প্রতিবেদন: মোদি সরকারের স্তাবকতা করতে গিয়ে সীমা ছাড়ালেন পাঞ্জাবের রাজ্যপাল। জনগণের ভোটে নির্বাচিত রাজ্য সরকার ফেলে দিয়ে রাষ্ট্রপতি শাসনের হুমকি দিলেন। এই ঘটনায় রাজনৈতিক চাঞ্চল্য তৈরি হয়েছে।
বাংলা-সহ অন্যান্য বিরোধী-শাসিত রাজ্যের মতো আপ নেতৃত্বাধীন পাঞ্জাবেও রাজ্যপালের সঙ্গে প্রশাসনের বিবাদ চরমে উঠেছে। রাজ্যপালের সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রীর বিবাদ সুপ্রিম কোর্ট পর্যন্ত গড়িয়েছে। এবার সেই বিতর্কে ঘৃতাহুতি দিলেন রাজ্যপাল বানোয়ারিলাল পুরোহিত (Banwarilal Purohit)। তাঁর অভিযোগ, রাজ্যের মাদক পাচার চক্র নিয়ে বারবার চিঠি লেখা সত্ত্বেও মুখ্যমন্ত্রী ভগবন্ত মান তাঁকে কোনও তথ্য দিচ্ছেন না। তিনি জানিয়েছেন, রাজ্য সরকার দ্রুত পদক্ষেপ না করলে রাষ্ট্রপতি শাসনের সুপারিশ করতে তিনি বাধ্য হবেন।
রাজ্যপাল মুখ্যমন্ত্রী মানকে চিঠি লিখে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন, দ্রুত তাঁর চিঠির জবাব না দিলে তিনি সংবিধানের ৩৫৬ নম্বর অনুচ্ছেদ প্রয়োগ করে রাজ্য সরকারকে বরখাস্ত করতে রাষ্ট্রপতিকে চিঠি লিখবেন। মুখ্যমন্ত্রীর উদ্দেশে তিনি আরও জানিয়েছেন, চরম পদক্ষেপ করার আগে সতর্ক হোন। আমাকে উপেক্ষা করলে বড় খেসারত দিতে হতে পারে।
আরও পড়ুন- গণপিটুনি, ঘৃণাভাষণ: কেন্দ্রের কাছে রিপোর্ট তলব সুপ্রিম কোর্টের
সম্প্রতি কেন্দ্রের একটি রিপোর্টে বলা হয়েছে, পাঞ্জাবের প্রতি ৫ জনের মধ্যে একজন মাদকাসক্ত। সে-রাজ্যে এখনও মাদকব্যবসার রমরমা। সেই বিষয়ে মুখ্যমন্ত্রীর কাছে রিপোর্ট চেয়েছিলেন রাজ্যপাল। কিন্তু সেই রিপোর্ট এখনও জমা দেননি মুখ্যমন্ত্রী ভগবন্ত মান। এরপরই পাঞ্জাবের রাজ্যপাল (Banwarilal Purohit) চিঠি দিয়ে সাফ জানিয়েছেন, মুখ্যমন্ত্রী যদি সরকারি চিঠির জবাব না দেন, তাহলে তিনি রাষ্ট্রপতি শাসন জারির সুপারিশ করতে বাধ্য হবেন। রাজ্যপাল পুরোহিতের স্পষ্ট অভিযোগ, চিঠির জবাব না দিয়ে রাজ্যপালের কাজে বাধা সৃষ্টি করছেন মুখ্যমন্ত্রী। পাশাপাশি ভগবন্ত মানের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা করারও হুঁশিয়ারি দিয়েছেন রাজ্যপাল। তবে রাজনৈতিক মহলের মতে, পাঞ্জাবের রাজ্যপাল যে কাণ্ড ঘটিয়েছেন তা কার্যত নজিরবিহীন। ৩৫৬ নম্বর অনুচ্ছেদ প্রয়োগ করে রাজ্য সরকারকে বরখাস্ত করতে রাজ্যপাল কেন্দ্রের কাছে সুপারিশ করতে পারেন। এমন দৃষ্টান্ত একাধিক আছে। কিন্তু কোনও রাজ্যপাল ৩৫৬ নম্বর অনুচ্ছেদ প্রয়োগের হুঁশিয়ারি দিচ্ছেন তা বেনজির। কোনও রাজ্যপালের এভাবে মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি দেওয়ার ঘটনাও বিরল। মোদি সরকারের নির্দেশেই রাজ্যপাল এই কাণ্ড ঘটিয়েছেন বলে মত বিরোধীদের।