প্রতিবেদন : শিক্ষা দফতরকে অন্ধকারে রেখে রাজ্যের একাধিক বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্যদের নিয়োগ করেন আচার্য-রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোস। শুক্রবার সাংবাদিক বৈঠকে এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে তোপ দাগেন রাজ্যের ১০টি বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান ও প্রাক্তন উপাচার্য। তাঁরা যখন রাজ্যপালের বিরুদ্ধে সরব, তখন উপাচার্য পদে দায়িত্ব নিয়ে বিকেলে রাজভবনে গিয়ে রাজ্যপালের সঙ্গে বৈঠক করে এলেন নবনিযুক্ত উপাচার্যরা।
আরও পড়ুন-হেলিকপ্টারে দুর্ঘটনাস্থলে যাচ্ছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, পরিস্থিতি পরিদর্শন করলেন রেলমন্ত্রী
এর পরই সাংবাদিক বৈঠকে শিক্ষামন্ত্রী সাফ জানিয়ে দিলেন, রাজ্যপালের নিয়োগ করা উপাচার্যদের কোনও স্বীকৃতি দেবে না শিক্ষা দফতর। সেই সঙ্গে রাজ্যপালের এই বেআইনি নিয়োগ নিয়ে আইনি পরামর্শ নেওয়া হচ্ছে বলেও জানিয়ে দেন খোদ শিক্ষামন্ত্রী।
এদিন বিকাশ ভবনে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ওঁদের তো একটা মানসম্মান আছে! বেআইনি পথে উপাচার্য-পদ নিলে কী হবে, তাঁরা বুঝবেন। আমরা আইনি পরামর্শ নিচ্ছি। যে ১১ জনকে নিয়োগের চিঠি পাঠানো হয়েছিল, তাঁদের মধ্যে দক্ষিণ দিনাজপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য পদ গ্রহণ করেননি গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক সৌরেন বন্দ্যোপাধ্যায়। বাকিরা পদে যোগ দিয়েছেন। শুধু তাই নয়, এদিন বিকেলে তাঁরা রাজভবনে গিয়ে রাজ্যপালের সঙ্গে বৈঠকও করেন। শিক্ষামন্ত্রী বলেন, সুপ্রিম কোর্ট বলেছে, রাজ্যের সঙ্গে আলোচনা করে উপাচার্য নিয়োগ করবেন রাজ্যপাল। কিন্তু ১১টি সরকার পোষিত বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য নিয়োগের ক্ষেত্রে এটা মানা হয়নি।
আরও পড়ুন-ও রাজা মশাই! আমরা ভাল মোটেই নেই
তাঁর মন্তব্য, গণতন্ত্রের ক্ষেত্রে ‘চেকস অ্যান্ড ব্যালান্স’ থাকে বলে জানতাম। কিন্তু কেন্দ্রীয় সরকার গণতন্ত্র শব্দটাকেই মান্যতা দিতে চাইছে না। কেন সার্চ কমিটিকে উপেক্ষা করে এই পদক্ষেপ, তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছে শিক্ষা দফতর। এই একই প্রশ্ন তুলেছেন উপাচার্যরা। সাংবাদিক বৈঠকে রাজ্যপালের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দেন তাঁরা। উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন উপাচার্য ওমপ্রকাশ মিশ্র বলেন, নিয়ম মেনে কাজ করছেন না রাজ্যপাল। বাঁকুড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন উপাচার্য দেবনারায়ণ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, উপাচার্য-পদ নিয়ে কিছু সমস্যা ছিল। কোর্টের নিয়ম মেনে রাজ্য সেগুলি সংশোধন করছে। কিন্তু রাজভবন সব কাজে বাধা দিচ্ছে। এর মধ্যেই এদিন এক অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোস বলেন, কোনও আলোচনা মানে সিদ্ধান্ত বা মান্যতা দেওয়া নয়।