নয়াদিল্লি : ভূমিধস ও ফাটলের লাগাতার সমস্যাকে এড়িয়ে চারধাম যাত্রার প্রস্তুতিতে ব্যস্ত উত্তরাখণ্ডের বিজেপি সরকার। ইতিমধ্যেই জোশীমঠের ভূমিধসে অসংখ্য মানুষ উদ্বাস্তু হয়েছেন, বৃহস্পতিবারও নতুন করে একাধিক জায়গায় ফাটল দেখা দিয়েছে, তবু বিপর্যয়কে আড়াল করে ধর্মীয় উৎসব আয়োজনকে অগ্রাধিকার দিচ্ছে রাজ্য প্রশাসন। প্রশ্ন উঠছে, ভবিষ্যতে আরও বড় বিপর্যয় ও প্রাণহানি ঘটলে তার দায় নেবে কে? পরিবেশ ও ভূমিধসের বিপদ নিয়ে সরকারের নির্বিকার মানসিকতার সমালোচনা করেছেন পরিবেশবিদরাও।
আরও পড়ুন-দিনের কবিতা
জোশীমঠ বিপর্যয়ের ঘটনা কার্যত ধামাচাপা দিতে ব্যস্ত উত্তরাখণ্ডের বিজেপি সরকার। জোশীমাঠের ৮০০টি ঘরছাড়া পরিবার এখনও তাদের পুনর্বাসন পায়নি। অনেক পরিবারই বাধ্য হয়ে অস্থায়ী তাঁবু, এমনকী ঘোড়ার আস্থাবলে দিন কাটাচ্ছেন। সম্পূর্ণ অনিশ্চিত ভবিষ্যৎ। সামনেই বর্ষার মরশুমে পাহাড়ি এলাকায় আরও বড় ধসের আশঙ্কা। তার আগে এখনও পর্যন্ত ঘরছাড়া পরিবারগুলি সরকারের কাছ থেকে মৌখিক প্রতিশ্রুতি ছাড়া কিছুই পাননি। ঘরছাড়া পরিবারগুলির সমস্যাকে গুরুত্ব দিতে চাইছে না বিজেপি সরকার। ২০২৪-এর আগে হিন্দুত্বের অ্যাজেন্ডা তুলে ধরতে চারধাম যাত্রাকেই বড় আকারে বেশি গুরুত্ব দিয়ে তুলে ধরতে চায় বিজেপি।
আরও পড়ুন-‘অক্ষয় দান, করেন পুণ্যবান’
ধামি সরকার ইতিমধ্যেই ঘোষণা করে দিয়েছে, এবারের চারধাম যাত্রা আগের চেয়ে বড় হবে। অথচ জোশীমঠের বাসিন্দারা এখনও রাস্তার ধারে অস্থায়ী আশ্রয়ে দিন কাটাচ্ছেন। পাশাপাশি তাঁদের উদ্বেগ, যখন চরধাম যাত্রার জন্যে তীর্থযাত্রীরা আসবেন তখন তাঁদের এই অস্থায়ী বাড়িগুলি থেকেও উচ্ছেদ করা হতে পারে। জানুয়ারি মাসে জোশীমঠের ভূমিধসে বাস্তুচ্যুত হওয়ার পর ক্ষতিপূরণের জন্য লড়াই করছেন কয়েক শতাধিক পরিবার। চারধাম যাত্রাকে কেন্দ্র করে জোশীমাঠের স্থানীয় বাজারে প্রায় পঞ্চাশ লক্ষ পুণ্যার্থীর সমাগম হয়। মাত্র তিন মাস হয়েছে এই শহরে ৮০০টিরও বেশি বাড়ি ও রাস্তায় ফাটল দেখা দিয়েছে। এরমধ্যেই চারধাম যাত্রা শুরু হতে চলেছে ২২ এপ্রিল।
আরও পড়ুন-মাটির কোলে মিশবে মাটি
এ-ছাড়া বদ্রীনাথ মন্দির খুলবে ২৭ এপ্রিল। উত্তরাখণ্ডের মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণা, এবার তীর্থযাত্রীর সংখ্যা আগের সমস্ত রেকর্ড ভাঙবে। আর এ-নিয়ে পরিবেশবিদ গোপালকৃষ্ণ আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেছেন, কয়েক হাজার মানুষ এখনও ঘরছাড়া। তার মধ্যেই সরকারের অবিবেচক আচরণের জন্য লক্ষ লক্ষ পুণ্যার্থীর সমাগম হবে। সরকারের দূরদর্শিতার অভাবে ফের বহু মানুষের জীবন ঝুঁকির মধ্যে পড়তে চলেছে। আবার কোনও বিপর্যয় হলে তার দায় কে নেবে?