বাংলার মানুষ বনধ সমর্থন করে না। আজ আরও একবার প্রমাণিত। কালিয়াগঞ্জের ঘটনার প্রতিবাদে ১২ ঘন্টার বনধ ডেকেছিল বিজেপি (BJP)। তবে বিজেপির এই ডাকা এই কর্মনাশা ও সর্বনাশা বনধের বিরুদ্ধে সরব হয়ে উঠলেন দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় (Abhishek Banerjee)। শুক্রবার জলপাইগুড়ির জনসভা থেকে অভিষেক জানালেন, “বিজেপির ডাকা এই সর্বনাশা বনধ ব্যর্থ করেছে মানুষ। বনধ ব্যর্থ এবং যে উদ্দেশ্যে বিজেপি বনধ ডেকেছে, সেটাও ব্যর্থ। কর্মনাশা সর্বনাশা ধর্মনাশা বনধের সংস্কৃতি বাংলার মানুষ মানে না। আপনারা তো দেখছেন মানুষের স্বতঃস্ফূর্ততা।” একইসঙ্গে তিনি আর বলেন, “যে রাজনৈতিক দল বনধ ডেকেছিল তার গুষ্টি চটকে বাংলার মানুষ প্রমাণ করেছে বনধ সমর্থন করে না। যা সভা ছিল তাতে বনধ শুনে আরও ৩টে সভা যোগ করেছি।”
এদিন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় (Abhishek Banerjee) বলেন, “বনধের এই সংস্কৃতি সিপিএম বাংলায় এনেছিল। আমরা সেটা উঠিয়ে দিয়েছি। গত ১২ বছরে বাংলার মানুষ বনধ দেখেনি। ভেঙে দাও, গুড়িয়ে দাও, বনধ করে দাও, জ্বালিয়ে দাও, গুটিয়ে দাও এই যে রাজনীতির বিরুদ্ধে তৃণমূল কংগ্রেস বারবার সরব হয়েছে। বনধ সর্বাত্মকভাবে ব্যর্থ। জনজীবন একেবারে স্বাভাবিক। আমার নির্দিষ্ট কর্মসূচি রয়েছে সবকটি করব। রাস্তার দু’ধারে মানুষ রয়েছেন। দোকান, হাটবাজার সব খোলা। রাস্তার দু’ধারে মানুষ দেখলেই তো বোঝা যাচ্ছে।” পাশাপাশি বিজেপিকে তোপ দেগে বলেন, “যারা দিন আনে দিন খায় অনেক পরিবার রয়েছে। যারা পাঁচ হাজার ছয় হাজার টাকায় চাকরি করেন। দিনে দুশো, আড়াইশো, তিনশো টাকা আয় করেন। তাদের চাকরি করতে হবে, কর্মস্থলে পৌঁছতে হবে। যারা ভাবছে বনধ নিজেদের সংগঠনের শক্তি এবং সাংগঠনিকভাবে কতটা বলিষ্ঠ সেটা মানুষের কাছে উপস্থাপিত করবে তাদের ভাবা উচিত মানুষের অসুবিধা হচ্ছে।”
আরও পড়ুন: কুস্তিগীরদের পাশে মুখ্যমন্ত্রী, কী বার্তা দিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়?
একইসঙ্গে সুর চড়িয়ে তিনি বলেন, “এরপরও জোরজবরদস্তি করে কোথাও বাস জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছে সাংগঠনিক শক্তি দেখাতে চায় ওরা। মানুষের হয়রানি, মানুষের অসুবিধা করছে ওরা। এটাই ভারতীয় জনতা পার্টি। সিপিএমের হার্মাদরা গেরুয়া জার্সি পরে আবার সেই সংস্কৃতি আবার সেই সন্ত্রাসের বাতাবরণ বাংলায় আনতে চাইছে। বনধ সফল না ব্যর্থ সেটা মানুষের উপর ছেড়ে দিন না। জোর জবরদস্তি করতে হচ্ছে কেন দোকানপাট বন্ধ রাখার জন্য নির্দেশ জারি করতে হচ্ছে কেন। আপনারা বনধ ডেকেছেন সেটা মানুষ সমর্থন করছে না বর্জন করছে সেটা মানুষের উপর ছেড়ে দেওয়া হোক। এরা চায় না কখনই মানুষের পাশে এসে দাঁড়ায়, যারা রুটি-রুজি সঙ্গে দৈনন্দিন যুক্ত তাদের ভাল চায় না ওরা।”
এছাড়াও বিজেপিকে আক্রমন শানিয়ে অভিষেক আরও জানান, “বিজেপি নেতাদের তো অসুবিধা হয় না ম্যাথু স্যামুয়েলের মতো কেউ এসে খামে মুড়ে ৫ লাখ টাকা এসে দিয়ে যাবে তাতে সংসার চলে যাবে। সুদীপ্ত সেনের কাছ থেকে ৫ কোটি নিয়ে বসে যাবে। আর বছরের পর বছর বাড়িতে বসে খেয়ে ফুর্তি করবে। যাদের ২০০ ৩০০ টাকা করে লস হল তাদের টাকা কে দেবে? ভারতীয় জনতা পার্টি করবে ব্যবস্থা? সাধারণ মানুষকে ২০০-৩০০ টাকা করে দিয়ে তারপরে বনধ ডাকা উচিত। যারা ভাঙচুর করেছে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া উচিত। যে রাজনৈতিক দল বনধ ডেকেছিল তার গুষ্টি চটকে বাংলার মানুষ প্রমাণ করেছে বনধ সমর্থন করে না। যা সভা ছিল তাতে বনধ শুনে আরও ৩টে সভা যোগ করেছি। দেখি কে আটকায়।”