প্রতিবেদন : কারণে-অকারণে গ্রাহকদের জরিমানা করে আয়ের নয়া পন্থা বেছে নিয়েছে ব্যাঙ্কগুলি। ঋণের ক্ষেত্রে সাধারণ উপভোক্তাদের কাছে তা আরও উদ্বেগের হয়ে উঠেছে। আবার এক শ্রেণির ব্যাঙ্ক ঋণের কিস্তি অনাদায়ে পেনাল্টির উপরেও সুদ ধার্য করে। এসব ক্ষেত্রে পেনাল্টি বা তার উপর সুদের বোঝায় নাকাল সাধারণ মানুষ। এই পরিস্থিতিতে শুক্রবার ব্যাঙ্কগুলির জন্য স্পষ্ট নির্দেশিকা দিল দেশের রিজার্ভ ব্যাঙ্ক। জানানো হল, পেনাল্টি চার্জ করা ব্যাঙ্কের রোজগার বাড়ানোর পথ হতে পারে না। পেনাল্টি ধার্য করা হয় ঋণ পরিশোধে শৃঙ্খলা রাখার জন্য। সেই বিধান অবশ্যই থাকবে। কিন্তু সেটাকে হাতিয়ার করে কিছু ব্যাঙ্ক যেভাবে মুনাফা করার চেষ্টা করছে তা বরদাস্ত নয়।
আরও পড়ুন-লক্ষ্য আরও কর্মসংস্থান, দ্বিগুণ রফতানি বাণিজ্য, রাজ্যের শিল্পায়নে বিশ্বব্যাঙ্কের ২৫০০ কোটি
দেশের শীর্ষ ব্যাঙ্কের তরফে এই মর্মে ৭ দফা নির্দেশিকা জারি করা হয়েছে। যেখানে বলা হয়েছে, ১. ঋণের শর্ত না মানলে যদি পেনাল্টি বা জরিমানা ধার্য করা হয় তা তবে তা পেনাল চার্জ হিসাবেই নিতে হবে। পেনাল ইন্টারেস্ট নেওয়া যাবে না। অর্থাৎ ঋণের সুদের উপর পেনাল ইন্টারেস্টের নামে অতিরিক্ত সুদ নেওয়া যাবে না। পেনাল্টি বা জরিমানার উপরেও কোনও সুদ নেওয়া যাবে না। ২. রেগুলেটেড ব্যাঙ্ক অর্থাৎ রিজার্ভ ব্যাঙ্কের অধীনে থাকা সমস্ত রাষ্ট্রায়ত্ত ও বেসরকারি বাণিজ্যিক ব্যাঙ্ক সুদের হারের সঙ্গে আর কোনও কম্পোনেন্ট জুড়তে পারবে না। অর্থাৎ যে সুদের হারে ঋণ দেওয়া হচ্ছে, তার উপর কোনও কারণ দেখিয়ে অতিরিক্ত সুদ নেওয়া যাবে না। ৩. কোন ব্যাঙ্ক কী হারে পেনাল চার্জ বা জরিমানা নেবে তার সুনির্দিষ্ট গাইডলাইন থাকা উচিত। যখন যেমন ইচ্ছা তেমন হারে জরিমানা নেওয়া যাবে না। এ ব্যাপারে প্রতিটি ব্যাঙ্ককে তাদের বোর্ড মিটিং ডেকে একটা নীতিগত সিদ্ধান্ত নিতে হবে।
আরও পড়ুন-সাংবাদিক খুন বিহারে সাক্ষ্য লোপাটে, ষড়যন্ত্র?
৪. যে হারে জরিমানা ধার্য করা হবে তা সঙ্গত হওয়া উচিত। এক-একরকম ঋণের জন্য এক-একরকম জরিমানা ধার্য করা যাবে না। অর্থাৎ কোনও বিশেষ লোন প্রোডাক্টের জন্য যেন পৃথক পেনাল চার্জ না থাকে। ৫. কোনও ব্যক্তি যদি ব্যবসা ছাড়া ব্যক্তিগত প্রয়োজনে ঋণ নেন তাহলে কিস্তি অনাদায়ে যে জরিমানা নেওয়া হবে তা যেন ব্যবসার জন্য দেওয়া ঋণের জরিমানার হারের বেশি না হয়। আরও সহজ করে বোঝালে, কোনও ব্যক্তিকে গাড়ি, বাড়ি বা ব্যক্তিগত ঋণের কিস্তি অনাদায়ের জন্য ধরা যাক X হারে জরিমানা দিতে হচ্ছে। সেই সুদের হার যেন ব্যবসায়িক ঋণের কিস্তি অনাদায়ের জরিমানার হারের তুলনায় বেশি না হয়।
আরও পড়ুন-হাতি মেরে দাঁত পাচারে অভিযুক্ত কেন্দ্রীয় বাহিনী
৬. কী কারণে কত হারে জরিমানা ধার্য করা হতে পারে তা যেন বাণিজ্যিক ব্যাঙ্কগুলি ঋণ দেওয়ার সময়ে তাদের ক্রেতাদের স্পষ্ট করে জানিয়ে দেয়। বাণিজ্যিক ব্যাঙ্কের ওয়েবসাইটেও সেই তথ্য পরিষ্কার করে লেখা থাকতে হবে। ৭. ঋণের শর্ত লঙ্ঘন করার জন্য যখনই কোনও ক্রেতার কাছে ব্যাঙ্ক চিঠি বা বার্তা পাঠাবে, তখনই পরিষ্কার করে জানাতে হবে যে এর জন্য কত টাকা জরিমানা হতে পারে। কী কারণে কোন যুক্তিতে সেই জরিমানা ধার্য করা হল, তাও ক্রেতাকে বুঝিয়ে বলতে হবে।