প্রতিবেদন : চ্যালেঞ্জ করছি ক্ষমতা থাকলে আমায় গ্রেফতার করুন। আমি দিল্লির কাছে মাথা নত করব না। ইডি-সিবিআইয়ের কাছেও নয়। মা-বাবা আর দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ছাড়া আর কারও কাছে মাথা নত করব না। ইডি-সিবিআই দিয়ে আমায় দমিয়ে রাখা যাবে না। শুক্রবার দুপুরে সিবিআইয়ের সমন পাওয়ার পর সোনামুখীতে রোড শোয়ে লাখো জনতার মাঝে দাঁড়িয়ে কড়া ভাষায় নিজের বক্তব্য রাখলেন তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই সঙ্গে দৃপ্তকণ্ঠে তাঁর ঘোষণা, গত তিন বছরে যতবার ডেকেছে ততবার গিয়েছি। শনিবার আবার যাব। হিম্মত থাকলে মিডিয়ার সামনে প্রকাশ্যে জেরা করুক সিবিআই।
আরও পড়ুন-অভিষেককে আটকালে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যাবেন নবজোয়ারে, জানালেন দলনেত্রী
অভিষেকের তোপ, মেঘের আড়াল থেকে যুদ্ধ না করে সিবিআই অফিসাররা সরাসরি পঞ্চায়েত নির্বাচনে প্রার্থী হোন। একইসঙ্গে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাগুলিকে অভিষেক বিনম্রভাবে স্মরণ করিয়ে দেন, মনে রাখবেন এই সরকার পরের বছর থাকবে না। কিন্তু সংবিধান-ইডি-সিবিআই থাকবে। দেশের গণতন্ত্র থাকবে। তাই যা করবেন নিজেদের বিবেক-বুদ্ধি দিয়ে ভেবেচিন্তে করবেন।
আরও পড়ুন-আর ২০০০ টাকার নোট ছাপবে না RBI, নোট জমা করতে হবে ব্যাঙ্কে
আগেই বলেছিলেন, এজেন্সি ডাকলে জনসংযোগ যাত্রা বন্ধ রেখে এজেন্সির মুখোমুখি হবেন। হলও তাই। শুক্রবার সিবিআইয়ের নোটিশ পেয়েই অভিষেক থামিয়ে দিলেন কর্মসূচি। কোনওমতে সোনামুখীর রোড শো শেষ করেই ফিরলেন কলকাতায়। আজ সকাল ১১টার আগেই পৌঁছে যাবেন নিজাম প্যালেসের সিবিআই দফতরে। এদিন বাঁকুড়ার পূর্বনির্ধারিত পাত্রসায়রের জনসভায় ভার্চুয়ালি বক্তব্য রাখেন নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। অভিষেক বলেন, দলনেত্রীর সঙ্গে আমার কথা হয়েছে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছিলেন, দু’দিন সময় নিয়ে নে। জঙ্গলমহলটা করে তারপর আসিস। আমি বলেছি, না ডেকেছে যখন শনিবারই যাব। কিন্তু আমি খবর পাই পাত্রসায়রে কুড়ি-পঁচিশ হাজার মানুষ দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষা করছেন। তখন নেত্রী বলেন, তুই ফের পাত্রসায়রের জনসভায় আমি বক্তব্য রাখব। এরপরই দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদকের মন্তব্য, আমায় আটকাতে গিয়ে আপনারা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে মাঠে নামিয়ে দিলেন। এদিন দলের তরফেও সাংবাদিক বৈঠক করে এই ঘটনার তীব্র নিন্দা করা হয়।
আরও পড়ুন-CBI তলব: ৩-৪বছর ধরে তদন্তের নামে ডাকাডাকি! ক্ষমতা থাকলে গ্রেফতার করার চ্যালেঞ্জ অভিষেকের
অভিষেক বলেন, তৃণমূলের কর্মসূচি দেখে ভয় পেয়েছে বিজেপি। এই জনসংযোগে ৯০ কিমি রাস্তা পার হতে ৯ ঘণ্টা লাগছে, এত জনসমাগম। রাস্তায় যেখানে যতটা পেরেছি সামর্থ্যের মধ্যে মানুষকে সাহায্য করেছি। বিজেপির নেতারাও আমার কাছে এসেছেন সাহায্যের জন্য। বিজেপি নেতাদেরও ডবল ইঞ্জিনে ভরসা নেই, মমতার সিঙ্গল ইঞ্জিনে ভরসা। এই জনসংযোগ দেখেই রাতের ঘুম উড়েছে ওদের। বিজেপি চায় যাতে এই যাত্রা থেমে যাক। একইসঙ্গে অভিষেক যোগ করেন, সারদা, নারদা, কয়লা, গরুতে পারেনি এখন এসেছে এসএসসিতে। আমি চ্যালেঞ্জ করছি, আমার বিরুদ্ধে দুর্নীতির একটা প্রমাণ দিতে পারলে, কিচ্ছু করতে হবে না আমি নিজে গিয়ে ফাঁসির দড়িতে ঝুলব। তাঁর কথায়, শুক্রবার দুপুর ২.৩০টায় আমায় নোটিশ দেওয়া হয়েছে। আমার এখান থেকে কলকাতা যেতে ৫ ঘণ্টা সময় লাগবে। আমি যাব, তদন্তে সহযোগিতা করব। তারপর আরও দশগুণ বেশি উদ্যমে ২২ তারিখ এই বাঁকুড়া থেকে নবজোয়ার শুরু করব।