প্রতিবেদন : দিল্লিতে আন্দোলনের সময় প্রথম বলা হয় দেশ কি গদ্দারো কো গোলি মারো শালোকো। পরবর্তীতে বিজেপি নেতা ও মন্ত্রী অনুরাগ ঠাকুর কুখ্যাত এই স্লোগানকে দেশে ছড়িয়ে দেন। মোদ্দা কথা, বিজেপির উল্টোদিকে যারা, তারাই দেশদ্রোহী, গদ্দার— তাদের গুলি করে মারা উচিত। এই পেটেন্ট স্লোগানটি এবার বাংলাতেও আমদানি করল বিজেপি। শুক্রবার এবিভিপির মিছিল থেকে শোনা গেল গোলি মারো শালোকো। শুধু কলকাতাতেই নয়, শিলিগুড়িতেও বিজেপির মিছিল থেকে একই স্লোগান। শুক্রবার যাদবপুরে (Jadavpur Case) ছাত্রমৃত্যুর অভ্যন্তরীণ তদন্ত রিপোর্টে বলা হয়েছে, ৯ অগাস্ট রাতে র্যাগিং হয়েছিল। গ্রেফতার হওয়া অভিযুক্ত ১৩ জন-সহ আরও অনেকে ছিল। পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয়ে সেনার পোশাকে একদল তরুণ-তরুণীর প্রবেশ নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। তাদের পরিচয় নিয়ে প্রবল কৌতূহল। পুলিশ স্বতঃপ্রণোদিত মামলা রুজু করে উপাচার্য ও ডিন অফ স্টুডেন্টকে তলব করেছে। তবে এখনও ক্যাম্পাসে সিসি ক্যামেরা বসেনি।
আরও পড়ুন- তল্লাশির সময় লিপস অ্যান্ড বাউন্ডসের তথ্যের হেরফের করার অভিযোগ ইডির বিরুদ্ধে লালবাজারে
যাদপুরের (Jadavpur Case) মৃত ছাত্রর খুনিকে গুলি করে মারার কথা বলছে বিজেপির ছাত্র সংগঠন। আর হবে নাই বা কেন? বৃহস্পতিবার তাদের দাদা গদ্দার অধিকারী ধর্ষকদের ‘এনকাউন্টার’-এ মারার কথা বলেছেন। ঔদ্ধত্য আর কাকে বলে! একটা সময় দিলীপ ঘোষ বলেছিল উত্তরপ্রদেশের মতো বাংলাতেও বুলডোজার চালানো উচিত। এরপর ‘এনকাউন্টার’ বলা হল। এবার তাদের ছাত্র সংগঠন বলছে গোলি মারা শালোকো। চূড়ান্ত অগণতান্ত্রিক-বিচার ব্যবস্থাকে নিজেদের হাতে তুলে নেওয়া-স্বৈরাচারী মনোভাব না থাকলে গোলি মারা শালোকো বলা যায় না। পরিষ্কার বোঝা যাচ্ছে বিচার ব্যবস্থার প্রতি এদের বিন্দুমাত্র আস্থা নেই। বিজেপির উল্টো দিকে মানেই সে গদ্দার। ‘গোলি মারা শালোকো’।
গোটা ঘটনার তীব্র নিন্দা করেছে তৃণমূল কংগ্রেস। দলের স্পষ্ট বক্তব্য, দায়িত্বজ্ঞানহীন সস্তা রাজনীতির ফসল হচ্ছে এই স্লোগান। তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক ও মুখপাত্র কুণাল ঘোষ শুক্রবার সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে বলেন, এগুলো জঙ্গিদের ভাষা, হিংসার ভাষা। গণ্ডগোল করার জন্য, উত্তেজনা সৃষ্টির জন্য, অরাজকতার জন্য এই ধরনের ভাষা ব্যবহার করছে বিজেপি ও তার শাখা সংগঠনগুলি। তাঁর সংযোজন গদ্দার অধিকারী বলেছেন এনকাউন্টার কর। এরা বলছেন ‘গোলি মারো শালোকো’। যাদবপুরে বামপন্থীদের ঘুঘুর বাসা। ওরা র্যাগিংয়ে সেরা। এখনও গণ্ডগোল পাকিয়ে চলেছে। তৃণমূল কংগ্রেসের সরকার তদন্ত করছে। পড়ুয়াদের পাশে রয়েছে রাজ্য। আমর এই ধরনের বিকৃত স্লোগানের বিরুদ্ধে তীব্র ধিক্কার জানাই।