অলোক সরকার: ভেঙ্কটেশ আইয়ার যখন ফিরে গেলেন, ৩৮ বলে ৬৫ রান দরকার কেকেআরের (KKR vs Punjab kings)। রানটা তোলা যায়। এবার এখান থেকে হারের ঘটনাও রোজ ঘটছে আইপিএলে!
ঠিক এই জায়গায় রিঙ্কুর আগে রাসেল এলেন। পারফরম্যান্স যা-ই থাকুক, ক্রাউড পুলার। প্রচুর হাততালি নিয়ে ব্যাট করতে এলেন। হাততালিটা একটু বাদে নিঝুম হয়ে গেল নীতীশ রানার (৫১) উইকেট চলে যাওয়ায়। রাহুল চাহার ম্যাচ প্রায় ঘুরিয়ে দিয়েছিলেন। কিন্তু রাসেল পাওয়ারের (২৩ বলে ৪২) কাছে চাহার, কারেন সবাই হেরে গেলেন। তবে যেটা বলার, শেষ বলে বাউন্ডারিটা এসেছে রিঙ্কুর (২১ নট আউট) ব্যাটে। সেই রিঙ্কু! যিনি ম্যাচ জেতানো অভ্যেস করে ফেলেছেন। ৫ উইকেটে জিতে প্লে অফের দৌড়ে টিকে থাকল কেকেআর। পরের ম্যাচ ইডেনেই বৃহস্পতিবার।
পাওয়ার প্লে-তে ৫২/১ করে ফেলেছিল কেকেআর (KKR vs Punjab kings)। মন্দ ছিল না ব্যাপারটা। অন্তত ১৮০ রান তাড়া করতে গেলে এরকমই শুরু দরকার। এলিস শুরুতেই গুরবাজকে (১৫) তুলে ঝটকা দিয়েছিলেন। তবে জেসন রয় (৩৮) আর নীতীশ (৫১) মিলে যে পার্টনারশিপ তৈরি করলেন, সেটাই কেকেআরকে শক্ত জমির উপর দাঁড় করিয়ে দেয়। কিন্তু নাইটদের ইনিংস যখন দাঁড়িয়ে গিয়েছে, তখনই শাহরুখের হাতে ধরা পড়লেন রয়।
আরও পড়ুন: আজ রবিতীর্থে অভিষেক
পাঞ্জাবের ইনিংসে পাঁচ ওভারে ৫০ উঠে যাওয়ার পর আনতে হয়েছিল বরুণকে। কেকেআরের এখন একনম্বর বোলার। বরুণের ব্যাপারটা হল তিনি হাওয়ায় বল রাখতে ভয় পান না। সেটাও যখন উল্টোদিকে গব্বর শিখর ধাওয়ান সেট ব্যাটার হিসাবে বাইশ গজে রাজ করছেন। কিন্তু বরুণকে তো আনাই হল ব্রেক দিতে। তিনি সেটা করলেন লিয়াম লিভিংস্টোনকে (৯) বোল্ড করে দিয়ে। পাঞ্জাব কিংস তখন ৫৩/৩।
আরসিবি আর চেন্নাই ম্যাচের তুলনায় এটা ইডেনে অনেক হালকা ম্যাচ। সেটা সন্ধ্যায় ধর্মতলা থেকে মাঠমুখী ভিড়েই স্পষ্ট হয়ে গেল। আরসিবি ম্যাচে বেঙ্গালুরুর জার্সি ঢেলে বিকিয়েছে। চেন্নাই ম্যাচে গোটা ইডেন ধোনির হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু সোমবারের এই ম্যাচে পুরো মাঠ ছিল কেকেআরের। যার একটা কারণ এই যে, সানরাইজার্স হায়দরাবাদকে হারিয়ে কেকেআর আবার প্লে অফ সরণিতে ফিরেছে। সুতরাং নাইটদের পাশে থাকার দায় কীভাবে অস্বীকার করবে কলকাতা!
ইডেন বলেই আবার তিন স্পিনারে ফিরেছিল কেকেআর। এই উইকেটে স্পিনারদের জন্য কিছু আছে। আর ঘটনা হল নাইট স্পিনাররা বল করতে আসা ইস্তক চেপে ধরলেন কিংস ব্যাটারদের। আগের দিন পাঞ্জাবের সহকারী কোচ ওয়াসিম জাফর বলছিলেন, নাইটদের স্পিন অ্যাটাক বেশ ভাল। বরুণ অসাধারণ। নারিন এতদিন পরেও এক জায়গায় রয়েছে। সুয়শ নতুন হলেও খুব ভাল বল করছে। দেখা গেল জাফরের আশঙ্কাই সত্যি হল। নাইটদের স্পিনার ত্রয়ী পাঞ্জাবকে এদিন শুরু থেকে থামিয়ে রাখল।
স্লো উইকেট বলেই নীতীশও দু-এক ওভার হাত ঘোরাতে এসেছিলেন। এসেই ফিরিয়ে দিলেন ধাওয়ানকে। ৫৭ রান করে গেলেন পাঞ্জাব অধিনায়ক। যতক্ষণ ছিলেন মনে হচ্ছিল বড় রান হতে পারে। কিন্তু প্রভসিমরণ (১২), রাজাপাক্ষ্যে (০), জিতেশ শর্মা (২১) ধাওয়ানের আগে আউট হয়েছেন কিছু না করেই। এবার ধাওয়ানও ফিরলেন দলকে চাপে ফেলে। এরপরও পাঞ্জাব ১৭৯/৭-এ গেল শেষ ওভারে হরষিত রানা ২১ রান দেওয়ায়। বরুণের ৪ ওভারে ২৬ রানে ৩ উইকেট। সুয়শের ৪ ওভারে ২৬ রানে ১ উইকেট। এভারগ্রিন নারিন ৪ ওভারে ২৯। তবু শাহরুখ ২১ নট আউট থেকে দলকে টেনে নিয়ে গেলেন। তবু জয়ের দেখা মিলল না!