“অভিষেককে আটকালে আমি নবজোয়ারে যাব”। শুক্রবার বাঁকুড়ার পাত্রসায়রে ‘নবজোয়ার’ কর্মসূচির এক সভায় ভার্চুয়ালি যোগ দিয়ে বিজেপিকে রীতিমতো হুঁশিয়ারি দিলেন তৃণমূল কংগ্রেস সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। শুক্রবার বিকেলে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সাফ জানিয়ে দেন, অভিষেককে আটকে কোনওমতেই নবজোয়ার বন্ধ করা যাবে না।
আরও পড়ুন: CBI তলব: ৩-৪বছর ধরে তদন্তের নামে ডাকাডাকি! ক্ষমতা থাকলে গ্রেফতার করার চ্যালেঞ্জ অভিষেকের
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) এদিন বিজেপির উদ্দেশে হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, অভিষেকের কর্মসূচিকে রীতিমতো ভয় পেয়েছে বিজেপি। আর সেকারণেই নবজোয়ার কর্মসূচি আটকাতে অভিষেককে নোটিশ পাঠানো হয়েছে। পাশাপাশি বিজেপিকে দেশছাড়া করতে লড়াই জারি রাখার কথাও শোনা যায় তৃণমূল সুপ্রিমোর গলায়। তৃণমূল সুপ্রিমো মনে করিয়ে দেন, বিজেপি অভিষেককে খুব ভয় পায়, চমকায় তাই এসব করে নবজোয়ার কর্মসূচি বন্ধ করার চেষ্টা চলছে। কিন্তু তা যে একেবারে দিবাস্বপ্ন এদিন সেকথাও মনে করিয়ে দিতে ভোলেননি মমতা। তিনি জানিয়ে দেন, অভিষেককে আটকালে আমি নবজোয়ারে যাব। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, আর যাই হোক তর্জন গর্জন দিয়ে তৃণমূলকে কখনও থামানো যাবে না। আমি নবজোয়ারকে নবপ্লাবনে পরিণত করব।
তৃণমূল নেত্রীর আরও সংযোজন, নবজোয়ার যাত্রা কীভাবে বন্ধ করা যায় তার জন্য সবরকম চেষ্টা করছে বিজেপি। এরপরই তৃণমূলের সরব ভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় প্রসঙ্গে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, একটা ছেলে ২৫দিন ধরে নাওয়া-খাওয়া ভুলে রাস্তায় পড়ে আছে। মানুষ আসছে। তাই ওঁকে আটকাতে চাইছে। আসলে সিবিআই, ইডি তৃণমূল কংগ্রেসকে ভয় পায়। অন্যদিকে, মাঝে প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে অভিষেকের কর্মসূচি কোথাও কোথাও বাতিল হয়ে যায়। এদিন মমতা বলেন, আমি ওঁকে ফিরে আসতে বলেছিলাম। ও তখন আমায় বলল, না ফিরব না। আমি যখন করব বলেছি, তখন করবই। তবে এদিন বিজেপিকে কটাক্ষ করে মমতা মনে করিয়ে দেন, রাজনৈতিকভাবে মোকাবিলা করতে না পেরে এসব করে চলেছে। তবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, ইডি-সিবিআই দেখিয়ে আর যাই হোক তৃণমূল কংগ্রেসকে ভয় দেখানো যাবে না। বিজেপিকে দেশ ছাড়া না করা পর্যন্ত এই লড়াই চলবে জানান তৃণমূল সুপ্রিমো। তবে শুধু এদিন বিজেপি নয় সিপিএমকেও একহাত নেন তিনি। মমতা মনে করিয়ে দেন সারা রাজ্য জুড়ে সিপিএমের অত্যাচার দেখেছি। আগে মানুষ রাতের অন্ধকারে বাইরে বেরতে ভয় পেতেন। কিন্তু তৃণমূল রাজ্যে ক্ষমতায় আসার পর মানুষের মন থেকে ভয় দূর হয়েছে। পাশাপাশি এনআরসি ইস্যু নিয়ে এদিন বিজেপিকে হুঁশিয়ারির সূরে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, আমি মরে গেলেও বাংলায় কোনওমতেই এনআরসি করতে দেব না।
উল্লেখ্য, শুক্রবার সিবিআইয়ের নোটিশ পাওয়ার পরই সোনামুখীর রোড শো ছেড়ে বাঁকুড়া থেকে কলকাতার উদ্দেশে রওনা দিয়েছেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। শনিবার তাঁর হাজিরা দেওয়ার কথা সিবিআই দফতর নিজাম প্যালেসে। কিন্তু এ হেন পরিস্থিতিতে নবজোয়ার যাত্রা যাতে কোনওমতেই বন্ধ না হয় সেই নির্দেশ দিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এদিন যুদ্ধকালীন তৎপরতায় তৃণমূলনেত্রী সিদ্ধান্ত নেন, শুক্রবার বাঁকুড়ার চক পাত্রসায়রে যে সভায় অভিষেকের বক্তব্য রাখার কথা ছিল সেখানে কলকাতা থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ভার্চুয়াল বক্তৃতা দেবেন। আর সেই মতোই এদিন বিকেলে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন মমতা। এদিন চক পাত্রসায়রে অভিষেকের যেখানে সভা ছিল সেটি সোনামুখী বিধানসভার মধ্যে পড়ে। দুপুরের আগে থেকেই লোক জমায়েত হতে শুরু করে। কিন্তু সিবিআইয়ের নোটিস পেয়ে কলকাতা ফেরার সিদ্ধান্ত নেন অভিষেক। এরপরই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সিদ্ধান্ত নেন, অভিষেক নয় তিনিই বলবেন ভার্চুয়ালি।