প্রতিবেদন: জি-২০ সম্মেলনের শীর্ষ বৈঠকে অংশ নেওয়া বিদেশি রাষ্ট্রনেতাদের কাছে রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুর নৈশভোজের আমন্ত্রণপত্র প্রকাশ্যে আসার পরই জল্পনা উঠতে শুরু করেছে লোকসভা ভটের আগেই কী দেশের নাম ‘ইন্ডিয়া’ বদলে ‘ভারত’ করতে চলেছে মোদি সরকার? তা যদি সত্যি হয়ে থাকে, তবে মোদির সাধের ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’ প্রকল্পের ভবিষ্যৎ কী হবে? কী হবে ‘ডিজিটাল ইন্ডিয়া’ (Make in India- Digital India) প্রকল্পের নাম? শুধু তাই নয়, আরও অনেক কিছুরই নাম বদলাতে হবে মোদির সরকারকে। তবে এই নামবিভ্রকাটে বিতর্কে পড়তে হবে না কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধীকে। তাঁর ‘ভারত জোড়ো যাত্রা’ কিন্তু একই থাকবে।
মোদি সরকার দেশের নাম ‘ইন্ডিয়া’ থেকে ‘ভারত’ করলে ঠিক কী কী প্রকল্পের নাম বদলাতে হবে? শুধু ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’ (Make in India- Digital India) প্রকল্প নয়, গত ন’বছরের প্রধানমন্ত্রিত্বে ‘ইন্ডিয়া’ নাম সামনে রেখে একাধিক কর্মসূচি এবং স্লোগানের কথা বলেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। প্রতিরক্ষা সরঞ্জামের নকশা প্রস্তুতির ক্ষেত্রে ‘ডিজাইনড ইন ইন্ডিয়া’, পরিষেবা ক্ষেত্রে ‘ডিজিটাল ইন্ডিয়া’র কথা বলেছেন তিনি। তাঁর সরকারের জাতীয় স্বার্থকে অগ্রাধিকার দেওয়ার নীতির কথা বলতে গিয়ে একাধিক বার তাঁর মুখে শোনা গিয়েছে ‘ইন্ডিয়া ফার্স্ট’ স্লোগান। সংসদের আসন্ন বিশেষ অধিবেশনে দেশের নাম বদলে গেলে মোদির সাধের যে প্রকল্পগুলির সঙ্গে ‘ইন্ডিয়া’ নামটি জড়িয়ে রয়েছে, সেগুলির কী হবে? তা নিয়ে এখন থেকেই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। সূত্রের খবর, ওই অধিবেশনে বিজেপি সাংসদ প্রবেশ বর্মা একটি ‘প্রাইভেট মেম্বারস বিল’ আনতে পারেন। সেখানে সংবিধানের প্রস্তাবনা থেকে ‘ইন্ডিয়া’ শব্দটি বাদ দেওয়ার প্রস্তাব থাকবে। প্রসঙ্গত, আগামী ৯ সেপ্টেম্বর রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু জি-২০ সমাবেশে অংশ নেওয়া রাষ্ট্রনেতাদের একটি নৈশভোজে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন। সেই উপলক্ষে আমন্ত্রণপত্রও যাচ্ছে নিমন্ত্রিতদের কাছে। সেই আমন্ত্রণপত্র ঘিরেই তোলপাড় পড়ে গিয়েছে জাতীয় রাজনীতিতে। কারণ, ভারতের রাষ্ট্রপতি কাউকে কোনও চিঠি লিখলে তাতে চিরাচরিত ভাবে লেখা থাকে ‘প্রেসিডেন্ট অফ ইন্ডিয়া’ কথাটি। কিন্তু জি-২০-র রাষ্ট্রনেতাদের আমন্ত্রণ জানানোর চিঠিতে লেখা হয়েছে ‘প্রেসিডেন্ট অফ ভারত’ কথাটি লেখা হয়েছে। এর পরেই প্রশ্ন উঠেছে, আচমকা এমন বদলের কারণ কি?
আরও পড়ুন- ছড়িয়ে পড়তে পারে মহামারী, ভয়াবহ অবস্থা শরণার্থী শিবিরে
এদিকে আগামী ১৮ থেকে ২২ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বিশেষ অধিবেশন ডাকা হয়েছে সংসদের উভয়কক্ষে। মনে করা হচ্ছে এই বিশেষ অধিবেশনেই পেশ হতে পারে দেশের নাম থেকে ‘ইন্ডিয়া’ মুছে ফেলার প্রস্তাব। তবে মোদি সরকারের এমন পদক্ষেপে যারপরনাই ক্ষুব্ধ বিরোধী শিবির। বিরোধীদের কটাক্ষ, ‘ইন্ডিয়া’ জোটের আতঙ্কেই দেশের নাম মুছে ফেলতে উদ্যোগী হয়েছে মোদি সরকার। এ প্রসঙ্গে কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক জয়রাম রমেশ এক্স-এ মঙ্গলবার লিখেছেন, ‘‘তা হলে যেটা শুনেছিলাম, সেটাই সত্যি! আগামী ৯ সেপ্টেম্বর রাষ্ট্রপতি ভবনে জি২০ নেতাদের নৈশভোজের আমন্ত্রণপত্রে লেখা হয়েছে ‘প্রেসিডেন্ট অফ ভারত’, অথচ চিরাচরিত ভাবে ‘প্রেসিডেন্ট অফ ইন্ডিয়া’ লেখাই দস্তুর।’’