প্রতিবেদন : কুস্তিগিরদের যৌন হেনস্তা এবং তাঁদের উপরে পুলিশি নির্যাতনের প্রতিবাদে বুধবার পথে নামলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বিকেলে মহানগরীতে এক ঐতিহাসিক প্রতিবাদ মিছিলে নেতৃত্ব দিলেন তিনি। দেশের গর্ব পদকজয়ী কুস্তিগিরদের পাশে থাকার স্পষ্ট বার্তা দিয়ে তিনি তাঁদের হেনস্তাকারীদের কড়া শাস্তি দাবি করলেন। গ্রেফতারের দাবি জানালেন আসল দোষীর। বৃহস্পতিবার ময়দানে গোষ্ঠ পালের মূর্তির পাদদেশে মোমবাতি জ্বালিয়ে প্রতিবাদেরও আহ্বান জানান তিনি।
আরও পড়ুন-দিনের কবিতা
মুখ্যমন্ত্রীর অভিযোগ, বিজেপি সাংসদ বলেই অভিযুক্তকে গ্রেফতার করতে পারছে না দিল্লির পুলিশ। প্রতিবাদ মিছিল শুরু হয় হাজরা থেকে। শেষ হয় রবীন্দ্রসদনে। মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে ছিলেন ক্রীড়ামন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস, প্রতিমন্ত্রী মনোজ তেওয়ারি এবং ক্রীড়াজগতের বিশিষ্ট ব্যক্তিরা। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে এই মিছিলের উদ্যোক্তা ছিলেন অরূপ বিশ্বাস। ছিলেন মোহনবাগান, ইস্টবেঙ্গল, মহামেডান— তিন প্রধানের কর্মকর্তারা, খেলোয়াড়রা এবং প্রাক্তনীরাও। হাজরা থেকে রবীন্দ্রসদন পর্যন্ত মিছিল যতই এগোতে থাকে, বাড়তে থাকে দৈর্ঘ্য। পা মেলান পথচলতি মানুষও। দিল্লিতে আন্দোলনরত সাক্ষী মালিক, বিনেশ ফোগট, বজরং পুনিয়াদের প্রতি সংহতি জানালেন তাঁরা। তীব্র ধিক্কার জানালেন ভারতীয় কুস্তি সংস্থার প্রধান বিজেপি সাংসদ ব্রিজভূষণ শরণ সিংয়ের বিরুদ্ধে। যাঁর বিরুদ্ধে যৌন হেনস্তার অভিযোগ তুলেছেন ভারতের মহিলা কুস্তিগিররা। অনেকেরই বুকে প্ল্যাকার্ড— উই ওয়ান্ট জাস্টিস। আমরা ন্যায়বিচার চাই। মিছিলে অংশ নেন প্রাক্তন ফুটবলার দীপেন্দু বিশ্বাস, অ্যালভিটো, প্রাক্তন ফুটবলার বিধায়ক বিদেশ বসু, কৃষ্ণেন্দু রায়, গৌতম সরকার, প্রশান্ত বন্দ্যোপাধ্যায়, প্রাক্তন মহিলা ফুটবলার কুন্তলা ঘোষদস্তিদার এবং একঝাঁক ক্রীড়াব্যক্তিত্ব।
আরও পড়ুন-বিজেপি গেলে এক মাসের মধ্যে হাতকড়া পরিয়ে জেলে ঢোকাব: অভিষেক
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, আমরা কুস্তিগিরদের জন্য ন্যায়বিচার চাই। তাঁর অভিযোগ, রাজনৈতিক স্বার্থেই দোষীদের আড়াল করছে বিজেপি। গ্রেফতার করা হচ্ছে না আসল অপরাধীকে। তিনি দৃঢ়তার সঙ্গে জানিয়ে দেন, ন্যায়বিচারের দাবিতে আগামিদিনেও কুস্তিগিরদের পাশে থাকব আমরা। নেওয়া হবে একাধিক কর্মসূচি। বৃহস্পতিবার ময়দানে গোষ্ঠ পালের মূর্তির সামনে মোমবাতি জ্বালিয়ে প্রতিবাদে বসবেন বাংলার ক্রীড়াবিদরা। মিছিলে অংশগ্রহণকারী প্রাক্তন ফুটবলার গৌতম সরকারের প্রতিক্রিয়া, এটা আমাদের লজ্জা। যে মহিলা কুস্তিগিররা আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে দেশের মুখ উজ্জ্বল করছেন, হেনস্তার শিকার হতে হচ্ছে তাঁদেরই। প্রাক্তন অলিম্পিয়ান শ্যুটার জয়দীপ কর্মকারের দাবি, নিরপেক্ষ তদন্ত করে আসল দোষীকে অবিলম্বে কঠোর শাস্তি দেওয়া হোক।