নয়াদিল্লি, ২০ এপ্রিল : নাইটদের হারের হ্যাটট্রিক আর দিল্লির প্রথম জয় একইদিনে ঘটে গেল কোটলায় মধ্যরাতে। লিগ টেবলের নিচের দিকে থাকা দুটো দলের এই হার-জিতে ২০২৩ আইপিএলের সামগ্রিক ছবিটা বদলায়নি। কিন্তু দুটো জল্পনার জন্ম অবশ্যই দিল। এক, কেকেআর এভাবেই আইপিএল মানচিত্র থেকে হারিয়ে যাবে কি না। দুই, ফ্র্যাঞ্চাইজি কর্তাদের রক্তচক্ষুর সামনে জয়ের স্বাদ পাওয়া দিল্লি ক্যাপিটালস এবার ২০১৪-র মুম্বইয়ের ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটাতে পারে কি না।
আরও পড়ুন-আজ চেন্নাইয়ের সামনে সানরাইজার্স, চোট সারিয়ে ২২ গজে ফিরতে তৈরি স্টোকস
দুটো দলের কী আছে আর কী নেই, এই তুলনায় আগে আসবেন ডেভিড ওয়ার্নার। এমন লড়াকু চরিত্র কেকেআরে নেই। ওয়ার্নার এদিন ৫৭ রান করে গেলেন। যাতে দিল্লির জয়ের রাস্তা বিলকুল সাফ হয়ে গিয়েছিল। আর কেকেআর? অস্তমিত সূর্যর ছড়াছড়ি সেখানে। রাসেল ছিলেন। নারিন ছিলেন। এখনও আছেন। কিন্তু আছেন অতীতের ছায়া নিয়ে!
১২৮ রান তাড়া করতে গিয়ে ভালই এগোচ্ছিল দিল্লি। সেটাও পৃথ্বী (১৩), মার্শ (২), সল্ট (৫) ফিরে যাওয়ার পর। আর সেটা সম্ভব হয়েছে ওয়ার্নারের জন্য। কিন্তু তিনি দিল্লির ৯৩ রানে ফিরে যাওয়ার পর ঈষৎ টেনশন তৈরি হয়েছিল তাঁদের শিবিরে। তবে সবশেষে অক্ষর প্যাটেল ১৯ নট আউট থেকে ম্যাচ বের করে নিয়ে গেলেন। দিল্লি জিতল ৪ উইকেটে।
আরও পড়ুন-বিড়াল পিটিয়ে বাঘ হয় না, বেলুন ফেটে গেল গদ্দারের
দেওয়ালে পিঠ ঠেকে গেলে একটা মরণ কামড় দিতেই হয়। এই জোশ নিয়ে ওয়ার্নাররা কোটলায় ম্যাচ শুরু করেছিলেন। ফল হল এই যে, কেকেআর ২০ ওভারে শেষ ১২৭ রানে। ৬৪ রানে কেকেআরের ৫ উইকেট তুলে নিয়েছিল দিল্লি। জেসন রয় (৪৩) একটা দিক ধরে রেখেছিলেন। উল্টোদিক থেকে লিটন (৪), ভেঙ্কটেশ (০), নীতীশ (৪), মনদীপ (১২) ও রিঙ্কু (৬) পরপর আউট হয়ে গেলেন। ফলে রানটা সেভাবে এগোল না।
আইপিএলে এটা লিটনের অভিষেক ম্যাচ ছিল। কিন্তু ৪ বলের বেশি টেকেননি। তিনি যখন দ্বিতীয় ওভারে ফিরে গেলেন, কেকেআর ১৫। উল্টোদিকে, ২০২১-এর পর আইপিএলে কোনও ম্যাচে নেমে ইশান্ত শর্মা দুর্দান্ত বল করলেন। গড় ৪-০-১৯-২। নীতীশ ও নারিন ইশান্তের শিকার। রাসেল এদিন নামলেন নারিনের পর, ৮ নম্বরে। বোর্ডে কেকেআর ৭০/৬। বাকি ধাক্কাটা নরখিয়া ও কুলদীপের। নরখিয়া ২০/২। কুলদীপ ১৫/২। রাসেল ২৯ বলে ৩৭ নট আউট। প্রশ্ন হল, এত দেরিতে কেন তিনি?
আরও পড়ুন-অব কি বার সব কুছ পার
অদ্ভুত একটা পরিস্থিতিতে খেলা শুরু হয়েছিল এদিন। বৃষ্টিতে এক ঘণ্টা দেরিতে ম্যাচ শুরু হল, এটা বিষয় নয়। কেকেআর টানা দুটো ম্যাচ হেরে বৃহস্পতিবার মাঠে নেমেছিল। আর দিল্লি নামল টানা পাঁচ ম্যাচ হারের পর। ২০১৪-তে এভাবেই প্রথম পাঁচ ম্যাচ হেরেছিল মুম্বই। কিন্তু তারপর তারা প্লে অফে উঠে গিয়েছিল। নাইটদের হারানোর পর দিল্লি কি এবার মুম্বইকে ছুঁতে পারবে?
আরও পড়ুন-শিশুকে মৃত্যুর মুখ থেকে ফেরাল পিজি
এরকম পরিস্থিতিতে দুটো দলই যে একগাদা পরিবর্তন করে মাঠে নামবে, তাতে অবাক হওয়ার কিছু নেই। কেকেআর একসঙ্গে অনেকগুলি পরিবর্তন করে খেলতে নামল। এলেন লিটন, রয়, মনদীপ ও খেজরোলিয়া। সঙ্গে অনুকূল রায়। দিল্লি আবার মুস্তাফিজুর, পৃথ্বী, সরফরাজ, ঢুল ও অভিষেককে বাইরে রেখে আনল ফিল সল্ট ও ইশান্ত শর্মাকে। অনেকদিন বাদে আইপিএল ম্যাচে খেললেন ইশান্ত। পৃথ্বী পরে ইমপ্যাক্ট প্লেয়ার হিসাবে নামলেন। কেকেআর যে চারজনকে বাইরে রাখল, তারমধ্যে ছিলেন আবিষ্কার সুয়শও। কিন্তু এত পরিবর্তনের পরও সেই হারতেই হল!