পরিবারগুলিকে ভোলেননি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এদিন নজরুল মঞ্চের অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন শহিদ-নির্যাতিত পরিবারের সদস্যরা। তাদের হাতে পুজোর উপহার তুলে দেন মমতা। করেন সৌজন্য বিনিময়।
এদিন তৃণমূল নেত্রীকে ঘিরে তৃণমূলের কর্মী-সমর্থকদের উৎসাহ ছিল তুঙ্গে। তাঁর গাওয়া গান মুগ্ধ করেছে শ্রোতাদের। সবাইকে নিয়ে জাতীয় সংগীত গেয়ে অনুষ্ঠান শেষ করেন মমতা।