প্রতিবেদন : সৃষ্টির আগেই ভয়ঙ্কর ধাক্কা। আর তাতেই ২৩ সেকেন্ডের মধ্যে চারপাশে নেমে এল এক বিশাল আঁধার। বালেশ্বরের কাছে জীবন পড়ে থাকল ছড়িয়ে-ছিটিয়ে। ছেঁড়া জুতো, মানিব্যাগ, জলের বোতল, বাচ্চার খেলনা, মোবাইলের হেডফোনের পাশে পড়ে অবিন্যস্ত এক কবিতার খাতাও। পাতায় পাতায় প্রেমের গল্প। হয়তো সে প্রেম শেষ হয়নি, কিংবা বৃষ্টির মতো ঝরে পড়তে চেয়েছিল। কিন্তু রক্তে ভিজে আজ সবই। কে এই প্রেমিক, কেই-বা প্রেমিকা?
আরও পড়ুন-দিনের কবিতা
এ প্রশ্নের উত্তর মেলেনি। চারিদিকে চাপ চাপ রক্ত, সাদা কাপড়ে ঢাকা দেওয়া সারিবদ্ধ লাশ আর এই ভালবাসার গল্পের সাক্ষী থাকল শুধু করমণ্ডল এক্সপ্রেস আর মৃত্যুপুরী বালেশ্বর। আপ করমণ্ডল এক্সপ্রেসের দুর্ঘটনায় নিহত-আহতের সংখ্যা ক্রমেই বাড়ছে। জীবন উদ্ধারের মাঝেই খুঁজে পাওয়া গিয়েছে কবিতার খাতাটি। চোখ বোলাতেই উঠে এল প্রেমের উপাখ্যান। কিন্তু লেখক কি লেখিকা কিংবা কার উদ্দেশে লেখা, কিছুই জানা হল না। সে খাতায় শুধু সুন্দর নকশার কারসাজিতে দক্ষ কলম ব্যক্ত করেছে মনের কথা, ‘ভালবাসা এই মন তোকে চায় সারাক্ষণ,/আছিস তুই মনের মাঝে/পাশে থাকিস সকাল সাঁঝে।/কী করে তোকে ভুলবে এই মন, তুই যে আমার জীবন…।’ পাতা ওল্টাতেই ভাঙা রেললাইনে অসমাপ্ত স্বপ্ন, ‘অল্প অল্প মেঘ থেকে হালকা হালকা বৃষ্টি হয়, ছোট্ট ছোট্ট গল্প থেকে ভালবাসা সৃষ্টি হয়…’। কিন্তু তারপর? সবই কি শূন্য?