প্রতিবেদন : আবারও বিপদে পাহাড়বাসীর পাশে দাঁড়ালেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। দুর্যোগ মোকাবিলায় আপৎকালীন পরিস্থিতিতে ২৪ কোটি টাকা দিলেন। অথচ দুর্যোগে শুধু সিকিমের পাশেই দাঁড়াল কেন্দ্রীয় সরকার। পাহাড়ে রয়েছে বিজেপি সাংসদ। এই পাহাড়ের মানুষকেই গোর্খাল্যান্ড নামক ললিপপের লোভ দেখিয়ে পৃথক রাজ্য করতে চাইছিল বিজেপি। বাংলা থেকে পাহাড়কে ভাগ করতে চাইছে। আর এই দুর্যোগের সময় পাহাড়ের পাশে দাঁড়াল না কেন্দ্রীয় সরকার। মেঘ ভাঙা বৃষ্টির কারণে দুর্যোগময় পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে সিকিমে। কোটি কোটি টাকার যেমন সম্পত্তি নষ্ট হয়েছে তেমনই প্রাণও গিয়েছে প্রচুর মানুষের। এই কারণে কেন্দ্রীয় সরকার ৪৪.৮০ কোটি টাকা বরাদ্দ করেছে সিকিমের জন্য। অথচ দার্জিলিং ও কালিম্পং জেলার জন্য এক টাকাও বরাদ্দ করেনি কেন্দ্রীয় সরকার। যেখানে শিলিগুড়ি থেকে কালিম্পং ও সিকিমগামী ১০ নম্বর জাতীয় সড়ক ব্যাপক ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। পুরো রাস্তাটি চলে গিয়েছে নদীগর্ভে। শিলিগুড়ির সঙ্গে ১০ নম্বর জাতীয় সড়কের মাধ্যমে কালিম্পং ও সিকিমের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে রয়েছে। তারপরেও কেন্দ্রীয় সরকার উত্তরের পাহাড়ের জন্য কোনও অর্থ বরাদ্দ করেনি। গোর্খাল্যান্ড টেরিটোরিয়াল অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (জিটিএ) চিফ এক্সিকিউটিভ অফিসার অনীত থাপা যোগাযোগ করেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও মুখ্যসচিবের সঙ্গে। শুক্রবার নবান্নে মুখ্যসচিবের সঙ্গে বৈঠক করেন অনীত। এরপর মুখ্যমন্ত্রী ফোনে কথা বলেন জিটিএ প্রধানের সঙ্গে। এরপরই পাহাড়ের জন্য ২৪ কোটি টাকা বরাদ্দ করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। এই বিষয়ে অনীত থাপা বলেন, প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে সিকিম-সহ কালিম্পংয়ে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। এখনও পর্যন্ত কালিম্পংয়ের প্রায় ১১ জন নিখোঁজ, প্রচুর বাড়ি-গাড়ি, কৃষিজমি নষ্ট হয়েছে। কিন্তু দুঃখজনক ঘটনা কেন্দ্রীয় সরকার এই প্রাকৃতিক দুর্যোগ নিয়েও রাজনীতি করছে। কিন্তু সরকার সিকিমের এই দুর্যোগ মোকাবিলায় ৪৪.৮০ কোটি টাকা বরাদ্দ করেছে। কিন্তু তারা কালিম্পংকে বঞ্চিত করছে। আমাদের প্রশ্ন এটাই, তাঁরা কালিম্পংকে কেন বঞ্চিত করছেন? আমরা সিকিমের বিরুদ্ধে নই। সিকিম হাসলে কালিম্পং ও দার্জিলিং হাসবে। সিকিমের এই পরিস্থিতির জন্য আমরা সমব্যথী। তিনি জানান, শুধু কালিম্পং জেলাতেই এখনও পর্যন্ত নিখোঁজ হয়েছেন প্রায় ৯ জন। মৃত্যু হয়েছে একজনের। এছাড়াও শিলিগুড়ির প্রচুর মানুষ, যাঁরা কর্মসূত্রে সিকিমে থাকতেন, তাঁদের অনেকেই এখনও পর্যন্ত নিরুদ্দেশ। অন্যদিকে হিমালয়ান হসপিটালিটি এবং ট্যুরিজম ডেভেলপমেন্ট নেটওয়ার্ক-এর পক্ষ থেকে সম্রাট সান্যাল বলেন, প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে সিকিমে যেমন ক্ষতি হয়েছে পাশাপাশি কালিম্পং জেলাতেও প্রচুর ক্ষতি হয়েছে। এই বিপর্যয়ের কারণে পর্যটনে কতটা ক্ষতি হল তা এখনও পর্যন্ত বলা মুশকিল তবে কেন্দ্রীয় সরকার যে সিকিমকে আর্থিক সাহায্য করেছে তা খুব ভাল দিক। পাশাপাশি কালিম্পং জেলার যা ক্ষতি হয়েছে তাতে কালিম্পং জেলাকেও আর্থিক সাহায্য দেওয়া উচিত। আমরা কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে আবেদন করছি কালিম্পং জেলাকে আর্থিকভাবে সাহায্য করে বর্তমান পরিস্থিতি থেকে উদ্ধার করার জন্য। তবে রাজ্য সরকার বরাবরই পাহাড়ের পাশে রয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী নিজেই পাহাড় সফরে মাঝে মাঝে আসেন। তাই মুখ্যমন্ত্রীকেও ধন্যবাদ জানাই কালিম্পং জেলার জন্য আর্থিক সাহায্য দেওয়ার কারণে।