৩৭০ ধারা খারিজ নিয়ে মত জানানোয় বরখাস্ত অধ্যাপক, অসন্তোষ জানাল সুপ্রিম কোর্ট

Must read

প্রতিবেদন: সরকারি নীতির প্রতিবাদ করায় রাজরোষ। বরখাস্ত হয়েছেন অধ্যাপক। এর প্রতিবাদে দেশের সর্বোচ্চ আদালতের দ্বারস্থ হয়েছেন তিনি। তার পরিপ্রেক্ষিতে কেন্দ্রের আচরণ নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করে শীর্ষ আদালত। অধ্যাপক জহুর আহমেদ বাট জম্মু-কাশ্মীরের এক সরকারি কলেজে রাষ্ট্রবিজ্ঞান পড়ান। সম্প্রতি এই কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের প্রশাসন তাঁকে চাকরি থেকে সাময়িক বরখাস্ত করেছে। এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হন অধ্যাপক। তার প্রেক্ষিতে সোমবার প্রশাসনকে বরখাস্তের সিদ্ধান্ত পর্যালোচনার নির্দেশ দিয়ে সর্বোচ্চ আদালত। কী অপরাধে বরখাস্ত হলেন অধ্যাপক? জানা গিয়েছে, জহুর আহমেদ বাট একজন ডিগ্রিধারী আইনজ্ঞও। উপত্যকায় ৩৭০ ধারা (Section 370) খারিজের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে দাখিল হওয়া অনেক মামলার একটির আবেদনকারী তিনিও। তাঁর অপরাধ, গত ২৩ অগাস্ট সুপ্রিম কোর্টে সশরীরে হাজির হয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের সিদ্ধান্তের জোরালো বিরোধিতা করেছিলেন। সরকারি সিদ্ধান্তকে সংবিধানবিরোধী ও যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোর পরিপন্থী বলে অভিহিত করেছিলেন। মোদি সরকারের বিরুদ্ধে এই প্রতিবাদ হজম হয়নি কেন্দ্রের। তাই ২৫ অগাস্ট জম্মু-কাশ্মীরের শিক্ষা বিভাগ তাঁকে সাসপেন্ড করে। অধ্যাপক এই বিষয়ে শীর্ষ আদালতের দ্বারস্থ হন। এর পরিপ্রেক্ষিতে সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়ের নেতৃত্বাধীন সাংবিধানিক বেঞ্চ শিক্ষা বিভাগের প্রশাসনিক সিদ্ধান্ত খতিয়ে দেখার নির্দেশ দিয়েছেন। অ্যাটর্নি জেনারেল আর ভেঙ্কটরামানি ও সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতাকে সোমবার প্রধান বিচারপতি বলেন, উপরাজ্যপাল মনোজ সিনহাকে তাঁরা যেন বিষয়টি পর্যালোচনা করার কথা বলেন। আদালতে হাজির হয়ে সওয়াল করা ও সাসপেনশনের আদেশের মধ্যে ব্যবধান মাত্র এক দিনের। শীর্ষ আদালতে সওয়াল করাই যদি সাময়িক বরখাস্তের কারণ হয়, তবে তা উদ্বেগের।সুপ্রিম কোর্টের সাংবিধানিক বেঞ্চের কাছে অধ্যাপকের সাসপেনশনের বিষয়টি সোমবার উপস্থাপন করেন আইনজীবী কপিল সিব্বাল। তিনি বলেন, ওই অধ্যাপক দুদিনের ছুটি নিয়ে দিল্লিতে এসে তাঁর মতামত জানিয়েছিলেন। দেশের সুপ্রিম কোর্টে নিজের মতামত রাখার জন্য একজন অধ্যাপককে সাময়িক বরখাস্ত হতে হলে, তা অত্যন্ত লজ্জার ও নিন্দনীয়। জম্মু-কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা রক্ষাকারী সংবিধানের ৩৭০ অনুচ্ছেদ (Section 370) খারিজ–সংক্রান্ত এক গুচ্ছ মামলার শুনানি সুপ্রিম কোর্টের সাংবিধানিক বেঞ্চে চলছে। প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড় সেই সাংবিধানিক বেঞ্চের নেতৃত্ব দিচ্ছেন। অন্য চার বিচারপতি হলেন সঞ্জয় কিষাণ কাউল, সঞ্জীব খান্না, বিআর গাভাই ও সূর্যকান্ত। অধ্যাপক বরখাস্ত ইস্যুতে কপিল সিব্বালের যুক্তি তাঁরা মেনে নেন। বিচারপতি গাভাই বলেন, এমন হলে সেটা প্রতিশোধস্পৃহার নামান্তর। এত স্বাধীনতার কথা বলে তাহলে লাভ কী? এসজি তুষার মেহতার উদ্দেশে বিচারপতি সঞ্জয় কিষান কাউল বলেন, এজলাসে সওয়াল করা ও সাসপেনশনের নির্দেশ কি একেবারে গায়ে গায়ে নয়? এজি ও এসজিকে প্রধান বিচারপতি বলেন, উপরাজ্যপালের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে কথা বলুন। অন্য কারণ থাকলে অন্য বিষয়। কিন্তু এজলাসে সওয়াল করাই যদি অপরাধ হয়, তা হলে বিষয়টি যথেষ্ট উদ্বেগের।

আরও পড়ুন-স্কুলে নিষেধ হল আবায়া পোশাক, ফতোয়া ফ্রান্সে

Latest article