প্রতিবেদন : যাদবপুরে পড়ুয়া-মৃত্যুর ঘটনায় বারবার উঠে এসেছে সিসি ক্যামেরা না থাকার প্রসঙ্গ। হস্টেল থেকে ক্যাম্পাস, সব জায়গায় সিসি ক্যামেরা বসানোর দাবিতে সরব হয়েছে তৃণমূল ছাত্র পরিষদ। শনিবারই সিসি ক্যামেরা বসাতে যাদবপুর কর্তৃপক্ষকে দশ দিন সময় দিল টিএমসিপি। ২৪ ঘণ্টা আগেই যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএমসিপি ইউনিটের সভাপতির দায়িত্ব পেয়েছেন রাজন্যা হালদার। আর দায়িত্ব পেয়েই শনিবার ক্যাম্পাসে হাতে সিসি ক্যামেরা নিয়ে মিছিল করলেন রাজন্যারা।
আরও পড়ুন-এবার পরমাণু যুদ্ধের হুমকি লুকাশেঙ্কোর
পাশাপাশি এদিন যাদবপুর-কাণ্ডে ধৃত সৌরভ চৌধুরী-সহ আরও কয়েকজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করলেন কলকাতার পুলিশ কমিশনার বিনীত গোয়েল। শনিবার রাতে জয়দীপ ঘোষ নামে ২০২১-এর পাশ আউট এক প্রাক্তনীকে গ্রেফতার করে পুলিশ। ঘটনার রাতে পুলিশকে ঢুকতে বাধা দিয়েছিল কেতুগ্রামের এই প্রাক্তনী। যাদবপুরের র্যাগিংয়ের আবহে এদিন ফের সামনে এল শহরের আরও একটি ছাত্রাবাসে র্যাগিংয়ের অভিযোগ। অভিযোগ পেয়েই তৎপর হয়েছে পুলিশ।
আরও পড়ুন-ইন্ডিয়াকে ভয়, এবার ঝাড়খণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী সোরেনকে তলব ইডির
মাত্র ১০ দিন। এই সময়ের মধ্যে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস, হস্টেল-সহ সব জায়গায় কর্তৃপক্ষ সিসিটিভি না বসালে তৃণমূল ছাত্র পরিষদের কর্মীরাই সিসি ক্যামেরা লাগিয়ে দিয়ে আসবে। শনিবার রেজিস্ট্রারের কাছে গিয়ে এমনই দাবি জানিয়ে এলেন টিএমসিপি কর্মী-সমর্থকরা। এদিন ক্যাম্পাসে একটি মিছিল করে টিএমসিপি। মিছিলের নেতৃত্বে ছিলেন টিএমসিপির যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের নবগঠিত ইউনিটের সভানেত্রী রাজন্যা হালদার। রাজন্যা ও আরও কয়েকজনের হাতে ছিল সিসি ক্যামেরা। তাই নিয়ে মিছিল করে অরবিন্দ ভবনে রেজিস্ট্রারের কাছে যান। রাজন্যা বলেন, বাম, অতি-বামেরা ক্যাম্পাসে সিসি ক্যামেরা লাগাতে দিচ্ছে না। ওদের ভয় সিসি ক্যামেরা থাকলেই ওদের আদর্শের মুখোশ খুলে যাবে। এটা পড়ুয়াদের নিরাপত্তার জন্যই প্রয়োজন। টিএমসিপির মূল দাবি, ক্যাম্পাসে সিসি ক্যামেরা লাগাতে হবে। এর সঙ্গে পড়ুয়াদের ওপর নজরদারির কোনও সম্পর্কই নেই। টিএমসিপির মিছিলের সময় যথারীতি অরবিন্দ ভবনে অবস্থানে বসে পড়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের বামপন্থী ছাত্র সংগঠনগুলি। রাজন্যারা সেখানে আসতেই বাধা দেয় তারা, ওঠে স্লোগান। এ-নিয়ে কিছুটা উত্তেজনা ছড়ায়।
আরও পড়ুন-লাদাখে সড়ক দুর্ঘটনায় ৯ সেনা জওয়ানের মৃত্যুতে শোকপ্রকাশ অভিষেকের
এদিকে, শুক্রবার রাতে গ্রেফতার হওয়া তিনজনকে শনিবার আদালতে তোলা হলে বিচারক তাদের ৩১ অগাস্ট পর্যন্ত পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দেন। ধৃতের আইনজীবীরা জামিনের আবেদন জানালে সরকারি আইনজীবী তার বিরোধিতা করে বলেন, এরা সফল অপরাধী, কিন্তু খারাপ অভিনেতা। পুলিশি জেরায় উঠে আসছে আরও বিস্ফোরক তথ্য। প্রথমদিকে ধৃতেরা নানা ভাবে ভুল তথ্য দিয়ে পুলিশকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা চালাচ্ছিল। পুলিশি তৎপরতায় সে-চেষ্টা খুব একটা সফল হচ্ছে না।
আরও পড়ুন-লাদাখে খাদে গাড়ি পড়ে মৃত ৯ সেনা, মর্মাহত মুখ্যমন্ত্রী
যাদবপুরের ছাত্র-মৃত্যুর তদন্তে শনিবার আসরে নামলেন খোদ কলকাতার নগরপাল বিনীত গোয়েল। তিনি নিজে ধৃত সৌরভ চৌধুরী-সহ কয়েকজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন। এদিন লালবাজারে কমিশনারের ঘরে নিয়ে যাওয়া হয় সৌরভদের। সেখানে কিছুক্ষণ ধৃতদের জিজ্ঞসাবাদ করেন তিনি। এরই মধ্যে শনিবার শহরের এক হস্টেলে ফের র্যাগিংয়ের অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগ সামনে আসতেই তৎপরতার সঙ্গে ব্যবস্থা নিয়েছে পুলিশ। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের বালিগঞ্জ সায়েন্স কলেজের ছাত্র বিশ্বজিৎ হাজরার অভিযোগ প্রকাশ্যে আসতেই পুলিশের হস্তক্ষেপে শনিবার আলিপুর আদালতে গোপন জবানবন্দি দেন ওই পড়ুয়া। অভিযোগ, গত চার বছর ধরে হস্টেলে সিনিয়রদের হাতে তিনি র্যাগিংয়ের শিকার হয়েছেন। এর মাঝেই যাদবপুরে গণিতের অধ্যাপক বুদ্ধদেব সাউকে অন্তর্বর্তীকালীন উপাচার্য নিয়োগ করা হয়েছে।