মেঘভাঙা বৃষ্টি, হড়পা বানে বিধ্বস্ত হিমাচল প্রদেশ (Himachal Pradesh- Cloudburst-Landslide)। ক্রমশ বাড়ছে মৃতের সংখ্যা। নিখোঁজ অনেকে। টানা বৃষ্টিতে বিপর্যস্ত উত্তর ভারতের এই রাজ্য। হিমাচলে মেঘভাঙা বৃষ্টি, হড়পা বানে মৃতের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ৫০। এই সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা প্রশাসনের। রবিবার রাতের মেঘভাঙা বৃষ্টিতে সোলান, মাণ্ডি ও সিমলায় ২৫ জনের মৃত্যু হয়। সিমলায় শিবমন্দিরে ধসে মৃত্যু হয় ১০ জনের। প্রায় ২০ জনের খোঁজ মিলছে না।
এদিকে উত্তরাখণ্ডেও চলছে ভারী বৃষ্টি। টানা কয়েকদিন লাগাতার বৃষ্টির জেরে তাসের ঘরের মতো হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়েছে দেরাদুন ডিফেন্স কলেজ। স্টেট ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টারের মতে, বিপর্যয়ের কারণে হিমাচল প্রদেশে ৭৫২টি রাস্তা বন্ধ করা হয়েছে। ২৪ জুন এ রাজ্যে বর্ষা শুরু হয়েছিল। এই মরশুমে এখনও পর্যন্ত বৃষ্টির জেরে মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২৫৭। এর মধ্যে, ৬৬ জন ভূমিধস এবং বন্যার কারণে প্রাণ হারিয়েছেন। ১৯১ জন সড়ক দুর্ঘটনা বা অন্যান্য কারণে প্রাণ হারিয়েছেন। ৩২ জন নিখোঁজ এবং ২৯০ জন আহত হয়েছেন। সরকারি তথ্য অনুসারে, রাজ্যে এ পর্যন্ত ৯০টি ভূমিধস এবং ৫৫টি বন্যার ঘটনা লক্ষ্য করা গিয়েছে। অন্যদিকে, উত্তরাখণ্ডে দেরাদুন ও নৈনিতাল সহ ছয়টি জেলায় ভারী বৃষ্টির জন্য রেড অ্যালার্ট জারি করেছে আবহাওয়া দফতর। অবিরাম বৃষ্টিতে পার্বত্য রাজ্যটির বড় ক্ষতি হয়েছে। এ পর্যন্ত ৬০ জনের প্রাণহানির খবর মিলেছে। নিখোঁজ কমপক্ষে ১৭ জন। প্রবল বৃষ্টিতে ভূমিধসের কারণে জাতীয় সড়ক-সহ বহু রাস্তা বন্ধ হয়ে গিয়েছে। তেহরির কুঞ্জাপুরি বাগধারার কাছে ভূমিধসের কারণে হৃষীকেশ-চাম্বা জাতীয় মহাসড়ক অবরুদ্ধ হয়েছে। হৃষীকেশ-দেবপ্রয়াগ-শ্রীনগর জাতীয় সড়কে ভারী যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে গিয়েছে। ভারী বর্ষণে প্রায় ১ হাজার ১৬৯টি বাড়ি এবং বিপুল পরিমাণ কৃষি জমিও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
আরও পড়ুন- পরমাণুবিজ্ঞানী বিকাশ সিনহা
হিমাচল প্রদেশ এবং উত্তরাখণ্ডে মোট ৬২১টি রাস্তা আপাতত বন্ধ করে দিয়েছে প্রশাসন। কোনও কোনও জায়গা মেরামতির কাজ চলছে। শুধুমাত্র সিমলাতেই ৫৯টি রাস্তা বন্ধ রয়েছে। সিমলা এবং চণ্ডীগড়ের সংযোগকারী সিমলা-কালকা জাতীয় সড়কে ধসের কারণে গত দু’সপ্তাহ ধরে যান চলাচল ব্যাহত হচ্ছে। রবিবার প্রশাসনের তরফে ঘোষণা করা হয়েছে, বর্ষায় হিমাচলে (Himachal Pradesh- Cloudburst-Landslide) সাত হাজার কোটি টাকার বেশি ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। সাধারণ মানুষকে ঘরের ভিতরে থাকার এবং নদীর ধারে না যাওয়ার আবেদন জানানো হয়েছে। পাশাপাশি এই পরিস্থিতিতে পর্যটকদের সে রাজ্যে প্রবেশ না করার অনুরোধ করেছেন। হিমাচলে ফুঁসছে খরস্রোতা বিপাশা নদী।