প্রতিবেদন : প্রধানমন্ত্রীর জন্মদিনে বিদেশ থেকে চিতা আনা নিয়ে ঢালাও প্রচার চালিয়েছিল কেন্দ্রের বিজেপি সরকার। প্রস্তুতিহীন অব্যবস্থায় সেই চিতাগুলি পর্যাপ্ত পরিকাঠামোর অভাবে মারা যাচ্ছে। তারপরেও চূড়ান্ত উদাসীন কেন্দ্র। পরিস্থিতি স্পর্শকাতর হলেও এখনই মধ্যপ্রদেশের কুনো জাতীয় উদ্যান থেকে অন্যান্য চিতাদের সরানো হচ্ছে না। বিগত পাঁচ মাসে মৃত্যু হয়েছে ৯টি চিতার। যা নিয়ে উদ্বেগ ও বিতর্ক বাড়ছে। এমন আবহেই কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ভূপেন্দ্র যাদব দাবি করলেন, এখনই চিতাদের পুনর্বাসনের কোনও পরিকল্পনা কেন্দ্রের নেই। তবে কেন্দ্রের পরিবেশ, অরণ্য ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রী স্বীকার করেছেন, পরিস্থিতি স্পর্শকাতর। জানা গিয়েছে, কুনোতে নবম যে চিতাটির মৃত্যু হয়েছে তার শরীরে বাসা বেঁধেছিল শয়ে শয়ে ম্যাগট। মধ্যপ্রদেশের কুনো ন্যাশনাল পার্কে (kuno national park) গত ২ অগাস্ট মৃত্যু হয় নবম চিতা ধাত্রীর। তার ময়নাতদন্ত রিপোর্ট প্রকাশ্যে আসতেই হইচই পড়ে গিয়েছে। ময়নাতদন্তে ধাত্রী চিতাটির শরীরে পাওয়া গিয়েছে ম্যাগট অর্থাৎ পোকার লার্ভা। সেই থেকেই তার শরীরে সংক্রমণ তৈরি হয়েছিল। যা শেষ পর্যন্ত মৃত্যুর কারণ হয়ে দাঁড়ায়। তবে চিতা কনজারভেশন ফান্ড সংস্থার বক্তব্য, ধাত্রীই প্রথম নয়। এর আগেও কুনোর জঙ্গলের তিন-তিনটি চিতার শরীরে বাসা বেঁধেছিল ম্যাগট। তাদেরও মৃত্যু হয়েছে এই ব্যাকটেরিয়া ইনফেকশনের জেরেই। ম্যাগট অর্থাৎ পোকার লার্ভা থেকে কুনোর চিতারা মিয়াসিসে আক্রান্ত হচ্ছে। যা শেষ পর্যন্ত মৃত্যুর কারণ হয়ে দাঁড়াচ্ছে।
আরও পড়ুন- বঞ্চনার বিরুদ্ধে তৃণমূলের মঞ্চে প্রতিবাদে শামিল বিজেপি বিধায়ক
একাধিক চিতামৃত্যু নিয়ে বিতর্ক হলেও কেন্দ্রীয় মন্ত্রী জানিয়েছেন, এই নিয়ে আলাদা করে কোনও পরিকল্পনা নেই। তাঁর বক্তব্য, বর্ষাকালে পোকার কামড় থেকে তৈরি হওয়া সংক্রমণের বিষয়টি নজরে পড়েছে। দু’টি চিতা ওই সংক্রমণেই মারা গিয়েছে। দক্ষিণ আফ্রিকা ও নামিবিয়ার বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে এই নিয়ে কথাও হয়েছে। গত বছর সেপ্টেম্বর থেকে প্রধানমন্ত্রীর সাধ মেটাতে আফ্রিকার একাধিক দেশ থেকে ভারতে চিতা আনা হয়। ১৭ সেপ্টেম্বর নামিবিয়া থেকে আটটি চিতা আনা হয় কুনোর (kuno national park) জঙ্গলে। এ বছর ১২ ফেব্রুয়ারি দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে আরও ১২টি চিতা আসে ভারতে। কিন্তু পরপর চিতামৃত্যুতে ভারতের জঙ্গলে পুনরায় চিতা ফিরিয়ে দেওয়ার যে পরিকল্পনা কেন্দ্র নিয়েছিল তা বড়সড় ধাক্কা খেল বলাই যায়। এদিকে সম্প্রতি এই বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছিল সুপ্রিম কোর্টও। শীর্ষ আদালতে ভর্ৎসনার মুখে পড়তে হয়েছিল কেন্দ্রকে। তিন সদস্যের বেঞ্চের তরফে মোদি সরকারকে স্পষ্ট নির্দেশ দেওয়া হল, দ্রুত পরিস্থিতির মোকাবিলায় সদর্থক পদক্ষেপ
করার জন্য।