নবনীতা মণ্ডল, নয়াদিল্লি : দান্তেওয়াড়ায় হামলার (Dantewada attack) অনেকদিন আগে থেকেই ইম্প্রোভাইজড এক্সপ্লোসিভ ডিভাইস সেখানে লাগানো হয়েছিল। বিস্ফোরণে ১১ জনের প্রাণহানির পর সরকারি সূত্রে এখন এমনই জানা গিয়েছে। আর এতেই প্রকট হয়ে গিয়েছে বিরাট গোয়েন্দা ব্যর্থতা। এমনকী, বস্তার রেঞ্জের আইজি মেনে নিয়েছেন, ছত্তিশগড়ে বিস্ফোরক রাখার জন্য রাস্তার নিচে একটি টানেল খোঁড়া হয়েছিল। পুলিশের মতে, যা নকশালবাদীদের পুরনো কৌশল। আর এরপর প্রশ্ন উঠছে, কেন্দ্রীয় সরকারের গোয়েন্দা বিভাগ মাওবাদীদের গতিবিধি বা পরিকল্পনা নিয়ে কেন আগাম খবর দিতে ব্যর্থ হল, যার জেরে এতজন সিআরপিএফ জওয়ানের প্রাণহানি?
ছত্তিশগড়ের দান্তেওয়াড়ায় (Dantewada attack) এই মাওবাদী হামলা অনেকগুলি প্রশ্ন তুলে দিয়েছে। জানা গিয়েছে, এই হামলা কোনও সাধারণ হামলা নয়। অনেক আগে থেকেই নির্দিষ্ট ছকে পরিকল্পনা করে এই হামলা চালানো হয়েছে। সিআরপিএফ সূত্রে খবর, বড় ধরনের হামলা চালানোর জন্য বহু আগে থেকেই রাস্তার নিচে আইইডি পুঁতে রেখেছিল মাওবাদীরা। বাহিনীর একাংশের দাবি, প্রায় বছরখানেক আগেও পুঁতে রাখা হতে পারে এই আইইডি। পুরোটাই একটি ট্র্যাপের অংশ, যেখানে মাওবাদীরা আছে এই খবর পেয়ে সিআরপিএফ রওনা দিয়েছিল তাদের ধরার জন্য।
আরও পড়ুন- সংঘর্ষবিরতি লঙ্ঘন করে শুরু যুদ্ধ, উদ্ধারকাজে জোর
নিরাপত্তা বাহিনীর দাবি, যেকোনও বড় হামলা চালানোর ক্ষেত্রে অনেক আগে থেকে আইইডি মাটির নিচে পোঁতা হয়। আইইডির তারের শেষ প্রান্ত প্লাস্টিক দিয়ে মুড়ে রাখা হয়। নাশকতার যাবতীয় পরিকল্পনা চূড়ান্ত হলে সেই তার জুড়ে দিয়ে বিস্ফোরণ ঘটনা হয়। এক্ষেত্রেও তেমনটাই করা হয়েছে। গত দু-বছরে এটিই সবচেয়ে বড় মাওবাদী হামলা বলে জানিয়েছে সিআরপিএফ। ঘটনার দিন দুপুর ১টা নাগাদ একটি বেসরকারি গাড়ি করে ছাউনিতে ফিরছিলেন জওয়ানরা। পালনার এলাকায় পৌঁছাতেই বিস্ফোরণ ঘটায় মাওবাদীরা। এক আধিকারিকের বক্তব্য, সিআরপিএফের নিজস্ব কোনও গোয়েন্দা বিভাগ নেই। অন্যান্য গোয়েন্দা সংস্থার উপরেই বাহিনীকে নির্ভর করতে হয়। মাটির নিচে পুঁতে রাখা আইইডি সম্পর্কে আগে খবর আসা উচিত ছিল গোয়েন্দা বিভাগ এবং বাহিনীর কাছে। গত ১৮ এপ্রিল কংগ্রেস বিধায়ক বিক্রম মাণ্ডভির কনভয় লক্ষ্য করে হামলা চালানোর পরেও কেন সতর্কতা অবলম্বন করা হল না, তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। বস্তার, দান্তেওয়াড়ায় যে এখনও মাওবাদীরা সক্রিয় আছে সে খবরও কেন আগে থেকে গোয়েন্দা বিভাগের কাছে ছিল না, তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। এতদিন জেলার সদর দফতর বা শহরাঞ্চলের দিকে বাহিনীর ছাউনি থাকত। এবার গ্রামাঞ্চলের দিকে ছাউনি করার পরিকল্পনা করছে সিআরপিএফ। গ্রামের সমস্ত খবর, মাওবাদীদের আনাগোনা, তাদের নিজস্ব সূত্রের খবর যাতে বাহিনীর কাছে পৌঁছায়, তার জন্য নতুন করে পরিকল্পনা করা হচ্ছে।