সংবাদদাতা, হুগলি : নিত্যযাত্রার একঘেয়েমিতে এ এক ব্যতিক্রমী আনন্দের অনুভূতি। ভোর পাঁচটা চল্লিশে কাটোয়া থেকে ছেড়ে এসে ৩৭৯১৪ কাটোয়া লোকাল হাওড়া পৌঁছায় ৮.৪৫ মিনিটে। প্রতিদিন দীর্ঘ ১৪৫ কিলোমিটার এই পথ একসঙ্গে কাটান তাঁরা। দীর্ঘপথে কখনও কুশল বিনিময়, কখনও সুখদুঃখের গল্প, মুড থাকলে জমাটি আড্ডাও। একটু-আধটু ঝগড়াঝাটি যে হয় না তা নয়, কিন্তু সবকিছুর মধ্যে দিয়েই কোথায় যেন একটা আত্মিক বন্ধনের ছোঁয়া। তাঁরা কাটোয়া লোকালের চার নম্বর কামরার নিত্যযাত্রী। চলন্ত ট্রেনের এই কামরাতেই সোমবার বিশ্বকর্মার আরাধনায় মেতে উঠলেন নিত্যযাত্রীরা।
আরও পড়ুন-ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ তৈরি করছে বন দফতর
ট্রেনের কামরার মধ্যেই রীতিমতো পুরোহিত ডেকে মূর্তি পুজো করা হল ঢাকঢোল-কাঁসরঘণ্টা বাজিয়ে। পুজোর শেষে সকলের জন্য প্যাকেটের ব্যবস্থাও ছিল। অন্যান্য সাধারণ যাত্রীদেরও করানো হল মিষ্টিমুখ। ট্রেন ব্যান্ডেল স্টেশনে ঢোকামাত্রই কামরার ভেতর থেকে ভেসে এল উল্লাস। প্রতিবছরের মতো এবারেও নিজেরাই চাঁদা তুলে এই পুজোর ব্যবস্থা করেছেন এই কামরার নিত্যযাত্রীরা।
আরও পড়ুন-গণেশ পুজোর উদ্বোধনে সায়নী
চলন্ত ট্রেনে পুজোর আয়োজকদের কেউ-বা কলকাতা বড়বাজারের কোনও দোকানে খুব কম বেতনের কাজ করেন, কেউ আবার সরকারি বড় অফিসার, কেউ সাংবাদিক, কেউ-বা কলেজ-পড়ুয়া। কিন্তু এই তিন ঘণ্টার যাত্রাপথে সকলের একটাই পরিচয়, সবাই নিত্যযাত্রী। প্রচণ্ড ঠান্ডা হোক বা গরম বা বর্ষা, এই নিত্যযাত্রীদের দিন শুরু হয় এই তিন ঘণ্টার একসঙ্গে ট্রেনযাত্রার মধ্যে দিয়েই। কার্যত এই চেনা মুখগুলোর সঙ্গে দেখা হওয়ার পর থেকেই। সোমবারের বিশ্বকর্মা পুজোর আয়োজন আরও কাছাকাছি আসার সুযোগ করে দিল সকলকে।