প্রতিবেদন : প্রাকৃতিক দুর্যোগের মোকাবিলায় প্রশাসনকে দৃঢ় পদক্ষেপের নির্দেশ দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (CM Mamata Banerjee)। স্পষ্ট জানিয়ে দিলেন, কাজে গাফিলতি কোনওভাবেই বরদাস্ত করা হবে না। আবহাওয়ার পরিস্থিতি নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী শনিবার সমস্ত জেলাশাসক, পুলিশ সুপার, মহকুমা শাসক, বিডিওদের সঙ্গে ভার্চুয়াল পর্যালোচনা বৈঠক করেন। বৈঠকে দুর্বল নদীবাঁধগুলির উপরে নজরদারি বৃদ্ধির পাশাপাশি সেখানে বসবাসকারী মানুষজনকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। রাজ্যে ভারী বৃষ্টি পরিস্থিতি নিয়ে এদিনের বৈঠকে উদ্বেগ প্রকাশ করেন মুখ্যমন্ত্রী (CM Mamata Banerjee)। নিম্নচাপের জেরে দক্ষিণবঙ্গের উপকূলবর্তী জেলাগুলোতে শুরু হয়েছে ভারী বৃষ্টি। রাজ্য সরকার দুই ২৪ পরগনা, পূর্ব মেদিনীপুরের জেলা প্রশাসনকে পর্যাপ্ত ত্রাণসামগ্রী মজুত রাখার নির্দেশ দিয়েছে। ঘূর্ণাবর্তের জেরে একাধিক জেলায় বন্যা পরিস্থিতি দেখা দিয়েছে। এমন অবস্থা মোকাবিলায় কী কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে তা জেলাশাসকদের থেকে জানতে চান মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, যদি কেউ নিজের কাজে গাফিলতি করেন, তবে অবিলম্বে তাঁকে সরিয়ে দিতে হবে। মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, নিচু এলাকার বসতি অবিলম্বে সরাতে হবে। প্রয়োজনে ত্রাণ শিবির খুলে ওই এলাকার মানুষকে স্থানান্তরিত করতে হবে। শনি ও রবিবার মৎস্যজীবীদের সমুদ্রে না যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। মানুষ দুর্যোগের মধ্যে যাতে বিদ্যুৎবিচ্ছিন্ন পরিস্থিতিতে না পড়েন সেদিকে খেয়াল রাখতে বলেছেন মুখ্যমন্ত্রী। ২৪ ঘণ্টা কন্ট্রোল রুম চালু করার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। শনিবারই ভারী বর্ষণে বাঁকুড়ায় দেওয়াল চাপা পড়ে একই পরিবারের তিন শিশুর মৃত্যু হয়েছে। মেখলিগঞ্জে বজ্রপাতে মৃত্যু হয়েছে এক ব্যক্তির। এক ব্যক্তি আহত হয়েছেন। শনিবার সকাল থেকেই অঝোর ধারায় বৃষ্টি নামে কলকাতা-হাওড়া এবং সংলগ্ন এলাকায়। ব্যাপক বৃষ্টিতে মহানগরীর বেশ কিছু এলাকায় প্রাথমিকভাবে জল দাঁড়িয়ে গেলেও তা নেমেও গেছে অত্যন্ত দ্রুত। মহানাগরিক ফিরহাদ হাকিমের নির্দেশে এদিন ভোর থেকেই নজরদারি চালান নিকাশি বিভাগের মেয়র পারিষদ তারক সিং। তবে পুজোর কেনাকাটা আর কবে হবে বলে যাঁরা দুশ্চিন্তা করছেন, তাঁদের জন্য সুখবর শুনিয়েছে আবহাওয়া দফতর। রবিবার থেকেই কলকাতা এবং লাগোয়া এলাকায় আস্তে আস্তে কমতে পারে বৃষ্টির দাপট। দক্ষিণে আবহাওয়ার উন্নতির সম্ভাবনা দিনদুয়েক পরেই। কালো মেঘকে বিদায় জানিয়ে আকাশে ভেসে বেড়াতে পারে শরতের পেঁজা তুলোর মতো মেঘ। সকালের দিকে কমতে পারে তাপমাত্রা। তবে উত্তরে বৃষ্টির দাপট ঠিক কবে কমবে তা এখনই জোর দিয়ে বলা যাচ্ছে না।
আরও পড়ুন- মিনাখাঁ ও চুঁচুড়ায় টর্নেডোর তাণ্ডব