সংবাদদাতা, কাকদ্বীপ : ভিন রাজ্যে পাচার হওয়া সুন্দরবনের পাঁচ মেয়েকে উদ্ধার করল ঢোলাহাট থানার পুলিশ। এদের মধ্যে দু’জন নাবালিকা। দিল্লির সরিতা বিহার থানার মদনপুর খাদর এলাকার এক গোপন ডেরা থেকে এদের উদ্ধার করা হয়েছে। এই পাচার চক্রের অন্যতম হোতা সঞ্জু হালদারকেও গ্রেফতার করেছে পুলিশ। সে কলকাতার লেক থানার রহিম ওস্তাগার রোডের বাসিন্দা। রবিবার তাকে কাকদ্বীপ মহকুমা আদালতে তোলা হলে ৭ দিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দেন বিচারক। উদ্ধার হওয়া মেয়েদের স্বাস্থ্য পরীক্ষার পর হোমে পাঠানো হয়েছে। সুন্দরবন পুলিশ জেলার সুপার ভাস্কর মুখার্জি জানান, এফআইআর হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই আমরা তদন্ত শুরু করি।
উল্লেখ্য, গত মাসের শেষে ঢোলাহাটের বাসিন্দা বছর তিরিশের এক গৃহবধূকে কাজ পাইয়ে দেওয়ার নামে দিল্লিতে নিয়ে যায় ঢোলাহাটের মোল্লাপাড়ার দম্পতি বাবুল হোসেন মোল্লা ওরফে বাবলু ও জিন্নাতুন বিবি। সেখানে একটি ঘরে তাঁকে আটকে রেখে বিক্রি করার চেষ্টা করে বলে অভিযোগ। পরে ওই গৃহবধূ কোনক্রমে বাড়ি ফেরেন। গৃহবধু বাড়ি ফিরে থানায় লিখিত অভিযোগ জানান। আরও ৫ জন মেয়েকে ওখানে আটকে রাখা হয়েছে বলে পুলিশ জানতে পারে। রবিবার রাতে পুলিশ বাবুল হোসেন মোল্লা ও তার স্ত্রী জিন্নাতুন বিবিকে গ্রেফতার করে ১০ দিনের পুলিশ হেফাজতে নিয়ে পাচার হওয়া মহিলাদের উদ্ধারে নামে।
আরও পড়ুন-ত্রিপুরায় ফের আক্রান্ত তৃণমূল কংগ্রেস কর্মীরা
ঢোলাহাট থানার তদন্তকারী অফিসার শুভেন্দু দাসের নেতৃত্বে পুলিশের একটি টিম মঙ্গলবার পাচারকারী জিন্নাতুন বিবিকে নিয়ে দিল্লির উদ্দেশ্যে রওনা দেয়। সেখানে দিল্লি পুলিশ ও শক্তিবাহিনী নামে এক এনজিওর সাহায্য নিয়ে বুধবার রাতে সরিতা বিহার খানার মদনপুর খাদর এলাকার এক গোপন ডেরায় হানা দেয় পুলিশ। সেখান থেকে উদ্ধার হয় ওই ৫ মেয়ে। ঘটনাস্থল থেকে ধরা পড়ে মূল অভিযুক্ত শাকরেদ সঞ্জু হালদার। অপর অভিযুক্ত নুর আলম পলাতক। অভিযোগ, স্কুল বন্ধের সুযোগ নিয়ে কাজের টোপ দিয়ে গ্রামেরই মহিলা জিন্নাতুন ওদের নিয়ে আসে দিল্লিতে। সেখানে মাথাপিছু ১৫ হাজার টাকা দিয়ে এক ব্যক্তি ওদের কিনে নেয়। পুলিশ সূত্রের দাবি, সেই ব্যক্তি মেয়েদের ওই লোকটির হাতে ৭৫ হাজার টাকার বিনিময়ে তুলে দেয়। পরে সেই মেয়েদের লখনউয়ে বিক্রি করে দিতে যাচ্ছিল বলে পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে। উদ্ধার হওয়া মেয়েদের একাধিকজনকে যৌননিগ্রহ ও ধর্ষণের অভিযোগ রয়েছে।