সাংসদ দিলীপ ঘোষকে (Dilip Ghosh) তুলোধনা করলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় (Abhishek Banerjee)। মঙ্গলবার পশ্চিম মেদিনীপুরের নারায়ণগড়ের জনসভা থেকে অভিষেক বলেন, “পশ্চিম মেদিনীপুরের সাংসদ দিলীপ ঘোষ ৪ বছর ধরে সাংসদ পদে রয়েছেন। তিনি এখানকার মানুষের জন্য কী করেছেন? একটা কাজ দেখান। আমি কথা দিচ্ছি, যদিও দেখাতে পারেন তৃণমূলের হয়ে সমর্থন চাইতে আসব না।” একইসঙ্গে তৃণমূলের উন্নয়নের খতিয়ান তুলে ধরে কড়া সুরে বিজেপিকে তোপ দেগে অভিষেক বলেন, মানুষকে তার অধিকার থেকে বঞ্চিত করাই বিজেপি নেতাদের কাজ।
এদিষ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় আরও বলেন, “২০১৯ সালে আপনাদের একাংশের ভোটে এখান থেকে সাংসদ হন দিলীপ ঘোষ (Dilip Ghosh- Abhishek Banerjee)। ৪ বছর ধরে উনি সাংসদ পদে রয়েছেন। বাংলার ১ লাখ ১৫ হাজার কোটি টাকা কেন্দ্র আটকে রেখেছে, যার মধ্যে সাড়ে ৭ হাজার কোটি টাকা ১০০ দিনের কাজের, ৮ হাজার কোটি টাকা আবাসের। একদিনও সংসদে দাঁড়িয়ে এবিষয়ে মুখ খুলেছেন দিলীপ ঘোষ? এতদিন সাংসদ পদে থেকে আজ পর্যন্ত কেন্দ্রের কোনও মন্ত্রীকে এনে এখানকার মানুষের উন্নয়নের স্বার্থে একটা পর্যালোচনা বৈঠক করেছেন? একটা উদাহরন দিন। যদি দিতে পারেন আমি কথা দিচ্ছি আমি তৃণমূলের হয়ে আপনাদের কাছে ভোট চাইতে আসব না।
আরও পড়ুন: ৩ রাজ্যের পুলিশ-প্রধানদের বৈঠকে সংবাদ মাধ্যমের বিরুদ্ধে অভিযোগ করলেন মনোজ মালব্য
এর পাশাপাশি অভিষেক বলেন, “বিজেপি নেতারা আগে বলত লক্ষ্মীর ভাণ্ডার নাকি ভিক্ষা। আর এখন বিজেপির রাজ্য সভাপতি বলছেন, তাঁরা জিতলে নাকি মহিলাদের ২ হাজার টাকা করে দেবে। আমি ওনাদের জানাতে চাই, ১২ টা রাজ্যে ক্ষমতায় রয়েছে ওরা। এতগুলো রাজ্যের মধ্যে যদি একটা রাজ্যে সব মহিলাকে ১ হাজার টাকা করে দিতে পারে, আমি এখানে দাঁড়িয়ে কথা দিচ্ছি আমি রাজনীতি ছেড়ে দেব।” বিজেপির মিথ্যা প্রতিশ্রুতির হাঁড়ি ভেঙে এরপর অভিষেক বলেন, “কথা দিয়ে কথা রাখার নাম তৃণমূল, আর কথা দিয়ে পালিয়ে যাওয়ার নাম বিজেপি। আপনাদের বলেছিল ১৫ লাখ টাকা দেবে। দিয়েছে? বছরে ২ কোটি বেকারকে চাকরি দেবে। চাকরি হয়েছে? কৃষকের আয় নাকি ৩ গুন হবে? হয়েছে কি? কিন্তু মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যা বলেছেন তা করেছেন।”
এরপর পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার উন্নয়নের খতিয়ান তুলে ধরে অভিষেক বলেন, “শুধুমাত্র এই জেলায় ১১ লাখ ২২ হাজার মায়েদের লক্ষ্মীর ভাণ্ডার দেওয়া হয়েছে, ৯ লক্ষ ছাত্র ছাত্রীদের ঐক্যশ্রী দেওয়া হয়েছে, ১৩ লক্ষ ২৩ হাজার মায়েদের নামে স্বাস্থ্যসাথী কার্ড হয়েছে, ৮ লক্ষ ১১ হাজার কাস্ট সার্টিফিকেট দেওয়া হয়েছে দুয়ারে সরকার থেকে, ৪ লাখ ৭৬ হাজার কন্যাশ্রী দেওয়া হয়েছে, ৪ লাখের বেশি রূপশ্রী দেওয়া হয়েছে, ৪৬ লাখ ৫৭ হাজার খাদ্যসাথীতে বিনা পয়সায় রেশন, ৪৭১ টা নতুন রাস্তা হচ্ছে পথশ্রী প্রকল্পে, ৪ দফতর এই জেলার জন্য ১০ বছরে ৭ হাজার কোটি ব্যয় করেছে, বেলদায় ৬২ কোটি টাকা খরচে সুপার স্পেসালিটি হাসপাতাল তৈরি হয়েছে।” এর সঙ্গেই তৃণমূল সাংসদ জানান, “বিজেপি একটা পঞ্চায়েতে জিতলেই এরা চেষ্টা করবে মানুষের টাকা আটকে দেওয়ার। এরা মানুষকে তাঁর অধিকার থেকে বঞ্চিত করবে, অন্যদিকে তৃণমূল মানুষের প্রাপ্য তাঁকে দেবে। বিজেপির যদি ক্ষমতা থাকে তবে তথ্য পরিসংখ্যান নিয়ে আমার সঙ্গে লড়তে আসুক, চ্যালেঞ্জ করে বলছি ভোকাট্টা হয়ে যাবে।” এছাড়া দলের নেতাদের বার্তা দিয়ে তিনি জানান, “এই জেলায় ২১১ গ্রাম পঞ্চায়েতে ৩ মাস অন্তর পর্যালোচনা হবে। যেখানে যে পরিষেবা দেবে সে থাকবে, যে দেবে না সে থাকবে না।”